Menu

নারীর হাসি
লিসেল মুলার

নারীর হাসি আগুন ধরিয়ে দেয়
অন্যায় ও অবিচারালয়ে
এবং অসত্য প্রমাণাদি জ্বলেপুড়ে
হয়ে ওঠে এক অপূর্বশুভ্রজ্যোতিকা

নারীর হাসি কাঁপিয়ে দেয় সংসদের দেয়াল
উন্মুখ করে দেয় বাতায়নগুলো
যাতে ফালতু প্যাঁচাল উড়ে চলে যায় দূরে

পুরনোদের চশমায় লেগে থাকা কুহেলিকা
অপনয়ন করে দেয় নারীর হাসি;
তাদের খুশির জোয়ারে ভাসায়
উদ্ভাসিত করে তারুণ্যের দর্পণে

গহিন আঁধারে ডুবে থাকা পাতালবন্দিরা
যেন দিবালোকের রোশনাই দেখে—
যখন তারা স্মরণ করে নারীর হাসি

নারীর হাসিতে
দু-ভাগ হয়ে যাওয়া জলরাশি জোড়া লেগে যায়
দুই প্রতিকূল উপকূল যেন অনুকূল হয়ে ওঠে

নারীর হাসি! যেন একটি বিস্ময়কর ভাষা
ফুঁড়ে যায় পাতাল, ভেদ করে আকাশ।
ন্যায় ও শাস্ত্রগ্রন্থের অনেক আগেই
আমরা শুনেছি সেই হাসি,
আমরা বুঝেছি মুক্তি কাকে বলে।

ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ : রুভা দত্ত

[লিসেল মুলার একজন আমেরিকান কবি। তিনি ১৯২৪ সালে জার্মানির হামবুর্গে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। তাঁর কবিতার ভাষা সহজ, ভাবনায় জটিল এবং সেগুলোর মধ্যে বেশ রহস্যময় স্তর থাকে। তাঁর কবিতার উইট ও হিউমার থাকে, আর থাকে অন্তঃসলিলার মতো দুঃখগাথা।]

——————————————————

সাথি হব না
নাসরীন নঈম

আগুন যেমন ইচ্ছেমতো নিতে পারে
নিজের আকার
পানিও তাই।
হৃদয় কি সে রকম হতে পারে
যখন তখন অযথাই?

স্বেচ্ছায় বেজে ওঠে সরোদ সেতার
বেজে বেজে ফিরে আসে
হারমোনিয়াম
আপন নিয়মে ফুঁসে ওঠে মানুষ
সাপের মতো ক্রুদ্ধফণায়।

তোমাকে আঁকড়ে ধরা হাতটা ক্রমশ
শিথিল হয়ে যাচ্ছে?
আমাকে বৃষ্টির জল হতে হবে
পারব না আর।

চন্দনগাছ তুমি মুখ তুলে তাকাও
দেখ ওরা দিন দিন কেমন
নোংরা বিচ্ছিরি পথচারী হয়ে যাচ্ছে
আমি আর ওদের সাথি হব না।

——————————————————

প্রেম বিনে
আয়শা সাথী

সত্যি বলছি,
তোমার অসীম আত্মায়
যদি নিউক্লিয়াস পরিমাণ অনুভূতি জন্মায়
আমি তোমার রক্তে মিশে যেতাম।
তোমার চর্মাবৃত পাঁজরে এতটুকু ঠাঁই মিললে
জীবনানন্দের কলম হয়ে খসখস করে লিখে দিতাম
‘এইখানে অন্য কারো প্রবেশ নিষেধ’।

প্রতিমা হলে পূজারীর পূজার ফুল হতাম
‘সুখ’ শরণার্থী হলে
বিধ্বস্ত নগরীতে গড়তাম ‘শান্তিধাম’
বাবুইপাখির শিল্পিত নীড় বুনতাম
তোমার মন মহীরুহে একটু জায়গা পেলেই।

তুমি থাক আমার মাঝে
ফুল হয়ে, ভুল হয়ে—
আমার রোদ-ছায়া, আলো-অন্ধকার হয়ে—
আমার ওম হয়ে, ঘুম হয়ে—
হয় যন্ত্রণা, না হয় স্বস্তি হয়ে।
তুমি না হয় থাক—
আমার আজন্মকালের আফসোস হয়ে!

সুখ না হয়ে তুমি আমার অসুখ হও
সত্যি বলছি, ‘প্রেম’ বিনে
দ্বিতীয় কোনো প্রতিষেধক খুঁজব না আর।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১১ মার্চ ২০২৪ /এমএম