প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: জাতিসংঘ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটার বিষয়টি উল্লেখ করে নির্বাচন, পুলিশিং, দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার ইস্যুসহ সংস্কার কমিশনগুলোর গুরুত্ব দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার বিষয়গুলোর প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক (কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক) এবং ২০২৫ সালের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের মধ্যে অনুষ্ঠিত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির (জেএসসি) বৈঠকে এ আশ্বাস প্রদান করা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন এবং স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।বৃহত্তর উন্নয়ন এজেন্ডার প্রেক্ষাপটে এসডিজি অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসের সহ-সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ২৮টি মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থা, জেএসসি সদস্য এবং মুখ্য সমন্বয়কারী (এসডিজি বিষয়ক), পরিকল্পনা সচিব এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্যসহ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।সহযোগিতা কাঠামো (২০২২-২০২৬) পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অগ্রসর করতে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সহায়তার রূপরেখা তুলে ধরেছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুষম মানব উন্নয়ন ও কল্যাণ, টেকসই, স্বাস্থ্যকর ও সহিষ্ণু পরিবেশ, রূপান্তরমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা এবং নারী-পুরষের সমতা এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা দূর করা।জাতিসংঘ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরকে সমর্থন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সিএমএসএমই উন্নয়ন, এসডিজির জন্য অর্থায়ন সহজতর করা এবং পরিবেশগত টেকসই সক্ষমতা জোরদার করা।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও ব্যাপক বন্যা মোকাবেলায় জাতিসংঘ উল্লেখযোগ্য সাহায্য সংগ্রহ করেছে, বিশেষ করে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা স্থাপন করেছে যা লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করেছে।নারীর জন্য আইনি সুরক্ষা জোরদার করতে এবং লিঙ্গ সমতাকে উন্নীত করার জন্য সরকারের সমর্থনের সাথে মিল রেখে পুলিশিং, নির্বাচন এবং দুর্নীতি দমনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে সমালোচনামূলক সংস্কারে জাতীয় কমিশনগুলোর সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
জেএসসি ২০২৫ সালের প্রাক্কালে এসডিজি অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য মূলনীতি সহায়তা এবং সক্ষমতা গড়ার পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত করেছে, যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে, সমন্বিত নীতি, অর্থায়ন করার ওপর জোর দিয়েছে।বৈঠকে নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি মূল নীতি ও হস্তক্ষেপ চিহ্নিত করেছে।বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুউইন লুইস বলেন, “আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একটি টেকসই অর্থনৈতিক রূপান্তর, অন্তর্ভুক্তিমূলক মৌলিক পরিষেবা, জলবায়ু সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি, বর্ধিত শাসন কাঠামো এবং সকল খাতে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেবে।”
লুইস আরো বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কমিশনগুলোকে সমর্থন করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নের জন্য এই মুহূর্তটি কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবনী অর্থায়ন প্রক্রিয়ার সুবিধা নিতে এবং ডেটা সিস্টেমকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’ইআরডি সচিব বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণ লাভের পর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে’।জেএসসির পরবর্তী সভা ২০২৫ সালের মে মাসে অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ /এমএম