Menu

কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদলের সংবাদ সম্মেলন। উখিয়া, কক্সবাজার, ২৯ এপ্রিল। ছবি: এএফপি

কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদলের সংবাদ সম্মেলন। উখিয়া, কক্সবাজার, ২৯ এপ্রিল। ছবি: এএফপি

কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদলের সংবাদ সম্মেলন। উখিয়া, কক্সবাজার, ২৯ এপ্রিল। ছবি: এএফপিজাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি কারেন পিয়ার্স বলেছেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমারকেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ দিতে হবে।

আজ রোববার কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল। পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলটির কয়েক সদস্য। তখনই এ মন্তব্য করেন কারেন পিয়ার্স।

তিন দিনের সফরে গতকাল শনিবার ৪০ সদস্যের দলটি বাংলাদেশে আসে। আজ সফরের দ্বিতীয় দিনে সকালে প্রথমেই তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির কোনারপাড়ায় শূন্যরেখায় যায়। সেখানে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন দলটির সদস্যরা। পরে কুতুপালং শিবিরে এসে ঘুরে দেখেন। এ দলের সদস্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের চারটি দলের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে কথা বলেন। এরপর তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন।

সফরকারী এ দলের সদস্য এবং নিরাপত্তা পরিষদে পেরুর স্থায়ী প্রতিনিধি গুস্তাভ মেজা কোয়াদ্রা বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে কীভাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহযোগিতা করা যায়, সেটি বুঝতে এ সফরে এসেছি। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে আমরা সহযোগিতা করে যাব।’

কোয়াদ্রা বলেন, এখন যে পরিস্থিত রয়েছে, তা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে ফিরে যাওয়ার জন্য উপযোগী নয়।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যে সহযোগিতা করেছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন কুয়েতের স্থায়ী প্রতিনিধি মনুসর আল ওতাইবি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের যে সহযোগিতা করেছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

রোহিঙ্গাদের বিষয় নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র চীন ও রাশিয়ার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না—আজকের সংবাদ সম্মেলনে সেই প্রশ্ন ওঠে। জবাবে এ দলের সদস্য এবং নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার প্রতিনিধি বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বুঝতে এ সফর অত্যন্ত সহায়ক হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বাস্তবিক অবস্থা কেমন, সেটি জানতে সহকর্মীদের সঙ্গে আমি এ সফরে এসেছি।’ তিনি এটিও উল্লেখ করেন, নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখনো একটি বিতর্কিত বিষয়।

একই প্রশ্নের উত্তরে নিরাপত্তা পরিষদে চীনের প্রতিনিধি বলেন, ‘এ সমস্যা যে বাংলাদেশের জনগণকে কতটা প্রভাবিত করছে, তা আমরা বুঝতে পারছি। আমরা মনে করি, এ সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান দরকার দুই দেশের মধ্যেই। সমস্যার সমাধানে মানবিক দিকটি বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে শুরু থেকেই চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। তিনি এও উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গা সমস্যার কোনো সহজ সমাধান নেই।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ওঠে, নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের ওপর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে কি না? এর জবাবে পেরুর স্থায়ী প্রতিনিধি গুস্তাভ মেজা কোয়াদ্রা বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি বাস্তব পরিস্থিতি কী তা বুঝতে এবং জানতে। নিউইয়র্কে ফিরে আমরা আলোচনা করব। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’