ভাষার মাস, আত্নপ্রত্যয়ের মাস
ফেব্রুয়ারি শুধু ভাষার মাস নয়, আত্মপ্রত্যয়ে উজ্জীবিত হওয়ারও মাস। ১৯৫২ সালের এই মাসে বাঙালি জাতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। প্রাণের ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বন্দুকের নলকে অগ্রাহ্য করেছিল। বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। একই সঙ্গে বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামও বেগবান হয়েছিল। তারই সূত্র ধরে এসেছিল উনসত্তরের গণ-আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এলো স্বাধীন বাংলাদেশ। তাই ভাষার মাস ফেব্রæয়ারি নিয়ে আমাদের এত অহংকার, এত গর্ব। আজ সারা দেশে এই মাসের সূচনা হবে নানা আনুষ্ঠানিকতায়। ঢাকায় মাসের প্রথম দিন থেকেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হবে নানামুখী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। সারা মাসই চলবে এসব আয়োজন।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই পাকিস্তানি শাসকরা ঘোষণা করেছিল ‘উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। প্রতিবাদী তরুণরা সেদিন তাদের মুখের ওপর জানিয়ে দিয়েছিল, ‘না’। তার পরই শ্লোগান ওঠে, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। সেই আন্দোলন ছড়িয়ে যায় বাংলার আনাচকানাচে। আন্দোলন ক্রমেই বেগবান হতে থাকে। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা তুঙ্গে ওঠে। একুশে ফেব্রুয়ারি বন্দুকের নল অগ্রাহ্য করে মিছিল এগিয়ে যায়। পাকিস্তানি পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকে। কিন্তু শাসকের বুলেট আন্দোলন থামাতে পারেনি।
এই ইতিহাস আমরা তুলে ধরতে চাই আমাদেও নতুন প্রজন্মের কাছে। আর এর জন্যই আমাদের আজকের এই উদ্যোগ ক্যালগেরির জেনেসিস সেন্টারে। আসুন আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরি।
কাজী আহসান
প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশ কানাডা এসোসিয়েশন অব ক্যালগেরি