প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: জন্মের পর থেকেই শিশুর মনোজগৎ ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকে। শিশুর চারপাশের জগৎ বিস্তৃত হতে শুরু করে। শিশু তার আশপাশের শব্দ, বিভিন্ন বস্তু এবং মানুষ সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে ওঠে।এ সময়টায় শিশু মূলত খেলাধুলা করে। প্রথম ছয় বছর পর্যন্ত শিশুর শিক্ষা খেলাধুলার মাধ্যমেই হয়। আমরা অর্থাৎ অভিভাবকরা শিশুদের জন্য খেলার নানা উপকরণ কিনে আনি। এর পরও অভিভাবক হিসাবে সন্তানের জন্য জন্মদিনসহ বিভিন্ন উপলক্ষ্যে উপহার দেই। অথবা সন্তান অভিভাবকের সঙ্গে গিয়ে উপহার কিনে আনে।
শিশুর উপহার কেমন হওয়া উচিত? শিশুর উপহার তার খেলার অনুষঙ্গ। তাই তা এমন কিছু হওয়া উচিত যা তার মনোজগতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। বাজারজুড়ে শিশুদের যেসব খেলার উপকরণ দেখা যায়, তার মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা পিস্তল, বন্দুক বা এ ধরনের অস্ত্র। রয়েছে গাড়ি, ট্যাংক ইত্যাদি। শিশুরা আজকাল হিংস্র হয়ে উঠছে।
তারা মানবিক হওয়ার পরিবর্তে কিশোর অবস্থা থেকেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। নেশাগ্রস্ত হচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে? শিশু নতুন নতুন বিষয়ে জানার জন্য উদগ্রীব থাকে। প্রতিদিন সে নতুন কোনো শব্দ বলতে অথবা নতুন কোনো কাজ করতে শেখে, যা সে তার আশপাশের মানুষদের করতে দেখে। কঠোর আচরণকে শিশু স্বাভাবিকভাবেই ভয় পায়।
ছেলেবেলায় কঠোর আচরণ শিশুর নরম মনকে কঠোর করে তোলে। পরবর্তীকালে তার আচরণও সেভাবে গড়ে ওঠে। সে সেই মানুষগুলোকে অপছন্দ করতে শুরু করে, যাদের আচরণ তুলনামূলক কঠিন বা ভীতিকর বলে প্রতীয়মান হয়। শিশুর শিক্ষা লাভের জগৎ বিকশিত হওয়ার সময় আচরণ তাই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মূলত প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু হলেও শিক্ষা লাভের বিষয়টি অনেক আগে থেকেই আরম্ভ হয়।
প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ধারণাটি আমাদের দেশে খুব বেশি আগের নয়। তবে দেশের অনেক কিন্ডারগার্টেনে এ ধরনের শ্রেণি বহু আগে থেকেই প্রচলিত রয়েছে। শৈশব মানবজীবনের এমন একটা অংশ যে সময়টা মনে করে একটা সময়ে এসে মানুষ রোমাঞ্চিত হয়। মানুষের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ শৈশব। শৈশবে বিভিন্ন সময়ের গল্প মানুষ তার পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয়।
আজকের শিশুদের শৈশব অনেকটাই ভিন্ন। এ প্রজন্মের শিশুদের শৈশব একটু জটিল, যান্ত্রিকতায় ভরা। তারা মাঠে গিয়ে খেলার চেয়ে মোবাইল ফোনের গেম খেলতেই বেশি ভালোবাসে। এখন প্রায়ই কিশোর গ্যাংয়ের সংবাদ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কিশোর গ্যাং আজ আমাদের দুশ্চিন্তার বড় কারণ। এ ধরনের অপরাধ বেড়েই চলেছে।
শিশু-কিশোররা কেন অপরাধে জড়াচ্ছে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। আমরা খেলার উপকরণ হিসাবে যা শিশুর হাতে তুলে দিচ্ছি, তার ফল হিতে বিপরীত হচ্ছে না তো? যেমন, এখন একটি শিশু খুব সহজেই হাতে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইল গেমস তার মনোজগৎকে প্রভাবিত করছে। আমরা ভাবছি শিশু আনন্দ পাচ্ছে। কিন্তু তার ক্ষতির দিকটি বিবেচনা করছি না।যখন খেয়াল করছি তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। শিশুর সঙ্গে সম্পর্ক এবং উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৬ মার্চ ২০২১ /এমএম





