মোঃ মাহমুদ হাসান :: ১২ অক্টোবর ২০২০, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত পাপিয়া আর তার স্বামী সুমন চৌধুরী কে একটি মামলায় বিশ বছর আর একটি তে সাত বছর কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। আদালত, সরকার ও সংশ্লিষ্টরা রেকর্ডকৃত দ্রুততম সময়ে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যে দৃষ্টান্ত স্তাপন করেছেন, তা একদিকে জনমনে আস্তার সংকট নিরসনে যেমন সহায়ক হতে পারে, সেই সাথে প্রশাসন, বিচার ও মামলা সংশ্লিষ্ট সকলেই সাধুবাদ পাওয়ার অধিকার রাখেন যদিও বা চুড়ান্ত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন অর্থাৎ উচ্চ আদালতের রায় না আসা অবধি জনমনের উদ্বেগ-উৎকন্ঠা কিছুটা থেকেই যাবে।
নরসিংদীর যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়া ছদ্মবেশ ধারন করে মুজিব প্রেমী সেজে ছিলেন। অর্থ, বিত্ত, জৌলুস আর আদর্শের ছদ্মাবরনে শাসক ক্ষমতাবানদের সাথে সৈখ্যতা তাকে আইনের আওতায় আনতে কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি, এটি নিঃসন্দেহে জাতির জন্য একটি বড় প্রাপ্তি, এজন্য সামজিক উইপোকা দের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকারের ইস্পাত-দৃঢ় মনোভাবের প্রকাশ ছিলো বলেই ধারণা করি।
রাজধানীর বুকে পাঁচ তারকা হোটেলে জলসা সাজিয়ে অনাচারের মেলা বসিয়ে কোটি কোটি টাকার মধুকুঞ্জ বানাতে যারা সহযোগিতা করেছিল তাদেরকে ও আইনের আওতায় আনা জরুরী নয় কি? অপকর্মের সংগঠকের শাস্তি যেমন প্রাপ্য, তেমনি এমন পাপিষ্ঠ মধুকুঞ্জের পৃষ্ঠপোষক সহযোগীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা তো আরও বেশী জরুরী।
দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যে কোন অযাচিত হস্তক্ষেপ উপেক্ষা করে কাজ করার সুযোগ পেলে রহস্য উম্মোচনে দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিতে সক্ষম, নিকট অতীতের ক্যাসিনো কান্ড ই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য সুবিধাবাদী, অর্থলিপ্সু সংঘবদ্ধ অপশক্তি কে চিহ্নিত করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা আইনের শাসনের প্রতি জনগণের শ্রদ্ধাবোধ কে ই জাগ্রত করে।
পাঁচ তারকা হোটেলে পাপিয়ার হেরেমখানায় কাদের যাতায়াত ছিল, কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় মাসের পর মাস এমন অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতে সক্ষম হয়েছিল, সমাজে আইনের শাসনকে উৎসাহিত করতে এমন প্রশ্নের উত্তর জানা অত্যাবশ্যক নয় কি? পাপিয়া আর তার স্বামী সুমন চৌধুরীর শাস্তি সমাজ কে নিঃসন্দেহে সাময়িক স্বস্তির বার্তা দিয়েছে কিন্তু এমন সংঘবদ্ধ পাপিষ্ঠ চক্রের পুনরুত্থান রোধে হেরেমখানার হেফাজতকারীদের খুঁজে বের করা ও সময়ের ই দাবী।
লেখকঃ উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক
ক্যালগেরি, কানাডা।
প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ২১ অক্টোবর ২০২০/এমএম





