প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: করোনার পরিসংখ্যান নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে প্রচুর বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। প্রথমদিকে এ রোগের সংক্রমণ, রোগজনিত কারণে মৃত্যু সম্পর্কে সরকারিভাবে প্রেস কনফারেন্স করে তথ্য পরিবেশন করা হতো। এ তথ্যে থাকত কতজন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন, কতজনের মৃত্যু ঘটেছে এবং কতজন সুস্থ হয়েছেন।
এসব তথ্যের ভিত্তি ছিল করোনার সংক্রমণ সংক্রান্ত টেস্ট। কারও শরীরে যদি করোনাভাইরাস বাসা বাঁধে, তাহলে টেস্টের ফলাফলে লেখা হয় ‘করোনা পজিটিভ’। যদি ব্যক্তিবিশেষে টেস্ট করার পর ফলাফল আসে ‘করোনা নেগেটিভ’, তাহলে এই প্রাসঙ্গিক ব্যক্তি করোনা রোগে সংক্রমিত হননি।
এসব তথ্য পরিবেশনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি রোগতত্ত্ব নিয়ে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন আইইডিসিআরের একজন অধ্যাপক এবং ডিরেক্টর। প্রতিদিন বিকালে তথ্য পরিবেশন করতে এসে চমৎকার রুচির একটি শাড়ি পরিধান করতেন।
কিছুদিন যেতেই দেখা গেল সোশ্যাল মিডিয়ায় তার শাড়ি নিয়ে মুখরোচক আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। তিনি যেসব শাড়ি পরিধান করতেন সেগুলো যে খুব দামি শাড়ি ছিল, তা নয়। এগুলো ছিল নান্দনিকভাবে সুন্দর ডিজাইনের শাড়ি। এর মধ্যে কোনোরকম দোষণীয় কিছু ছিল বলে আমি মনে করি না।
অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন তারা করোনার মতো একটি ঘাতক ব্যাধির ওপর তাদের চিন্তাভাবনার আলোক নিক্ষেপ করার পরিবর্তে স্থূল আলোচনায় জড়িয়ে পড়েছেন। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যে বিষয়ের ওপর গভীর মনোযোগী ও চিন্তাশীল হওয়া প্রয়োজন, সেগুলোর জন্য আমরা আমাদের মস্তিষ্ক ব্যবহার করতে উৎসাহবোধ করি না।
যতই দিন যাচ্ছে আমাদের উৎসাহ মামুলি বিষয়ের জন্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এককথায় বলা যায়, আমাদের মতো একটি বুদ্ধিমান জাতি ক্রমান্বয়ে মামুলিপনার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এটা জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়।
এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের রাজনীতিকরা জনগণকে যে কোনো জাতীয় সমস্যা নিয়ে গভীরভাবে মাথা খাটাতে উৎসাহিত না করে স্থূল বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে প্রণোদিত করেন। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের রাজনৈতিক দলিল-দস্তাবেজ বিশাল আকারে মুদ্রিত হয়ে গবেষক এবং সাধারণ নাগরিকদের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে মুসলিম লীগ এবং কংগ্রেস, উভয় দলই ইতিহাসের জন্য মূল্যবান সম্ভার রেখে গেছে। পাকিস্তান থেকে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর রাজনৈতিক প্রস্তাব, ভাষণ এবং চিঠিপত্রের একটি সংকলন ১৮ খণ্ডে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী এবং সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও জেনারেলরাও বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন।
এসব গ্রন্থ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশ করেছে। পাকিস্তানে বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গের গ্রন্থ রচনার উৎসাহ ১৯৭১-পরবর্তী সময়ে বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী এবং পরিশীলিত রাজনীতিক এসব বই পড়েছেন।
ভারতে বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানের তুলনায় বহুগুণ বেশি। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহর লাল নেহেরু অনেকগুলো বিশাল গ্রন্থের রচয়িতা। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- Discovery of India, Glimpses of the World History, Letters to Daughter Indira ইত্যাদি। মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধীও বেশ কটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
এগুলোর মধ্যে তার আত্মজীবনী, অহিমস্বরাজ গ্রন্থ দুটি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া কংগ্রেস দলের বিভিন্ন সম্মেলনের দলিল-দস্তাবেজও প্রকাশ করা হয়েছে। ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ একসময় ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। রাজেন্দ্র প্রসাদ পেপারস নামে একটি গ্রন্থ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশ করেছে। আধুনিক ভারতের ওপর অন্যতম বিশেষজ্ঞ এবং জওহর লাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক বিপান চন্দ্র ২৪ খণ্ডে ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস রচনা করেছেন।
অধ্যাপক বিপান চন্দ্র ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে আরও অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। ভারতে গ্রন্থ প্রকাশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে একটি সংস্থা রয়েছে। এ সংস্থার কাজ হল ভারতের জাতীয় আদর্শ, ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং ভারতে জাতিগঠন সংক্রান্ত গ্রন্থ প্রকাশ করা।
এ সংস্থাটির নাম হল ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া। সংস্থাটি ভর্তুকি মূল্যে আলোচ্য গ্রন্থগুলো প্রকাশ করেছে। সুলভমূল্যে এসব বই পাওয়া যায় বলে শতসহস্র পাঠক নিজেদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে এসব গ্রন্থ ক্রয় করে। জ্ঞানচর্চা, গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশনা সম্পর্কে উপমহাদেশের ৩টি রাষ্ট্র যথাক্রমে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনায় নিঃসন্দেহে ভারতের অবস্থান সবার উপরে। আজকের এ লেখায় উপমহাদেশে জ্ঞানচর্চার তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে আমি বোঝাতে চেয়েছি রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব কোন দেশে কতটুকু আগ্রহী।
জ্ঞানচর্চার আগ্রহ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ভারতের একসময়কার রাষ্ট্রপতি ড. রাধাকৃষ্ণানের একটি গল্প মনে পড়ে গেল। নেহেরু ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে প্রথমবার যাকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পাঠিয়ে ছিলেন তিনি শত চেষ্টা করেও সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্ট্যালিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি।
এরপর নেহেরু দার্শনিক ড. রাধাকৃষ্ণানকে সোভিয়েত ইউনিয়নে রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠান। তিনি স্ট্যালিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভের কোনো চেষ্টাই করেননি। গোয়েন্দা সূত্রে স্ট্যালিন খবর পেলেন ভারত থেকে আসা রাষ্ট্রদূত ড. রাধাকৃষ্ণান দিনরাত বইপড়া নিয়ে মশগুল থাকেন। স্ট্যালিন তার সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। কারণ এ জ্ঞানী লোকটির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ আছে।
স্ট্যালিন ড. রাধাকৃষ্ণানকে ১৫ মিনিট কথা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। পার্থক্যটা হল ভূতপূর্ব রাষ্ট্রদূত আকাশ ও ভুবন মথিত করেও স্ট্যালিনের সাক্ষাৎ পাননি, আর ড. রাধাকৃষ্ণান সাক্ষাতের ব্যাপারে নির্লিপ্ততা দেখিয়ে স্ট্যালিনের কাছ থেকে সাক্ষাৎ লাভের আমন্ত্রণ পান।
নিঃসন্দেহে ব্যাপারটি ছিল খুবই গৌরবের। স্ট্যালিনের পক্ষ থেকে এ সাক্ষাতের সময়সীমা ছিল মাত্র ১৫ মিনিট। বাস্তবে দেখা গেল, এ সময়সীমা ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিজমের পতনের পর রুশ-ভারত সম্পর্ক কমিউনিস্ট আমলের মতো আর নেই। আমাদের মূল আলোচনাটি ছিল করোনা মহামারী সম্পর্কে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল জাতি হিসেবে আমরা কতটা তৎপর। জ্ঞান গবেষণা এবং জ্ঞান অর্জনের আকাক্সক্ষা একটি জাতিকে খুব দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে যায় এবং এ ব্যাপারে ঘাটতি থাকলে জাতিগুলো দুর্যোগের মধ্যে পড়ে।
মঙ্গলবারের সংবাদপত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবরটি ছিল, ঢাকার প্রায় অর্ধেক মানুষের করোনা হয়ে গেছে। অথচ এতদিন আমাদের ধারণা ছিল সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা শতকরা ২০ ভাগের বেশি নয়। গত সোমবার আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর,বি’র যৌথ গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
গবেষণাকাল মধ্য এপ্রিল থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ৩ হাজার ২২৭টি খানার সদস্যদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গবেষণায় বস্তিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত ৮২ শতাংশের কোনো উপসর্গ নেই। করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাব শুরু হলে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যার পরিসংখ্যান দেয়া হতো।
এর পাশাপাশি সংবাদপত্রগুলোয় পরিবেশিত খবর থেকে জানা যেত দেশের কোথায় কোথায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু তারা করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না, সে ব্যাপারে কিছুই জানা যায়নি। কারণ তাদের করোনা পরীক্ষা করা হয়নি। আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর,বি’র গবেষণার জন্য মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এইড সহায়তা প্রদান করেছে।
গবেষণার জন্য প্রয়োজন লাগসই গবেষণা পদ্ধতি। গবেষণার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেয়া হয়। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতিটি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এছাড়া ৮টি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়। মোট ৩ হাজার ২২৭টি খানার সদস্যদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। খানাগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। জরিপের দিন বা এর ৭ দিনের মধ্যে খানার কমপক্ষে একজন সদস্যের জ্বর, কাশি, গলায় ব্যথা, শ্বাসকষ্ট- করোনা সংক্রমণের এ ৪টির একটি লক্ষণ থাকলে তাকে উপসর্গযুক্ত খানার শ্রেণিতে ফেলা হয়।
অন্যদিকে কোনো সদস্যের একটি লক্ষণও না থাকলে সেই খানাকে উপসর্গহীন শ্রেণিভুক্ত করা হয়। উল্লেখ্য, কেবল ইউএস এইড-ই নয়, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। গবেষকরা জরিপে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখেন।
এতে দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৪৫ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বস্তির মানুষের মধ্যে এ হার ছিল ৭৪ শতাংশ। ঢাকা শহরের সংক্রমণের এ তথ্য জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ের। বিশেষজ্ঞদের মতানুযায়ী সংক্রমণের ধারা অনুসরণ করলে অনুমান করা যায় গত ৩ মাসে আক্রান্তের হার ৬০-৬৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ঢাকার জনসংখ্যা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। ঢাকার রাজপথে যেসব মানুষ চলাফেরা করে তাদের অনেকেই ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা নয়।
এরা নিজ গ্রাম ও ঢাকার মধ্যে আসা-যাওয়া করে। তাই ঢাকার কত শতাংশ লোক সংক্রমিত হয়েছে, সেটা হলফ করে বলা যায় না। গবেষকরা উপসর্গযুক্ত ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় একশ শতাংশে অ্যান্টিবডি পেয়েছেন। অন্যদিকে উপসর্গহীন ৪৫ শতাংশের রক্তে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এতে বোঝা যায়, ঢাকা শহরের বিশাল সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের কোনো উপসর্গ নেই তারা দৈনন্দিন কাজকর্ম করছেন, অফিস করছেন এবং ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
রক্তে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে বুঝতে হবে করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়ায় এ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। মানুষের শরীরে এ অ্যান্টিবডি কতদিন থাকবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে রোগতত্ত্ব অনুযায়ী, অ্যান্টিবডি সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ষাট বা ষাটোর্ধ্ব বয়সী মানুষের মধ্যে।
যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ২৪ শতাংশ এ বয়সী। এরপর বেশি আক্রান্ত ১৫-১৯ বছর বয়সীরা। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৮২ শতাংশেরই কোনো লক্ষণ দেখা দেয়নি।
বিপুলসংখ্যক লোক এ রোগে আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কম আমাদের বাংলাদেশে। তাই বলে এ রোগের ব্যাপারে হেলাফেলা কাম্য নয়। যারা একবার সংক্রমিত হয়েছেন, তারা যে পুনর্বার সংক্রমিত হবেন না-এমন কোনো নিশ্চয়তা দেয়া যায় না।
ইতোমধ্যেই কথা উঠেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে। তাই সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই। কোনো লক্ষণ পরিস্ফুট না হলেও কাউকে নিশ্চিত করে রোগমুক্ত বলা যায় না। এ রকম একটি বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা পদ্ধতি প্রয়োগ করে ঢাকায় একটি গবেষণার প্রয়োজন অনেকদিন থেকেই অনুভব করছিলাম।
বন্ধুবান্ধবদের বলছিলাম, খানার আয়-ব্যয় গবেষণার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যে রকম জরিপ করা হয়, সেরকম একটি জরিপ করোনার ওপরও করা প্রয়োজন। যাই হোক, বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করে করোনার ওপর ঢাকায় একটি জরিপ সম্পন্ন হল। এরকম জরিপ অন্য বড় শহরগুলোয়ও হওয়া উচিত।
এ জরিপের তথ্য ব্যবহার করে করোনা প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যবিধি সংশোধনের জন্য সরকারকে এখনই প্রয়োজনীয় স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করতে হবে। যেসব সংস্থা ও গবেষক এ গবেষণাটি করেছেন, তাদের প্রতি অভিনন্দন। মাঠকর্মীরাও অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। তারা মূল্যবান শ্রম দিয়েছেন। অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে আমি বলতে পারি, অনুসৃত গবেষণা পদ্ধতি সঠিকভাবেই গ্রহণ করা হয়েছে।
ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ
প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৫ অক্টোবর ২০২০/এমএম





