Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: যে খাদ্য দেহের বৃদ্ধি ঘটায়, ক্ষয়পূরণ ও রোগ প্রতিরোধ করে এবং স্বাস্থ্যসম্মত, তাকে নিরাপদ খাদ্য বলে।শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ খাদ্য একটি দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার।

কিন্তু আমাদের দেশে নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা নিয়ে অনেকটা সন্দেহ থেকেই যায়। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বলতে যা বোঝায়, তা আমরা এখন আর পাই না। অনিরাপদ খাদ্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ানো ছাড়াও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার অন্যতম কারণ।

বর্তমানে অনিরাপদ ও ভেজালযুক্ত খাদ্য জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেজাল খাবার তৈরির পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের লোভ, অবিবেচক কর্মকাণ্ড এবং নীতিহীনতা জড়িত। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন, খাদ্য গ্রহণ প্রক্রিয়ার যে কোনো পর্যায়ে খাদ্য খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে। কাজেই খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছতে খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমাদের দেশে বিভিন্নভাবে খাদ্যে ভেজাল, রাসায়নিক দ্রব্য ও কীটনাশক ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমরা এ খাবার গ্রহণ করে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছি। মানুষের সুস্থ জীবনের জন্য নিরাপদ খাদ্যের কোনো বিকল্প নেই। সামান্য ফুড পয়জনিং থেকে শুরু করে ক্যানসারের মতো দুই শতাধিক রোগের জন্য দায়ী অনিরাপদ খাদ্য।

বিভিন্ন সময়ে খাদ্যে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জনসাধারণের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কে সচেতনতা দেখা যায়নি।

দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে সুষম খাবার পরিমিত না খাওয়ার জন্য। আর যদি খাদ্যে ক্ষতিকর উপাদান মিশ্রিত থাকে, সেই সব খাদ্য গ্রহণ করার কারণে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য রক্ষার অন্যতম শর্ত হল নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ।

এক গবেষণা সূত্রে জানা যায়, আমাদের শরীরে ৩৩ ভাগ রোগ ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে হয়। পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের শতকরা প্রায় অর্ধেক রকমের রোগ হয় দূষিত খাদ্য থেকে। বাজারের তাজা মাছের গুণগত মান নির্ভর করে মাছকে যে খাবার দেয়া হয়, তার ওপর। নোংরা বা জীবাণুযুক্ত পানিতে বেড়ে ওঠা মাছ থেকেও মানুষের শরীরে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। মাংস উৎপাদনের ক্ষেত্রেও আমরা একই কথা বলতে পারি।

কাজেই খাদ্য উৎপাদনের পরিবেশও স্বাস্থ্যকর হওয়া জরুরি। আমাদের সামান্য সচেতনতা থেকে পেতে পারি নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা। প্রতিকূলতার বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য অনেক বড় ভূমিকা রাখবে।

কারণ, নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমেই আমরা পাব মেধাবী, সুস্থ, সবল, কর্মঠ ও দক্ষ মানবসম্পদ। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য জরুরি; কিন্তু তার চেয়ে বেশি জরুরি নিরাপদ খাদ্য।

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার প্রশ্নে শুধু সরকারের দায়িত্ব বলে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিরাপদ খাদ্য যেমন সবার জন্য প্রয়োজন, তেমনি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সবাইকে সচেতন হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উৎপাদন, সংরক্ষণ, সরবরাহ ও বিপণনসহ প্রতিটি পর্যায়ে সচেতনতার মাধমে খাদ্য নিরাপদ হয়ে উঠবে-এটাই কাম্য।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৩ জুলাই ২০২০/এমএম


Array