বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘হে আমার বিশ্বাসী বান্দারা! তোমরা আমার ইবাদত কর এবং হালাল রিজিকের সন্ধানে জমিনে ছড়িয়ে পড়। আমার অনুগ্রহ খোঁজ।বেশি বেশি আমাকে স্মরণ কর। তাহলে তোমরা সফল হবে’ (সূরা জুমা)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হালাল উপার্জ কর। বৈধ খাবার খাও’ (সূরা বাকারাহ)।কিন্তু বিশ্বব্যাপী আমরা একি দেখছি! জেনে না জেনে অহরহ হারাম খাচ্ছি। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও হালাল খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
খামারের মাধ্যমে গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি পালন করছে। সেখানে দুধ ও মাংস বৃদ্ধির জন্য পশুকে যে খাবার খাওয়ানো হয় তা নানা রকম কেমিক্যালে ভরপুর।ফলে যে দুধ বা মাংস পাওয়া যাচ্ছে তা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। আবার যেসব মাছ চাষ করা হয় তাতেও ভেজাল মেশানো হচ্ছে। ফার্মের মুরগি, ডিম, মাংস কোনো কিছুই মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়।জুস ও অন্যান্য খাদ্য প্রিজার্ভ করার জন্য যেসব মেডিসিন দেয়া হয় তাও স্বাস্থ্যকর নয়। তা ছাড়া আধুনিক যেসব পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় তাতে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যা আগেরকার হেকিমি, কবিরাজি, বায়োকেমিক বা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ছিল না।
তবুও মানুষ স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতির জিনিসগুলোই হরদম গ্রহণ করছে। এভাবে মানুষ হারাম-হালালের পার্থক্য ভুলে নিজেই নিজের ক্ষতি করছে।তারা হারাম-অস্বাস্থ্যকর বিষয়ে বিভোর হয়ে আছে। পাশাপাশি মানুষের এখন আর এতটুকু ফুরসত নেই আল্লাহকে স্মরণ করার। ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ হিসেবে আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় হাবিবকে মনোনীত করেছেন। অথচ নবীর আদর্শও আজ বিশ্ব মুসলিম ভুলে গেছে।যখন কোনো এলাকার মানুষ নাফরমান হয়ে যায়, আল্লাহ পাকের ইবাদত-বন্দেগি ভুলে শয়তানি জিন্দেগি যাপন করে, তখনই আল্লাহপাক সে এলাকায় হেদায়েতের উদ্দেশ্যে রোগ-শোক-মহামারী দেন।
এমন পরিস্থিতিতে বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়তে হয়। ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে হয়। জীবনাচারে সংযত হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হয়। প্রবৃত্তি সংযত করতে হয়, হালাল খেতে হয়, জুলুম বন্ধ করে মনে ভালোবাসার প্রদীপ জ্বালাতে হয়।করোনাভাইরাসের আঘাতে বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। বিগত একশ বছরে এমন মহামারী দেখা যায়নি। এ অবস্থায় ধর্মের কাছে, প্রভুর কোলে ফিরে আসা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। প্রত্যেক ধর্মেরই আছে ধর্মগ্রন্থ।প্রত্যেক ধর্মাবতার মানুষকে ভালো বার্তা দিয়ে গেছেন। সব ধর্মের মানুষকেই আজ সংযত হতে হবে। ধর্মের আলোকে জীবনযাপন করতে হবে। হালাল এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
যে ধর্মের, যে দেশের, যে বর্ণের মানুষই হোক না কেন আমরা সবাই সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে এসেছি আবার সৃষ্টিকর্তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। তাই প্রতিটি মানুষের জীবন একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকা উচিত।মানুষ হয়তো না জেনেই অনেক অপরাধ করে ফেলে। আল্লাহর দরবারে তওবা করলে আল্লাহ তা মাফ করে দেন। কিন্তু আবার যেন এমন অপরাধ না করা হয় এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।এখনও সময় আছে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়ার। যুগে যুগে যখন এমন বিপদ এসেছে, তখন যুগের নবী-রাসূল, পীর-মাশায়েখ, অলি-আউলিয়ারা দোয়া করেছেন, তখন বিপদ দূর হয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে নিয়ে ইস্তেগফার পড়া, দরুদ পড়া ও রহমতের জন্য দোয়া প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়। হে আল্লাহ! তুমি সবাইকে মাফ করে দাও।
লেখক : প্রধান গদিনশীন পীর, দরবারে আউলিয়া সুরেশ্বর দ্বায়রা শরিফ
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৫ এপ্রিল ২০২০/এমএম





