বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: নিকটবর্তী হওয়ার প্রয়াস চালাতেই হাতের ইশারায় গোলগুটি বেগমকে থামার নির্দেশ দিলাম। বললাম-
: রোক যাও; বোগলে আইসো না।
গোলগুটি বেগম বিস্মিত হল। ঢোক গিলে বলল-
: কেরে আইতাম না! সমস্যা কী!
সমস্যা একটাই; বিশ্ব তোলপাড় করা করোনাভাইরাস। মুখমণ্ডলের ত্রি-সীমানায় নিজের হাত, হাতের আঙুলেরই যেখানে প্রবেশাধিকার নেই; সেখানে অন্যের হাত-মুখ-গাল? তওবা, তওবা; আস্তাগফেরুল্লা! হোক না সে নিজের স্ত্রী, আত্মার আত্মা; অতি ঘনিষ্ঠজন। রোগব্যাধি কি জামাই-বউ চিনে? চিনে না বলেই বিশ্বময় সতর্কবার্তা উচ্চারিত হচ্ছে- কেবা বধূ, কেবা বর; নিদানকালে সবাই পর। অতএব, আপাতত আলাদা হয়ে যাও। দুইজন দুই ঘরে গিয়া বিছানা পাতো। প্র্যাকটিকেল প্রেম-মোহাব্বত ছিঁকায় তুলে থিওরিটিকেল প্রেমে মগ্ন হও। ডিজিটাল লাইনে যতক্ষণ খুশি গাড়ি চালাও। ভিডিও কল করে যত ইচ্ছা ভার্চুয়াল চুম্বা খাও। মাগার…
এ বক্তব্য গোলগুটি বেগমের সামনে উপস্থাপন করে বললাম-
: এইজন্যই অনেক ভাবনা-চিন্তা কইরা আমি চক্ষুলিপি উদ্ভাবন করছি।
চক্ষুলিপি শব্দটা শুনে গোলগুটি বেগম তেরছা চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। তারপর বলল-
: এইটা আবার কী জিনিস?
: চক্ষুলিপি হইল চোখে চোখে কথা ও ভাব বিনিময়ের মাধ্যম। যতদিন বিপদ না কাটে; ততদিন আমরা বোগলে আসব না, পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে চোখের ভাষায় মনের ভাব আদান-প্রদান করব; কথা চালাচালি করব। যেমন ধর, তোমারে আপৎকালীন স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানতে দেখলাম না। তখন আমি চক্ষু দুইটারে গরুর চোখের মতন বড় কইরা ফেলব। এর মানে হইল- আমি খুবই আশ্চর্য হইছি। এরপর তিনবার চক্ষু পিটপিট করব; অর্থাৎ তুমি বিলম্ব না কইরা তাড়াতাড়ি হাত ধোও। এরপর মনে কর, আমার খুব ক্ষিদা লাগছে। কও তো, এই বিষয়টা তোমারে আমি কেমনে বোঝামু?
গোলগুটি বেগমের কণ্ঠে ভর্ৎসনার সুর বেজে উঠল। চিবিয়ে চিবিয়ে সে বলল-
: আপনে হইলেন চক্ষুলিপির জনক। আপনেই কওহাইন, ক্ষিদার কথা জানান দিতে চক্ষু দিয়া পানি বাইর করবাইন; নাকি আগুন বাইর করবাইন!
এটা যে মশকরা করা হল, তা কানার ভাই অন্ধও বুঝবে। বললাম-
: মশকরা করা ঠিক না; বাস্তবিকই কঠিন সময়ের মুখোমুখি হইছি আমরা।
গোলগুটি বেগম সখেদে বলল-
: মশকরা আমি করতেছি; নাকি আপনে করতাছুইন? চক্ষুলিপি-ভুরুলিপি- এইতা লইয়া ভুংভাং না কইরা মুখ দিয়া কথা বাইর করলে অসুবিধা কী?
: কথা বলার সময় মানুষের হাত তার মনের অজান্তে মুখে-কপালে চইলা যায়। এইটাই বিপজ্জনক।
: আপনে কথা কওয়ার আগে হাত দুইখান শক্ত কইরা বাইন্ধা লইবাইন, যাতে আপডাউন করবার না পারে।
বান্ধাবান্ধি-ধরাধরির কূটতর্কে লিপ্ত হলে রাত্রি কাবার হয়ে যাবে। রণে ভঙ্গ দিলাম। বিছানা ছেড়ে মেঝেতে পা রাখতেই গোলগুটি বেগম বলল-
: দাদু! আপনে কোথায় যাইতাছুইন?
: সেলফ কোয়ারেন্টিনে।
: কইতরের মতন জোড়া বাইন্ধা কোয়ারেন্টিন করলে কী দোষ?
: একটু আগে তোমারে কী কইলাম! জানে বাঁইচা থাকলে রোমান্সের সবুজ বাতি জ্বালানোর সুযোগ অনেক পাইবা। বর্তমানে লালবাতির সুইচে টিপ দিয়া মটকা মাইরা পইড়া থাক।
গোলগুটি বেগম পথরোধ করে আমার সামনে দাঁড়াল। বলল-
: আজুল-ফাজুল এইতা আপনের মাথায় কে ঢুকাইছে, কওহাইনছে!
মুচকি হেসে মাথা দোলাতে দোলাতে বললাম-
: তুমি তো খবরের কাগজের দিকে ফিইরা তাকাও না; টেলিভিশনে সংবাদও দেখ না- দিনরাইত স্টার জলসা আর জি বাংলা লইয়া পইড়া থাক, তাই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পারতেছ না!
: পরিস্থিতি যতই ভয়ানক হোক; তাই বইলা স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকন লাগবে?
: পাগলে কয় কী! আরে! বউ থাকলে তো একলগে থাকার প্রশ্ন আসবে। বউই তো থাকতেছে না। সত্য-মিথ্যা জানি না, তোমারে দুইটা ঘটনার কথা বলতেছি; তাইলেই বুঝতে পারবা- বাস্তব অবস্থার কন্ডিশন কী। চীন মুল্লুকে প্রথম এই ভাইরাস বিস্তারলাভকালে এক চৈনিক অফিস থেইকা ফোনে স্ত্রীকে বলল, বউ রে; শইলডার মধ্যে জুত পাইতেছি না। কেমুন জানি জ্বর জ্বর লাগতেছে। ডাকতরের কাছে যামু? জামাইয়ের কথা শুইন্যা বউ বলল, যাবা না মানে! অবশ্যই যাবা। তাড়াতাড়ি যাও সোনা; দেরি কইরো না। জামাই বাবাজি অফিস থেইকা বাইর হইয়া ডাকতর-ডুকতর দেখাইয়া ফুরফুরা মন লইয়া বাসায় ফিইরা দেখে ঘরের দরজা আলগা; ভিতরে কেউ নাই।
গোলগুটি বেগম জানতে চাইল-
: নাই কেন! কই গেছে?
: আবার জিগায়, কই গেছে! পলানটি দিছে; ভাগলপুর হইছে। জামাইয়ের জ্বর-জ্বর ভাব শুইন্যাই বউ গেছে তো গেছে- ফরএভার গেছে। যাওয়ার আগে একটা কাগজে স্বামীর জন্য ‘আলবিদা নোট’ লেইখা গেছে- তোমারে বাইনতালাক দিলাম। আমার তালাশে মিছামিছি সময় নষ্ট কইরো না; লাভ হবে না। এইবার আমেরিকা মুল্লুকের ঘটনা শোন। রাইতের বেলা জামাই-বউ দুইজন দুইজনরে ‘হানি-মানি’ ডাইকা; ‘চকাস-চকাস’ শব্দে শুভেচ্ছা বিনিময় কইরা ঘুম দিছে। জামাই বেচারার দোষ- সে ঘুমের মধ্যে খুলুড়-খুলুড় কইরা বারকয়েক কাশি দিছিল। এই কাশিই তার কাল হইল। সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গার পরে সে দেখে, বিছানায় বউ নাই। বউরে পাশে না পাইয়া জামাই ভাবল, বউ বোধহয় পাইন্যা-ডেলিভারিতে ছোট্টঘরে ঢুকছে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অধৈর্য হইয়া জামাই টয়লেটের দরজায় ঢুসা মাইরা দেখে, বউ নাই। এরপর সে ভাবল, তার বউ নিশ্চয়ই পাকঘরে ঢুকছে; দুইজনের লাইগা কফি বানাইতেছে। বউয়ের উদ্দেশে ‘হায় ডালিম, হায় আনারস’ বলতে বলতে রান্নাঘরে যাইয়া সে দেখে- সব ফক্কা। ফাঁকা রান্নাঘরে দাঁড়াইয়া তার মনে উঁকি দিল এই ভাবনা- বউ অবশ্যই বাড়ির সামনের লনে আছে; সকালবেলার নিষ্পাপ শিশির ও বাতাস লাগাইয়া গাল-মুখ তুলতুলা করার মানসে খালিপায়ে লনে হাঁটাহাঁটি করতেছে। সে ছুইটা ঘরের বাইরে গেল। দেখল, সেখানে কোনো মানুষ নাই; শুধু তাদের পোষা কুত্তাটা একটা প্রজাপতিরে ধরবার লাইগা তার পেছনে ছোটাছুটি করতেছে। বেদিশা জামাই তখন বউয়ের নম্বরে ফোন দিল। জানতে চাইল- ওগো আমার মধুমালতি; তুমি কই! বউ বলল- আমি নাই গো; আমি তোমারে ত্যাগ করছি। এরপর সে আমেরিকার একটা ‘নিরাপদ’ রাজ্যের নাম উল্লেখ কইরা বলল- আমি এই রাইজ্য ছাইড়া অমুক রাইজ্যে যাইতেছি। তুমি টেনশন কইরো না; ওইখানে যাইয়াই ডিভোর্স লেটার পাঠাইয়া দিমু।
কথা শেষ হতেই গোলগুটি বেগম আমার দু’হাত শক্ত করে আঁকড়ে ধরল। বলল-
: এইটা চীন মুল্লুক না; আমেরিকা মুল্লুকও না। এইটা বাংলা মুল্লুক। এই দেশের নারীদের হাজার বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবাইন- তারা মরা স্বামীর সহগামী হইয়া চিতার আগুনে আত্মাহুতি দিতে গেছে। অসময়ে বিধবা হইয়াও দ্বিতীয়জনের কথা ভাবে নাই; স্বামীর পবিত্র স্মৃতি বুকে লালন কইরা জিন্দেগি পার কইরা দিছে। কাজেই এইতা কিচ্ছা-কাহিনী আমারে শোনাইয়া লাভ নাই। করোনা আসুক, সুনামি আসুক; ডেঙ্গু আসুক- বাঁচলে দুইজন একলগে বাঁচবাম; মরলে একলগে মরবাম।
মরণ যেখানে বাসা বেঁধেছে, তার নাম করোনাভাইরাস নয়- বিশ্বাসীরা একবাক্যে এ কথা মেনে নেবে। সকালবেলা কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে আমি যখন যানবাহনে উঠছি; অথবা কাজশেষে পরিবার-পরিজনদের সান্নিধ্যে যাওয়ার জন্য আমি যখন পথে নেমেছি- তখন আমাকে এ নিশ্চয়তা কে দিতে পারবে, আমার আজকের এ ‘সফর’ আমি সম্পন্ন করতে পারব? একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন এ গূঢ়তত্ত্ব। কিন্তু তাই বলে কি অসচেতন হওয়া চলবে? অবশ্যই না। আমাদের অসচেতনতায় বা ভুলে আমরা যদি নিজের অথবা অপরের ক্ষতি করি অথবা ক্ষতির কারণ হই, তার জন্য আল্লাহপাকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। মাতৃগর্ভে আমার ‘রুহ’ পয়দা করার মুহূর্তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিশ্চয়ই বলে দিয়েছেন- তোমার জীবন আমার পবিত্র আমানত। উল্টাপথে চলতে গিয়া, রাগ-ক্ষোভ-হিংসা-লোভের বশবর্তী হইয়া, অজ্ঞতা-অসচেতনতা আর কুসংস্কারে বিশ্বাসী হইয়া আমানতের খেয়ানত করবা না। করলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবা; লোকসানে পড়বা। গোলগুটি বেগমের সুঢোল হাত আর চাঁপাকলার মতো হাতের আঙুলগুলোর দিকে তাকালাম। ভাবাবেগে কাতর হওয়ার উপায় নেই; শত্রুর মোকাবেলা করতে হলে যুদ্ধকৌশল অনুসরণ করতে হবে, বিজ্ঞান মানতে হবে। দু’হাতের বন্দিদশা ঘুঁচিয়ে গোলগুটি বেগমের উদ্দেশে বললাম-
: এখন আবেগপ্রবণ হওয়ার সময় নয়; এখন হইল যুদ্ধের সময়। এমন এক শত্রুর বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ- যারে চোখে দেখা যায় না; যার চলাচলের শব্দ পাওয়া যায় না। নিঃশব্দ এই আততায়ীর বিরুদ্ধে জয়ী হইতে হইলে অবশ্যই যথাযথ নিয়মকানুন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করা লাগবে।
গোলগুটি বেগম বলল-
: ধুরাউ! আজরাইল (আ.) কি নিয়মকানুনের ধার ধারেন? তিনি খালি অর্ডার ফলো করেন। নসিবে থাকলে মরণ, কী করিবে রায়চরণ!
গোলগুটি বেগমের তামাশা ভালো লাগছে না। বললাম-
: একদিন মরণ আছে- এইটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তাই বইলা তুমি যদি চলন্ত ট্রেনের নিচে মাথা ঢুকাইয়া দেও, ২০ তলা ভবন থেইকা লাফাইয়া পড়, বিষধর সাপের লেঙুরে পাড়া দিয়া খাড়াইয়া থাক তাইলে সেইটা তো আত্মহত্যা করা হইল। আত্মহত্যা মহাপাপ। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তুমি অবহেলা করলে, সবকিছু তামাশায় পরিণত কইরা মরলে তা আত্মহত্যার শামিল হবে। এইখানে আরও কথা আছে। শুধু যে তুমি একা মরবা, তাতো না; দেখা যাবে, এর ফলে আরও ১ হাজার জনের মৃত্যুর কারণ হইছো তুমি। সেক্ষেত্রে ওই হাজার জনরে হত্যার পাপও তোমার বহন করতে হবে।
আমার কথা শুনে গোলগুটি বেগমের চেহারায় চিন্তার ভাঁজ পড়ল। সে সংশয়ের সুরে বলল-
: মানুষ কি সত্যিই ধ্বংস হইয়া যাবে!
: আমি তা মনে করি না। পৃথিবী যখন পাপে কানায় কানায় পূর্ণ হইয়া গেছে; তখনও আল্লাহপাক মানুষসহ তার সমুদয় সৃষ্টি রক্ষার জন্য নূহ (আ.) নবীকে নৌকায় উঠতে বলছেন। মুসা (আ.) নবীরে নীলনদ পার হওয়ার নির্দেশ দিছেন। এমন দৃষ্টান্ত আরও আছে। বর্তমানে পৃথিবীতে পাপ যেমন আছে; তেমনি পুণ্যও আছে। অন্যায় যেমন আছে; তেমনি ন্যায়ও আছে। অসৎ মানুষ যেমন আছে; তেমনি সৎ মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। সবচাইতে বড় কথা- মহাদেশে-মহাদেশে, দেশে-দেশে সময়চক্রে ব্যবধান থাকায় বর্তমানে ২৪ ঘণ্টাই পৃথিবীর বুকে আজান শোনা যাইতেছে; আল্লাহপাক ও তার প্রিয় রাসূলের (সা.) মহিমা প্রচার হইতেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত একটা মসজিদ থেইকা আজান ধ্বনিত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহপাক কেয়ামত নাজিল করবেন না; তার সর্বাধিক প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে ধ্বংস করবেন না।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের নিয়মনীতি, বিধি-বিধান সম্পর্কে এবার গোলগুটি বেগমের উৎসাহ দেখা গেল। তার উদ্দেশে বললাম-
: প্রথমেই মাথায় ঢুকাও- আমাদের জীবনে অতি প্রয়োজনীয় দুইখানা হাতের চলাচল সীমাবদ্ধ কইরা ফেলতে হবে। নাক-মুখ-চোখের ধারেকাছেও হাত নিবা না। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে দিনে অনেকবার সাবানপানি দিয়া হাত দুইটারে গোসল করাইতে হবে। স্বেচ্ছা নির্বাসন বরণ করার পর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কঠোরভাবে পালন তো করবাই; পাশাপাশি পরিচিত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরেও ফোন কইরা এই ব্যাপারে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহ জোগাবা।
অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দেয়া, মানুষকে জাগিয়ে তোলাটা হচ্ছে জরুরি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার কালজয়ী ভাষণে শত্রুর মোকাবেলায় দেশবাসীকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমার কেবলই মনে হতে লাগল- সেদিনের সেই শত্রু বিনাশের পর আজ আবার এত বছর বাদে স্বাধীন বাংলাদেশে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে উদয় হওয়া ভয়ংকর এ শত্রুর উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বান যেন বাংলার আকাশে-বাতাসে অনুরণিত হচ্ছে- ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল…। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ বছরের মতো এবারের এ যুদ্ধ সামনে রেখে আমরা যদি আবারও বঙ্গবন্ধুর পুরাতন অথচ চিরনতুন এ আহ্বান কার্যকর করতে সক্ষম হই তাহলে বিজয় সুনিশ্চিত। করোনাভাইরাসের থাবা থেকে আমাদের প্রত্যেকের ঘর যদি সুরক্ষিত থাকে তাহলে দেশও সুরক্ষিত থাকবে।
গোলগুটি বেগমের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগমুহূর্তে সে আমার কাঁধে মাথা রাখল। বলল-
: আপনেরে ছাইড়া যাইতে মন চায় না; মরতেও ইচ্ছা করে না।
এ কথা শুনে আমার চোখের কোণ চিকচিক করে উঠল। চোখের জল ভীষণ সংক্রামক। টের পাচ্ছি, গোলগুটি বেগমের চোখের জলে আমার পিঠ ভিজে যাচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার প্রেম থেকে; ভালোবাসা থেকে। এরপর তিনি তার সেই প্রেম ছড়িয়ে দিয়েছেন মানুষের মধ্যে। মানুষে মানুষে প্রেম-ভালোবাসা, মানবিকতা যতদিন থাকবে; ততদিন নিশ্চয়ই করোনাভাইরাস কেন, এরচেয়েও বড়, ভয়ংকর কোনো বিপদ তাদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াবে না।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৩ মার্চ ২০২০ /এমএম





