বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: একটি জাতি উন্নতি করতে পারে তখনই, যখন নিজেদের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে পারে বাধাহীনভাবে। মুক্তচিন্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মুক্তচিন্তা হচ্ছে একটি বিশেষায়িত চিন্তন প্রক্রিয়া, যেখানে কোনোরকম সীমাবদ্ধতা কিংবা প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।কাজী সাইফুদ্দিন মুক্তচিন্তার সংজ্ঞায় বলেছেন মুক্তচিন্তা মানে ‘Open system of Thought’ অর্থাৎ চিন্তার উন্মুক্ততা।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তার ফেসবুক ওয়ালে নিজস্ব মতামত প্রদান করার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আমরা পূর্বেও দেখেছি ফেসবুকে, টকশোতে, ব্লগে ভিন্নমত প্রকাশ করায় অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
কেননা, প্রকাশিত ভিন্নমতগুলো একটি গোষ্ঠীর বিপক্ষে গেছে। এই যদি হয় অবস্থা- তাহলে আমরা কীভাবে মত প্রকাশ করব? এর মানে কি তাহলে এই- যা কিছু হবে হোক, আমরা টুঁ শব্দটি করতে পারব না!প্রতিটি দেশেই মুক্তমত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন হচ্ছে। ইংরেজ কবি মিল্টন সপ্তদশ শতকে ব্রিটিশ রাজার সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হন বিবেকের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায়।
অ্যারিওপ্যাজিটিকায় তার উচ্চারণ ছিল এই রকম- দাও আমায়, জ্ঞানের স্বাধীনতা দাও, কথা কইবার স্বাধীনতা দাও, মুক্তভাবে বিতর্ক করার স্বাধীনতা দাও। সবার ওপরে আমাকে দাও মুক্তি। লক্ষণীয় যে, শর্তহীন বাকস্বাধীনতার অধিকার আজও আমরা অর্জন করতে পারিনি। আমি কী করব, না করব; সেটা যদি অন্যজন ঠিক করে দেয়, তাহলে আমার কাজ কী! আমার নিজস্ব চিন্তার জগৎ বলে কিছু আছে বৈকি!
বাক-স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর দশটা গণতান্ত্রিক অধিকারের মতো নয়; এটি গণতন্ত্রের মৌল ভিত্তি। আর সবকিছুই এর ওপর নির্ভরশীল। এটি খুবই মৌলিকভাবে গণতন্ত্রের সবচেয়ে মৌলিক উপাদান।
ফলে এই অধিকারের সুরক্ষা দেয়া, সংরক্ষণ করা ও তাকে বিকশিত করা রাষ্ট্রের প্রথম দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, যেটা অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে সবাই নির্বিঘ্নে মত প্রকাশ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে, লিখতে পারবে, সমালোচনা করতে পারবে এবং নিরাপদে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা পাবে- এমন বাংলাদেশই কামনা।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০৯ অক্টোবর ২০১৯/ এমএম