Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: দীর্ঘ দেড় দশকের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে কেবল একটি মাইলফলক নয়, বরং তার আগমন নতুন আশা সঞ্চারকারী ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। গণসংবর্ধনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাজপথে যে জনসমুদ্র দেখা গেছে, তা কেবল দলীয় শক্তি প্রদর্শন নয়; বরং দেশের সাধারণ মানুষের পুঞ্জীভূত আবেগ ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ। দীর্ঘ প্রতিকূলতা পেরিয়ে তার এই ফিরে আসা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী ‘নতুন বাংলাদেশে’ তার এই প্রত্যাবর্তন কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মাঝে যে বিপুল আগ্রহ ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে, তা রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের নতুন বার্তাই দিচ্ছে।

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন নিয়ে রাজনীতিসচেতন মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে গণসংবর্ধনার সময় তার বক্তব্যে ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’ (I have a plan) বা ‘আমার একটি পরিকল্পনা আছে’-এই প্রত্যয় তরুণ প্রজন্ম ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই পরিকল্পনা রাষ্ট্র মেরামতের এক সামগ্রিক রূপরেখা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে বিদেশের মাটিতে থেকেও তিনি যেভাবে দলীয় কর্র্মীদের সংগঠিত করেছেন এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছেন, তাতে তার নেতৃত্বের এক নতুন ও পরিণত রূপ ফুটে উঠেছে।

তার পরিকল্পনার মূলে রয়েছে-রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আমূল পরিবর্তন, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা এবং তরুণদের কর্মসংস্থান। তিনি বারবার বলেছেন, শুধু নেতার পরিবর্তন নয়, বরং ব্যবস্থার পরিবর্তনই হবে তার রাজনীতির মূল লক্ষ্য। তার এই ‘প্ল্যান’-এর মধ্যে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মতো মৌলিক বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে যে গণজাগরণ তৈরি হয়েছে, বলতেই হবে, তা আমাদের রাজনীতিতে নতুন দৃশ্য। বছরের পর বছর ধরে চলা বিভাজন আর অবিশ্বাসের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনের যে স্বপ্ন তিনি দেখাচ্ছেন, তা দেশবাসীকে আশাবাদী করে তুলেছে। বিশেষ করে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিশ্রুতি শিক্ষিত সমাজকে উজ্জীবিত করেছে।

দেশবাসীর এই আশার বাস্তবায়ন সহজ নয়। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক স্থবিরতা কাটিয়ে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ। তারেক রহমান তার ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’-এ উক্তির মাধ্যমে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পথচিত্র তুলে ধরেছেন। জনগণের বিপুল সমর্থন আর তার নেতৃত্বের সমন্বয়ে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে, যেখানে রাষ্ট্রের সব নাগরিকের ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। তার পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নই নির্ধারণ করবে আগামীর বাংলাদেশের গন্তব্য। বস্তুত তারেক রহমানের ঐতিহাসিক এই ভাষণে দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ /এমএম


Array