Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: পৌষের আগেই শীতের দাপটে কাবু দেশের মানুষ। উত্তরের হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। অনুভূত হচ্ছে কনকনে শরীর কাঁপানো শীত। তীব্র ঠান্ডায় গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। হাসপাতাল এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে রোগীদের লম্বা লাইনও চোখে পড়ছে। ৭ ঘণ্টা পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৭ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

ঢাকা: বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই রাজধানীর আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণ কমলেও বিকাল থেকেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। রাজধানীতে এতটা কুয়াশা এই প্রথম। এটাই শেষ নয়- আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের ভাষ্য, সময় যত বাড়বে, কুয়াশার পরিমাণও বাড়তে পারে। আজও কুয়াশা থাকবে। রাজধানীতে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি। কুয়াশা ও শীতের এমন দাপট আরও কয়েকদিন টানা থাকতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নবজাতক ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, যেভাবে শীত হানা দিচ্ছে, তাতে শিশু এবং বৃদ্ধরা খুব সহজেই কাবু হচ্ছে। নবজাতক ও শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।

কুড়িগ্রাম ও রৌমারী: কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বুধবারের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও কনকনে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গত তিন দিন ধরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় দেখা মেলেনি সূর্যের। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, কয়েক দিনের ঠান্ডায় এখানকার চরের মানুষজন ভীষণ কষ্টে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র পাইনি।

পঞ্চগড়: বুধ ও বৃহস্পতিবার সারা দিনই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। দিনের বেলাতেও গরম কাপড় পরে বের হতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। শীতার্ত মানুষেরা সামর্থ্য অনুযায়ী এসব দোকান থেকে গরম কাপড় কিনছেন। গ্রামীণ জনপদের অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ: বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। বুধবার রাত ৩টা থেকে নদীতে কুয়াশার পরিমাণ বেড়ে গেলে রাতেই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাঝ নদীতে ছোট বড় মিলে দুটি ফেরি আটকা পড়ে। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ফের ফেরি চলাচল শুরু করা হয়। ফেরি বন্ধ থাকায় গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে ১ কিলোমিটার ক্যানেল ঘাট এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কে ট্রাকের সারি আটকে থাকে। পরে আস্তে আস্তে সেগুলো পারাপার করা হয়।

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ): চা বাগান ও পাহাড়বেষ্টিত চুনারুঘাট উপজেলা কাঁপছে শীতে। বিশেষ করে চা বাগান এলাকাগুলোতে বেড়েছে শীত। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রিতে ওঠানামা করলেও বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৯ ডিগ্রি। দিনে সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় প্রয়োজনের বাইরে কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শীতজনিত নানা রোগে বিভিন্ন বয়সিরা হাসপাতালে আসছেন।’

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): জেলার চা বাগান ও টিলা অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলা। উপজেলায় বেড়েছে শীতের প্রকোপ। গত কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শেরপুর: জেলা শেরপুরে গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে শীত ও ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছ। রাতে এবং সকালে বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। শীতের দাপটে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক ও মহাসড়কে ধীরগতিতে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।

আগৈলঝাড়া (বরিশাল): বুধবার রাত থেকে প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। এখন পর্যন্ত উপজেলায় শীতার্তদের জন্য সরকারিভাবে কোনো শীতবস্ত্র আসেনি।

হাজীগঞ্জ ( চাঁদপুর): কনকনে শীত। সূর্যের দেখা নেই। প্রচণ্ড শীতে কাঁপছিল মানুষ। স্থবিরতা এসেছে কাজকর্মে। এই ছিল চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার চিত্র। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছিল কুয়াশা।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১২  ডিসেম্বর ২০২৪ /এমএম