প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই ভারত সরকার বিচলিত। শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা ভারত বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করছে না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগাতার অপপ্রচার, আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায় বৈরিতার মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই সভায় দেশ, সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের আলোচনার বিভিন্ন দিক জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।আইন উপদেষ্টা বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশ বিরোধী যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের সব সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। একই সঙ্গে যে কোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
বৈঠকের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, সবাই একটা কথা বলেছেন, আমাদের আর শক্তিহীন, দুর্বল, নতজানু ভাবার কোনো অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অপপ্রচার এবং উসকানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং আমাদের ঐক্য অটুট রাখব। আমরা সাহসী থাকব, ভবিষ্যতে যেকোনো অপপ্রচার বা উসকানি দিলে আমরা আমাদের ঐক্যকে আরো বেগবান রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।
আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তাব আকারে এসেছে— গোটা জাতি ভারতের অপপ্রচার বিরুদ্ধে যে ঐক্যবদ্ধ আছে; সবাই মিলে একটা সমাবেশ করতে পারি কি না, সবাই মিলে পলিটিক্যাল একটা কাউন্সিল করতে পারে কি না, নিরাপত্তা কাউন্সিল করতে পারে কি না; এজন্য প্রস্তাবনা এসেছে। আমাদের মধ্যে মত-পথ ও আদর্শের ভিন্নতা থাকবে, আমাদের রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবে, অবস্থার ভিন্নতা থাকবে; কিন্তু দেশ, সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই এক। সবার উপরে দেশ, এটা থেকে আমরা কখনো বিচ্যুত হবো না। বাংলাদেশকে দুর্বল, নতজানু, শক্তিহীন ভাবার কোনো অবকাশ নেই।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন; ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ; গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি; গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর; বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক।
বৈঠকে আরও অংশ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমার ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ চারজন; খেলাফত মজলিসের আমির আব্দুল বাসিদ আজাদ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন; রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম; জমিয়তে উলামে ইসলামের সহ-সভাপতি আব্দুর রউফ ইউসুফি ও মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেনদি।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ /এমএম