Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনের শুরুটা ভালো হলেও, শেষটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। টস জিতে বোলিংয়ে নেমে প্রথম দুই সেশনেই ভারতকে চেপে ধরে টাইগাররা। টাইগার পেসার হাসান মাহমুদের বোলিং তোপে ১৪৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। তবে এরপরেই আসতে শুরু করে গল্পে নতুন মোড়।

একই দিনে মুদ্রার দুই পিঠই দেখলো বাংলাদেশ। ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারনোর পর জুটি গড়েন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাদের ব্যাটিং তাণ্ডবে দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সপ্তম উইকেটে এই জুটির ১৯৫ রানে ভর করে ৮০ ওভারে ৩৩৯ রান তুলে ভারত। এরপরেই প্রথম দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ার। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ১১২ বলে ১০২ ও রবীন্দ্র জাদেজা ১১৭ বলে ৮৬ রানে অপরাজিত আছেন।

চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) টস জিতে শুরুতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২০ টেস্ট আর ৪২ বছর পর কোনো অধিনায়ক এখানে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। এর কারণে হিসেবে তিনি জানান উইকেটের শুরুর আর্দ্রতা কাজে লাগাতে চান তিনি। উইকেট দেখে মনে হচ্ছে প্রথম সেশনে পেসাররা সুবিধা পাবে। তার এই ভাবনাকে সত্যি প্রমাণ করতে সময় নেননি হাসান মাহমুদ। মাত্র ৩৪ রানের মধ্যেই ভারতের টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান তিনি। প্রথম সেশন শেষে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ভারতের শিবিরে আঘাত হানেন তিনি।

হাসান মাহমুদের পর ভারত শিবিরে জোড়া আঘাত হানলেন নাহিদ রানা ও মেহেদী হাসান মিরাজ। যার ফলে ১৪৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ভারত। এর পরেই জুটি গড়েন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সপ্তম উইকেটে এই জুটির ১৯৫ রানে ভর করে ৮০ ওভারে ৩৩৯ রান তুলে ভারত। এরপরেই প্রথম দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ার। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ১১২ বলে ১০২ ও রবীন্দ্র জাদেজা ১১৭ বলে ৮৬ রানে অপরাজিত আছেন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। স্বাগতিকদের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সাওয়াল। শুরু থেকেই দেখেশুনেই খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই হাসান মাহমুদের স্ট্যাম্প করিডোরে করা বল সজোরে আঘাত হানে অধিনায়ক রোহিত শর্মার প্যাডে। এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেন অধিনায়ক শান্ত। তবে, টিভি রিপ্লেতেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন থার্ড আম্পায়ার।

তবে জীবন পেলেও রোহিতকে বেশিদূর এগোতে দেননি হাসান মাহমুদ। হাসান মাহমুদের বলেই সেকেন্ড স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান হিটম্যান রোহিত শর্মা। আউট হওয়ার আগে করেন ১৯ বলে ৬ রান। তার বিদায়ে ১৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ভারত। রোহিতের বিদায়ের পর শুভমান গিলকে নিয়ে জুটি গড়েন যশস্বী জয়সাওয়াল। তবে এই জুটিকেও বেশিদূর আগাতে দেননি হাসান মাহমুদ। লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান শুভমান গিল। তার বিদায়ে ২৮ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত।

শুভমান গিলকে ফেরানোর পর ভারত শিবিরে আবারও আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। এবার তার শিকার বিরাট কোহলি। আবারও সেই লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান বিরাট। তার বিদায়ে ৩৪ রানেই সাজঘরে ফিরে যান ভারতের তিন টপ অর্ডার ব্যাটার। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন যশস্বী জয়সাওয়াল ও ঋষভ পান্ত। তিন টাইগার পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা ভাঙতে ব্যর্থ হন এই জুটি। এরপরেই বোলিংয়ে আনা হয় স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে। তবে তিনিও ব্যর্থ হন।

এরপর ইনিংসের ২২তম ওভারে তাসকিনের সামনে সুযোগ ছিল এই জুটি ভাঙার। তাসকিনের বলে স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ঋষভ পান্ত, তবে ক্যাচটি তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন সাদমান। যার ফলে জীবন পান ঋষভ পান্ত। যশস্বী জয়সাওয়ালকে নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতির আগের সময়টা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছেন ঋষভ পান্ত। এই জুটির কল্যাণে প্রথম সেশনে ২৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৮৮ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় ভারত।

মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে দেখেশুনেই খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। তবে প্রথম সেশনের পর দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। হাসানের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপার লিটনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ঋষভ পান্ত। আউট হওয়ার আগে করেন ৫২ বলে ৩৯ রান। তার বিদায়ে ভাঙল ৬২ রানের জুটি।

ঋষভ পান্তের বিদায়ের পর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে জুটি গড়েন যশস্বী জয়সাওয়াল। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। তবে অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর নিজের ইনিংসকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি। ১১৮ বলে ৫৬ রানে করে নাহিদ রানার বলে স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জয়সাওয়াল। এবার আর ক্যাচ তালুবন্দী করতে ভুল করেননি সাদমান। যার ফলে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় তাকে। জয়সাওয়ালের বিদায়ে ভাঙে ৪৮ রানের জুটি।

নাহিদ রানার পর ভারত শিবিরে আঘাত হানেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে শর্ট লেগে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লোকেশ রাহুল। তার বিদায়ে ১৪৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারনোর পর জুটি গড়েন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চা বিরতির আগে আর কোনো বিপদ হতে দেননি তারা। এই জুটির ৩২ রানে ভর করে ৪৮ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান করে চা বিরতিতে যায় ভারত।

বিরতি থেকে ফিরে দেখেশুনেই খেলতে থাকেন তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি ও ঘরের মাঠে দ্বিতীয়। রবীন্দ্র জাদেজাও রয়েছেন সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। ১১৭ বলে ৮৬ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।রবিচন্দ্রন অশ্বিন অপরাজিত আছেন ১১২ বলে ১০২ রান নিয়ে। সপ্তম উইকেটে এই জুটির ১৯৫ রানে ভর করে ৮০ ওভারে ৩৩৯ রান তুলে ভারত। এরপরেই প্রথম দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ার।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১৯ সেপ্টেম্বর  ২০২৪ /এমএম