Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছুঁতে চলেছে, আর আহতের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। অবশ্য জুলাইয়ের শুরুতে এক প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ উল্লেখ করা হয়, যার যুক্তি হিসাবে বলা হয়, অসংখ্য ফিলিস্তিনি দীর্ঘ ৯ মাস ধরে নিখোঁজ এবং যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকে আছে, যারা নিশ্চিত মৃত। ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) হামলায় গত সপ্তাহে গাজার নিরাপদ আবাসস্থল হিসাবে খ্যাত খান ইউনিসে একদিনে ১৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

চলমান বিধ্বংসী যুদ্ধে হতাহতের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। যুদ্ধে এযাবৎ জাতিসংঘ, রেডক্রস ও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার দুই শতাধিক কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতের তালিকায় সাংবাদিকও আছেন অনেক। নিহতদের মধ্যে কতজন হামাস যোদ্ধা, তার পৃথক পরিসংখ্যান জানা সম্ভব না হলেও নিশ্চিত যে, নিহতের সিংহভাগই বেসামরিক মানুষ, যারা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত না থেকেও হামলার শিকার। সেভ দ্য চিলড্রেন ২০ জুলাই জানায়, ইসরাইলি হামলায় গাজায় ১৬ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে মাতৃগর্ভেও প্রাণ গেছে কয়েক হাজার অনাগত শিশুর। নিখোঁজ হয়েছে আরও ২১ হাজার শিশু। গত মাসে গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরাইলি হামলায় ১৫ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে, আর আহত বা পঙ্গু ৩ হাজারেরও বেশি। জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, ত্রাণ সরবরাহে বাধা ও বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা না থামলে আরও বহু শিশু প্রাণ হারাবে। ইউনিসেফ জানায়, গাজার ৯০ শতাংশ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বৈরী আবহাওয়া, বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব, অপুষ্টি ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার অভাবে গাজায় শিশুদের মধ্যে নানা সংক্রমণজনিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

চলমান গাজা যুদ্ধে মানবতাকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। আইডিএফ যুদ্ধকালে শত্রুপক্ষ ও অধিকৃত বা আক্রান্ত অঞ্চলের বেসামরিক মানুষের প্রতি আচরণবিষয়ক কোনো আন্তর্জাতিক আইনই মানছে না। প্রসঙ্গত আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের (আইএইচএল) দুটি অংশ (হেগ আইন এবং জেনেভা কনভেনশন) সম্পর্কে একটু আলোকপাত করা যাক। জেনেভা কনভেনশন (১৯৪৯) হচ্ছে আন্তর্জাতিক সংঘাতে (যুদ্ধ, শরণার্থী সংকট ইত্যাদি) যুদ্ধাহত, যুদ্ধবন্দি ও বেসামরিক মানুষ ও স্থাপনার প্রতি আচরণ কী হবে তার অঙ্গীকার, যাতে ১৯৬টি রাষ্ট্র স্বাক্ষর করেছে। অন্যদিকে হেগ আইনে (১৯০৬) যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে আঘাত করার পদ্ধতি, উপায় ও অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে।

গাজা যুদ্ধে প্রতিদিন শুধু শিশুসহ বেসামরিক মানুষ হত্যা নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে মানবিক সেবা পরিচালনায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। গাজায় খাদ্যসামগ্রী প্রবেশ ও সরবরাহ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে, কারণ ইসরাইল গাজায় সব ধরনের ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশে প্রতিনিয়ত বাধা প্রদান করছে। গাজায় মানবিক সেবা পৌঁছানোর একমাত্র করিডর মিসর-গাজা সীমান্তের রাফা ক্রসিং প্রায়ই বন্ধ করে রাখছে। ফলে গাজাবাসীর দিনে একবেলা খাবারও নিশ্চিত হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অধিকাংশ গাজাবাসী পচা-বাসি খাবার ও বন্য লতাপাতা সেদ্ধ খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। ইতোমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে এবং অন্তত ১০ লাখ মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। ইসরাইল সব আইন ও প্রটোকল অবজ্ঞা করে নিরীহ মানুষকে ত্রাণ গ্রহণে বাধা প্রদান করছে, এমনকি ত্রাণের লাইনে গুলি চালিয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ইসরাইলি সৈন্যরা গাজায় ত্রাণের লাইনে গুলি করে ১১২ জনকে হত্যা করে। একইভাবে ১৪ মার্চ ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। মাত্র চারজন জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য ইসরাইল ৮ জুন গাজার ঘনবসতিপূর্ণ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা আল-নুসেইরাতে ২৭৪ জনকে হত্যা করে।

অক্টোবরে যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহেই ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। যে কোনো যুদ্ধের ফলে উদ্বাস্তু বা বাস্তুচ্যুতি একটি সাধারণ ঘটনা হলেও গাজা যুদ্ধে উদ্বাস্তু বা বাস্তুচ্যুতির ঘটনায় ভিন্নমাত্রা লক্ষণীয়। গাজার উদ্বাস্তুরা শুধুই ঘরছাড়া হয়নি, তারা উদ্বাস্তু শিবিরেও নিরাপদ থাকছে না। আইডিএফ প্রতিনিয়ত উদ্বাস্তু শিবির ও নিরাপদ অঞ্চলে অবস্থানকারীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। জুনে ইসরাইলি হামলার আশঙ্কায় রাফা শিবির থেকে ১০ লক্ষাধিক উদ্বাস্তু অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়। এ সপ্তাহেও খান ইউনিসে ইসরাইলি নারকীয় হামলা অব্যাহত রয়েছে। ফলে এক দিনে নতুন করে দেড় লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ নিয়ে গাজায় ফিলিস্তিনি মোট উদ্বাস্তু ও বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখে, যা গাজার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ (সূত্র : ইউএনআরডব্লিউএ)। গাজার এক বাসিন্দা জানান, এবারসহ তার পরিবার চারবার স্থানান্তরিত হয়। এমন অভিজ্ঞতা গাজায় অবস্থানকারী অধিকাংশ নাগরিকেরই।

ইসরাইল সব আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে শরণার্থী শিবিরেও হামলা করছে, যা জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কারণ, এ কনভেনশন অনুসারে বিবদমান পক্ষ যুদ্ধকালে বেসামরিক মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ এবং তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাধ্য। উল্লেখ্য, ইসরাইল ১৯৫১ সালে জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। কনভেনশনের সিগনেটরি হওয়া সত্ত্বেও অঙ্গীকার প্রতিপালন না করে বরং চলমান যুদ্ধে আইডিএফ নৃশংসতা ও অমানবিকতার সীমা লঙ্ঘন করছে প্রতিনিয়ত, যার কিছু তথ্য তুলে ধরছি। ইসরাইলের টর্চার সেল থেকে মুক্ত ফিলিস্তিনিদের বর্ণনামতে-বন্দিদের ওপর দিনরাত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে, খাবার হিসাবে সারা দিনে একটি রুটি দেওয়া হয়, ২৪ ঘণ্টা হাত-পা বাঁধা রাখা হয়, গুরুতর অসুস্থ বন্দিকে চেতনানাশক ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হয় ইত্যাদি। মিডলইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুন পর্যন্ত ৬৪০ শিশুকে আটক করা হয়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয় ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ২৫ জুন জেনেভায় জানান, গাজায় প্রতিদিন পঙ্গু হচ্ছে ১০ শিশু, যারা একটি বা দুটি পা হারাচ্ছে। গাজার উদ্বাস্তু শিবির বা অন্যত্র যারা অবস্থান করছে, তারা সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেঁচে থাকা অধিকাংশ মানুষই আহত বা পঙ্গু হয়ে দুর্বিষহ ও মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে। ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও বিশুদ্ধ পানি সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে; কারণ হাসপাতালও ইসরাইলি হামলা থেকে মুক্ত থাকেনি। গাজার বড় হাসপাতাল আল শিফা ও আল কুদস্সহ প্রায় ২০০ হাসপাতালে হামলা চালানো হয়েছে। ইসরাইলি সৈন্য ডাক্তার সেজে হাসপাতালে হামলা করেছে। নিরাপত্তার অভাব এবং বিদ্যুৎ সংকটে ৭০-এর অধিক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক অপহৃত ডাক্তার ও চিকিৎসাকর্মী ইসরাইলি কারাগারে নির্যাতনে মারা গেছেন। প্রায়ই গণকবর আবিষ্কৃত হচ্ছে, যেখানে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জীবন্ত মানুষকে পর্যন্ত কবর দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অথচ জেনেভা কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধে নিহতকে ধর্মীয় রীতি মেনে ও যথাযথ সম্মানের সঙ্গে সৎকার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে (৪র্থ কনভেনশন, আর্টিক্যাল ১৩০)। গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত আহত ফিলিস্তিনিকে জিপের সামনে বেঁধে ছুটছে ইসরাইলি বাহিনী-এমন অমানবিক ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেখা গেছে। এক্ষেত্রেও যুদ্ধাহতের প্রতি সম্মানবিষয়ক জেনেভা কনভেনশনের অঙ্গীকার প্রতিপালিত হয়নি (১ম কনভেনশন, আর্টিক্যাল ১২)।

গাজায় ইসরাইলি হামলা থেকে মুক্ত নেই স্কুলও। ২৮ জুন জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ৬ লাখ শিশু। হামলার বাইরে নেই অ্যাম্বুলেন্স, মসজিদ, চার্চ, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং বাড়িঘরসহ বেসামরিক স্থাপনা। ইসরাইল ২৭ ডিসেম্বর খান ইউনিসে প্যালেস্টাইন রেড ক্রস (পিআরসি) সদর দপ্তরে হামলা করে। অথচ ২০০৫ সালে প্রটোকল ৩ (জেনেভা কনভেনশন) স্বাক্ষরের মাধ্যমে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আলোচনায় থাকা রেড ক্রিস্টাল প্রতীকসংবলিত ইসরাইল রেড ক্রসকে (ইসরাইলি নাম মেগান ডেভিড অ্যাডম বা এমডিএ) স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং এর আলোকে পিআরসি ও এমডিএ’র মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। ইসরাইল গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়। অথচ জেনেভা কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধকালে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি ও ঐতিহ্য, ধর্মীয় কেন্দ্র/উপাসনালয়, হাসপাতাল, সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল ইউনিটের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, রেড ক্রস স্থাপনা ইত্যাদির সুরক্ষা প্রদানে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এছাড়া কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী যুদ্ধে লিপ্ত রাষ্ট্রগুলো কিছু বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; যেমন-আহত সৈন্যের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গণহত্যা-অত্যাচার পরিহার করা ইত্যাদি। জেনেভা কনভেনশন (৪র্থ কনভেনশন, আর্টিক্যাল ২৩) অনুসারে যুদ্ধরত দেশে নির্বিঘ্ন ওষুধসামগ্রী, পানি, খাদ্য ও বস্ত্র পরিবহণে বিবদমান রাষ্ট্রগুলো বাধ্য। এছাড়া কনভেনশন অনুসারে (১ম কনভেনশন, আর্টিক্যাল ২৩ ও ৪র্থ কনভেনশন, আর্টিক্যাল ১৪) যুদ্ধাবস্থায় হাসপাতাল একটি নিরাপদ স্থাপনা হিসাবে স্বীকৃত। গত ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাধারণ পরিষদের সভায় বলেছেন, গাজায় স্পষ্টত আইএইচএল লঙ্ঘন হচ্ছে, কোনো পক্ষই এ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, বরং সব পক্ষই এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও মেনে চলতে বাধ্য।

১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে ভাগ করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্থাৎ ফিলিস্তিন ও ইসরাইল গঠনের প্রস্তাব পাশ করে। ১৮ মে, ১৯৪৮ ইসরাইল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করলেও ফিলিস্তিন নিজস্ব ভূমির অধিকার তথা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায়নি, বরং নিজ ভূখণ্ড থেকে বারবার বিতাড়িত হয়ে তাদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করতে হয়েছে। ১৯৬৪ সালে গঠিত হয় প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। তবুও অব্যাহত থাকে তাদের ওপর নির্যাতন, বিতাড়ন ও বাস্তুচ্যুতি। গত অক্টোবর থেকে চলমান ইসরাইলি হামলা ফিলিস্তিনিদের ওপর ৭৫ বছর ধরে চলা অত্যাচার ও নিপীড়নেরই ধারাবাহিকতা, তবে তা নৃশংসতম ও অত্যন্ত অমানবিক।

মানবতাবিধ্বংসী চলমান যুদ্ধ সমাপ্তির কোনো আভাস নেই। অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব আনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে তা পাশ হয়নি। ২ ডিসেম্বর দোহায় অনুষ্ঠিত গাজা যুদ্ধবিষয়ক ফোরামে জাতিসংঘ মহাসচিব অনুযোগ করে বলেন, সদস্যদের ঐকমত্যের অভাবে নিরাপত্তা পরিষদ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তবে জাতিসংঘ ব্যর্থ হলেও কাতারের মধ্যস্থতায় প্রথমবারের মতো ২২ নভেম্বর চারদিনের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এ সময়ে হামাস ২৪ ইসরাইলি সৈন্য এবং ইসরাইল ৩৯ হামাস যোদ্ধাকে মুক্ত করা ছাড়াও ইসরাইল গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর পথ অবমুক্ত করে। ৯ মাসাধিককাল ধরে চলমান এ যুদ্ধের বিভিন্ন সময়ে কখনো কাতার, কখনো মিসরের মধ্যস্থতায় আলোচনা যুদ্ধবিরতির আশা জাগালেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।

এ লেখার প্রথমদিকে যুদ্ধে অস্ত্রের ব্যবহার ও প্রতিপক্ষকে আঘাত করার কৌশলসংবলিত হেগ আইন এবং বেসামরিক জনগণ ও স্থাপনার নিরাপত্তাসংক্রান্ত জেনেভা কনভেনশন বিষয়ে আলোকপাত করেছি। চলমান যুদ্ধ কবে শেষ হবে অথবা যুদ্ধবিরতি উদ্যোগ কতটা সফল হবে তা অনিশ্চিত। তবে আন্তর্জাতিক আইনের বিধান ও অঙ্গীকার প্রতিপালনে সব পক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলেও মানবিক দিকটি যেন উপেক্ষিত না হয়, তা দেখার দায়িত্ব জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী সব দেশেরই। জেনেভা কনভেনশনের প্রচারক (প্রমোটার) হিসাবে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটিকেও ম্যান্ডেট অনুসারে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।

এমএ হালিম : সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং দুর্যোগ, জলবায়ু ও মানবিক বিষয়ে কলাম লেখক

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৮ জুলাই ২০২৪ /এমএম