Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘অত্যন্ত জটিল’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে তারা জানিয়েছেন, লিভারের জটিলতায় দেশে যে চিকিৎসা আছে, তার সর্বোচ্চটা দেওয়া হয়েছে। এখন এর বাইরে তাদের কিছু করার নেই। তাকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে লিভার প্রতিস্থাপন (ট্রান্সপ্ল্যান্ট) করা প্রয়োজন। তার পরিবারের একজন সদস্য যুগান্তরকে এ কথা জানান।

তিনি আরও জানান, পরিবারের পক্ষ থেকেও তাকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের লিখিত পরামর্শও যুক্ত করা হয়। কিন্তু সরকারের দিক থেকে তারা কোনো সদুত্তর পাননি।আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগের মতোই ১০ সেপ্টেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আবারও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা ‘অত্যন্ত জটিল’। সে কারণে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছে।এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্লো পয়জনিং করা হয়েছিল।

পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে একটা পরিত্যক্ত ভবন থেকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। অনেকের সন্দেহ, সেদিন খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সরকার অনুমতি দিচ্ছে না।

মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া কোনো অপরাধ না করেই আজকে আটক রয়েছেন। অথচ অপরাধ করেও আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন খান আলমগীর, হাজি সেলিমরা বাইরে। নিয়ম কিংবা আইন শুধু বিএনপির জন্য, আর অনিয়ম আওয়ামী লীগের জন্য। এ অন্যায়ের বেড়াজাল অবশ্যই ভেঙে তছনছ করে দিতে হবে।

একই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়রম্যান বরকতউল্লা বুলু বলেন, উন্নত চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়, তাহলে আওয়ামী লীগকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন তার লিভার, হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যা জটিল অবস্থায় রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত—এ তথ্য ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর তার মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করা হয়েছিল। তখন থেকে প্রায় দুই বছরে তার পরিপাকতন্ত্রে কয়েকবার রক্তক্ষরণ হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য দুই বছর ধরেই পরামর্শ দিয়ে আসছে।

মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে অনেক আগেই এই প্রত্যঙ্গ সংকুচিত হয়ে এর কার্যক্ষমতা প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তার লিভারে জটিলতা বেড়ে গেছে এবং রক্তক্ষরণের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে।

লিভার সিরোসিস এমন একটি রোগ, যার ফলে লিভার বা যকৃৎ তার স্বাভাবিক কাজগুলো যেমন বিপাক ক্রিয়া, রক্ত জমাট বাঁধার উপকরণ তৈরি করা, ওষুধ ও রাসায়নিকের শোষণ, খাদ্যের পুষ্টি উপাদানের ব্যবস্থাপনা করতে পারে না। খালেদা জিয়া এসব সমস্যায় ভুগছেন।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ /এমএম