বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: জীবন মানেই স্বাভাবিক ও সুন্দরের অধিকারী। আমরা প্রবাদ বাক্যে বলি ‘বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।’ আমরা মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে প্রকৃতির সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করি। তবে প্রকৃতির বাইরে সামাজিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বৈষম্য রয়েছে। সামাজিক বৈষম্যের শিকার এমন মানুষেরা একাকী পথে প্রান্তে ঝড়-বৃষ্টির মাঝে খেয়ে না খেয়ে রাত যাপন করে।
এদের মধ্যে অনেকে পাগল, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও অতিদরিদ্র তারাও সমাজে মানুষ হিসেবে পরিচিতি। এই সমাজেই অবহেলিত মানুষগুলো কোনো ওভারব্রিজের নিচে, রাস্তার ধারে, ট্রেন লাইন ও বাসস্টেশনে কিংবা হাটখোলায় কোনো ঘুপচি ঘরে বসবাস করেন। আমরা যাদের টোকাই, বস্তির শিশু বা পথশিশু বলে থাকি। আমাদের অনুন্নয়নশীল দেশে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার কাছে সৃষ্টির সেরা এই অবহেলিত মানুষগুলোর কোনো সামাজিক মর্যাদা নেই। তাদের ঘরে জš§ নেয়া শিশু-কিশোরদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। পথশিশুরা সমাজের একশ্রেণির মানুষের কাছে নানান নির্যাতন সহ্য করে করুণ জীবনযাপন করে। পথশিশুদের পারিবারিক বন্ধন বলে কিছু নেই। বাবা-মায়ের স্নেহ-মমতা তাদের কপালে কখনো জোটে না।
অভিভাবকহীন এসব শিশু নিজের সিদ্ধান্তে জীবন চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। পারিবারিক বন্ধনহীন জীবনযাপনে অভ্যস্ত শিশুদের মাদক ব্যবসায়ীরা টার্গেট করে মাদকের জালে বন্দি করে ফেলে। এসব শিশুকে মাদক ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে। বিনিময়ে শিশুরা একস্থান হতে অন্য স্থানে খর্দেরের কাছে মাদক পৌঁছে দেয়। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজš§; দেশের কর্ণধার শিশু-কিশোরদের শৈশবে যখন বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা ও খেলাধুলার মাধ্যমে নিজের মনকে বিকশিত করা অথচ সেই মুখ্য সময়ে এই শিশু-কিশোরদের এক-তৃতীয়াংশ আজ আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক দারিদ্র্যের কারণে নিজের ভালো-মন্দ না বুঝেই নানামুখী ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে।
এভাবে শিশু-কিশোররা অর্থনৈতিক লোভে নিজের শরীরের ওপর জুলুম করে হলেও ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিজেকে নিয়োজিত করে। যারা শিশু তাদের দ্বারা যে কোনো ধরনের কাজকর্ম করাই হলো ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম। যদিও ক্ষেত্রবিশেষ নানারকম কাজে শিশুরা নিয়োজিত থাকে। তার মধ্যে যেসব শিশু-কিশোর মাদক সরবরাহের মতো মরণ নেশার ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে জড়ায়ে পড়ে তারা সমাজের অবহেলিত পথশিশু বা বস্তির শিশু। সুবিধাভোগী মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে সমস্ত শিশু-কিশোর জড়িত থাকে; তারাও একদিন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে যখন তাদের কাছে মাদক থাকে না তখন আঠা ও কালি মোচনের রাসায়নিক পদার্থ (হোয়াই ফ্লুইড) মাদক হিসেবে গ্রহণ করে।
এসব শিশু অনেকে মাদকের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে জানে না। আর যখন তারা জানতে পারেন ততদিন পথশিশুদের মাদক গ্রাস করে ফেলে। মাদকে আসক্ত হয়ে যখন তাদের চিকিৎসা নেয়ার মতো টাকা থাকে না তখন করুণ মৃত্যু ঘটে। পথশিশুদের সঠিক সংখ্যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও বেসরকারি সংস্থা কারো কাছে তথ্য নেই।
তবে সোশ্যাল ইকোনমিক ইনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম-সিপের উদ্যোগে টেরিডেস হোমস নেদারল্যান্ডস সংস্থার সূত্রমতে, বাংলাদেশে বর্তমানে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৭৯ লাখ। এদের মধ্যে ৪৫ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। এসব শিশু শ্রমিকের মধ্যে ৬৪ লাখ গ্রামাঞ্চলে এবং বাকি ১৫ লাখ শহরে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তবে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সূত্রমতে মাদকাসক্ত শিশুদের ৩০ শতাংশ ছেলে এবং ১৭ শতাংশ মেয়ে। ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলে এবং মেয়ে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পথশিশুদের ৫১ ভাগ ‘অশ্লীল কথার শিকার’ হয়। শিশু নির্যাতনের শিকার হয় ২০ শতাংশ।
বাস্তবতার নিরিখে আমাদের দেশে গ্রাম কিংবা শহরে অভিভাবকের পেশার সঙ্গী হয়েও শৈশব থেকে অনেক শিশু নানা ধরের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। পাথর শিল্প, কৃষি খামার, হস্তচালিত শিল্প, যান্ত্রিক যানবাহন, ওয়ার্কশপ, আবাসিক ও অনাবাসিক হোটেল, মুদিখানার দোকানসহ বিত্তশালী পরিবারের ঝিয়ের কাজে নিয়োজিত থাকে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকের পক্ষ থেকে জেনেশুনে শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার জন্য বাধ্য করে থাকে; এটা অভিভাবকদের অসচেতনতা, অতিদারিদ্র্যের কারণে সামাজিক মানবিকতার অভাব। অবশ্য এই শ্রমের সঙ্গে ছেলেদের তুলনায় দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া নারী শিশুশ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। বিত্তশালী সমাজের লোকজনের দ্বারা সামাজিকভাবে ঝি-এ বা কাজের মেয়ে কিংবা কাজের ছেলে হিসেবে পরিচিত।
আবার শহরে যারা শিশু টোকাই হিসেবে রাস্তায় ঘুরে কোনো ডাস্টবিন, কারখানায় ও হাট-বাজারে নোংরা-আবর্জনা জড়ানোর কাজ করে কিংবা পথচারীদের কাছে হাত বাড়িয়ে টাকা-পয়সা তুলে রাতে ওভারব্রিজ, হাট সেট, যাত্রী ছাউনি ও রাস্তায় তাঁবু তুলে জীবিকা নির্বাহ করে। এই শিশুরা অনেকে নিজ অভিভাবকের পৈতৃক পেশা হিসেবে আবার অনেক অভিভাবকহীন শিশু যাদের কাছে আশ্রয় নিয়ে থাকে তাদের নির্দেশেই নিজের ভালো-মন্দ না বুঝেই এ পেশায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এরা সমাজে টোকাই বা পথশিশু হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের শিশু-কিশোরদের একশ্রেণির স্বার্থন্বেষী মহল স্বল্প টাকার বিনিময়ে খুন খারাবি, ছিনতাই, চুরি, মাদক ব্যবসায় জড়ানোসহ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের নানামুখী ধ্বংসাত্মকমূলক কাজে ব্যবহার করে অথচ কাজটি করার আগ পর্যন্ত শিশুটি বোঝে না তার জীবনের জন্য কাজটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ বা এ কাজে তাকে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে মতে; পথশিশুরা তাদের বাবা-মাকে হারানোর কষ্ট ভুলে থাকতে এবং ময়লা-আর্বজনা কুড়ানোর সময় দুর্গন্ধ আর সেই সময়ে হাত-পা কেটে গেলে ফুলে ব্যথা অনুভ‚তি হয় তা ভুলে থাকে এ নেশা গ্রহণ করে। এছাড়া যে মহাজনের কাছে তারা জিনিস বিক্রি করে তিনিই এসব নেশা করার কথা জানিয়ে দেন। ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবার দাম বেশি তাই যখন তাদের নেশা উঠে তখন সস্তা (ডান্ডি) নেশা করেন। এই ডান্ডি হলো পলিথিনের ভিতরে সল্যুশন ঢুকিয়ে নাক-মুখ দিয়ে তার গন্ধ নেয়া। শহরের অধিকাংশ পথশিশু ডান্ডি নামের নেশার সঙ্গে পরিচিত। এছাড়া গাঁজা, হেরোইন, ঘুমের ওষুধ ও পলিথিনের ভেতরে গামবেøল্ডিং দিয়ে এবং পেট্রোল শুঁকে নেশা করেন।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম, টিএইচ নেদারল্যান্ডস ও পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দে র যৌথ উদ্যোগে ২০০৭ সালে পরিচালিত এক জরিপের তথ্য মতে, ঢাকা শহরে কমপক্ষে ২২৯টি স্পট রয়েছে যেখানে ৯ থেকে ১৮ বছরের শিশুরা মাদক সেবন করেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২১টি স্থানে সুচের মাধ্যমে মাদক গ্রহণ, ৭৭টি স্থানে হেরোইন সেবন এবং ১৩১টি স্থানে গাঁজা সেবন করা হয়। ঢাকা শহরের ২৮টি থানায় ৪১০ মাদকসেবী শিশুকে চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট প্রশ্নমালার আলোকে এসব তথ্য উঠে আসে। পথশিশুদের সেফ হোমের মাধ্যমে দিনে বা রাতে বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। পথশিশুদের বিদ্যালয়মুখী করা ও তাদের পুনর্বাসন বিষয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের ভাবতে হবে। পথশিশুদের যেন কোনোভাবে মাদক ব্যবসায়ীরা টার্গেট করতে না পারে এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ শিশুবান্ধব সংস্থার উন্নয়নকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্ভব হলে অতিদরিদ্র শিশুদের জন্য একবার পুষ্টিকর খাবার প্রদান করা, দরিদ্রদের জন্য সরকারি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা ও ছেলে-মেয়েদের পোশাক প্রদানসহ অভিভাবকদের আয়বন্ধক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরির জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে ওই পরিবারের ছেলে-মেয়েদের স্কুলগামী করাতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে যে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য কোনো টাকা-পয়সা লাগে না। শিশুদের শিক্ষার তাগিদে গধঃযঁ অৎহড়ষফ বলেন, ‘ঞযব নধংরপ বফঁপধঃরড়হ ভড়ৎ ঃযব পযরষফৎবহ সঁংঃ নব বহংঁৎবফ রভ ঃযব হধঃরড়হ ৎবধষষু রিংযবং ঃড় নব ফবাবষড়ঢ়সবহঃ’। বিশেষ করে পল্লীবাসীদের মনে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিশুদের মাধ্যমে দেশে ঝরেপড়া শিশুর বড় পরিসংখ্যান সরকার পেয়েছে। ঝরেপড়া শিশুদের উত্তরণের পাশাপাশি পথশিশুদের শিক্ষামুখী বিষয়ে আমাদের সামাজিক সচেতনতা, গঠনমূলক পরামর্শ, বিত্তশালীদের সাহায্যের হাত প্রসারিত করার মাধ্যমে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
প্রকৃত অর্থে শিশুদের অধিকার নিয়ে নানা কথা বলা হলেও কাজের কাজ তেমন কিছুই হয় না। জাতীয় শিশু নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হলেও আজো তা কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। এমনকি উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এর ফলে, দেশের ৫০ লাখ শিশুর জীবন এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে অথচ জাতীয় শিশু নীতিমালা অনুযায়ী, ছিন্নমূল এসব শিশুর জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষা কার্যক্রম ও অর্থনৈতিকভাবে প্রস্তুত করে সমাজ বিনির্মাণে শিশুদের কাজে লাগানোর কথা সরকারের। ২০১১ সালের সরকারি একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা এখন প্রায় ৭৯ লাখ। আর এই শিশুদের প্রায় ৪৫ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত। শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন সব সংস্থার হিসেবে যদিও বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। এ ৫০ লাখের মধ্যে আবার ১০ লাখ পথশিশু এবং শিশু গৃহকর্মী পাঁচ লাখের বেশি। পথশিশুদের প্রায় সবাই ঝুঁকিপূর্ণভাবেই জীবনযাপন করে। গৃহকর্মীরাও নানা নির্যাতনের শিকার। যাদের জীবনমান এবং ভবিষ্যৎ বলতে কিছুই নেই। গৃহকর্মীরা তাদের শ্রমের স্বীকৃতিও পাচ্ছেন না। অবশ্য শিশুদের কল্যাণে সরকার অনেক আইন ও নীতিমালা করেছে। ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১০’ চ‚ড়ান্ত হলেও অজ্ঞাত কারণে গেজেট হয়নি। শিশুদের কল্যাণে ‘শিশুশ্রম নিরসন আইন ২০১০’ মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২ ও পর্নোগ্রাফি আইন পাস করেছে। তবে ২০১১ সালের ১৬ জুন ‘গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ’ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন (১৮৯) বাংলাদেশ স্বাক্ষর করলেও এই কনভেনশনটি অনুস্বাক্ষর করেনি সরকার। ‘জাতীয় শিশু নীতিমালা-২০১১’ অনুমোদিত হলেও শিক্ষা কার্যক্রমে সামান্য কিছু কাজ ছাড়া এখন পর্যন্ত আইনি কার্যক্রমেই তা সীমাবদ্ধ রয়েছে। অবশ্য সরকার শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় শিশু নীতিমালা-২০১১’ অনুমোদন দেয়ার পর দেড় বছরের মাথায় আইনি কার্যক্রম হাতে নেয়। নীতিমালার আলোকে ১৯৭৪ সালের শিশু আইন রহিত করে শিশু আইন করার জন্য ‘শিশু বিল-২০১৩’ জাতীয় সংসদে পাস করা হয়েছে।
শিশুদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহার না করার ব্যবস্থা রেখে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের বিল-২০১৩ জাতীয় সংসদে সম্প্রতি পাস করা হয়েছে। ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০১২’ রহিত করে ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯’ সংশোধন করে এই আইনটি করা হচ্ছে। এই আইনের সবই এখন পর্যন্ত কাগজে-কলমে চলছে। গৃহশ্রমিক প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দেশে ২০ লাখেরও বেশি গৃহশ্রমিক রয়েছেন, যার ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু। ২০০৬ সালের লেবার ফোর্স সার্ভে অনুযায়ী, গৃহকাজে ১৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুর সংখ্যা তিন লাখ ৩১ হাজার।
এ সব গৃহশ্রমিক প্রতিনিয়তই নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এদের নির্যাতন বন্ধে নীতিমালা অনুমোদনসহ গৃহশ্রমিকদের শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্ত করতে ২০১১ সালের ৯ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ১০ দফা নির্দেশনা দেন। সরকার নীতিমালা করলেও এখন পর্যন্ত তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়নি। সংশোধিত শ্রম আইনের বিলে গৃহশ্রমিকদের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব শিশু ছাড়াও আর্থ-সামাজিক কারণে সুস্থ ও সবল নয় এমন শিশুর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। আর অনাগত শিশুদের একটি অংশের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক! শিশু অধিকারভিত্তিক সংগঠনগুলোর দাবি, ভাগ্যবিড়ম্বিত পথশিশুদের জন্য সরকারকেই জরুরিভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা / ০৮ আগস্ট ২০১৯/ এমএম