Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌  দেশে আবারও বাড়ছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। টানা দুইদিন সংক্রমণ একশ ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাদ পড়া মানুষদের করোনা টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ১০৯ জন। প্রায় আড়াই মাস দৈনিক সংক্রমণ একশোর নিচে থাকলেও গত দুই দিনে তা আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ একদিনে শনাক্তের সংখ্যা ছিল একশোর ওপরে।

দেশে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। কয়েক মাস দৈনিক ৩১ থেকে ৩৫ জন সংক্রমিত হতো। গত দুইদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সে তুলনায় বেশ বেড়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমরা করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই।

হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, আমার মতে এটি করোনার পঞ্চম ঢেউ। মার্চ মাসে এর চতুর্থ ঢেউ শেষ হয়েছিল। আক্রান্ত মানুষের শরীরে তিন মাস প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে। তিন মাস পর তা পুরোপুরি চলে না গেলেও আক্রান্ত ব্যক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। টিকার ক্ষেত্রেও তা-ই, টিকা নেওয়ার তিন-চার মাসের মধ্যে এর কার্যকারিতা কমতে থাকে। এজন্য নির্দিষ্ট সময় পর সংক্রমণ আবারও বাড়ার আশঙ্কা থাকে।তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার বিষয়ে শিথিলতা দেখায়নি। কিন্তু চলাফেরায় আমরা তা দেখাচ্ছি। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব মানা- এসব যেন আমরা ভুলে গেছি। করোনা অ্যালার্ট এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

আগের মতোই স্বাস্থ্য সচেতনতার তাগিদ দিয়ে অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেন, আমাদের জনসমাগম ও ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। বাড়ির বাইরে বিশেষ করে গণপরিবহনের চলাচলকারীদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রামক হওয়ায় এতে একজন থেকে অন্যজন আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

দেশের প্রতিটি মানুষকেই ভ্যাকসিনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, দেশের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষকে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে আদম শুমারির মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাদ পড়া মানুষদের এ টিকা দিতে হবে। বুস্টার ডোজ কম লোক নিলেও সবাই যেন অন্তত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৩ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১৩১ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫ হাজার ৩৩৭ জন। দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসের আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ ভাইরাসটিতে প্রথম মৃত্যু তথ্য জানায় আইইডিসিআর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ১৯ ডিসেম্বর দেশে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত মোট বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১ কোটি ৬৭ লাখ মানুষ। প্রথম ডোজ নেওয়া টিকাগ্রহীতার ১৪ দশমিক ২৩ শতাংশ বুস্টার ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন হয়েছে এমন সাড়ে ৪ কোটি মানুষ বুস্টার ডোজের অপেক্ষায় রয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার পর চার মাস পার হয়েছে এমন ১৮ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সী নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দিচ্ছে সরকার।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৪ জুন  ২০২২ /এমএম