Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌ কাজ হলো মানুষের বেঁচে থাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে কাজটা হওয়া উচিত বৈধ। অবৈধ কাজ যেমন নিজের নৈতিকতাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, তেমনি তা জনগণের অমঙ্গলের কারণ হয়। আমাদের দেশে একজন তরুণ পড়াশোনা শেষ করে বের হয় চাকরির সন্ধানে।

অন্য কোনো সুযোগ না পেয়ে অনেকে দেশের ভেতরে কোনো শ্রমিকের কাজ করে। তখন তার ভেতরে এক ধরনের হীনমন্যতা কাজ করে। অথচ তারাই যখন দেশের বাইরে লেবারের কাজ করে, তখন ঠিকই মানিয়ে নেয়। এর একমাত্র কারণ মানসিকতা।

আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ৯০০ বছরের মুসলিম শাসনামলে মুসলমানরা কঠিন পরিশ্রমী ও প্রোডাক্টিভ ছিল। শুধু তাই নয়, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও অনেক এগিয়ে ছিল। দুর্ভাগ্যবশত ব্রিটিশ শাসনামল শুরু হওয়ার পর তারা শিক্ষাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যে, বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে শুধু চাকরিটাই পাওয়া যেত। এখনো আমরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক চিন্তাধারা থেকে বের হতে পারিনি; যেন ডিগ্রি অর্জন করলেই চাকরি করতে হবে!

দেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। কিন্তু কাজের মর্যাদা আমরা এখনো দিতে পারিনি। সমাজে একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে, শিক্ষিত হলেই সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে হবে। অথচ পৃথিবীতে যারা শীর্ষস্থানে পৌঁছাতে পেরেছেন, তারা ছোট ছোট কাজকে এত গুরুত্ব দিতেন যে, মনে করতেন সবচেয়ে মহৎ বা বড় কাজটি তারা করছেন।পরিশ্রম ছাড়া সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। আজকাল কারও কাছে জিজ্ঞেস করলে বলে, পাশ করে বের হলেই চাকরি নেব। কমই শোনা যায় সে নিজে কিছু করবে। এভাবে পরের ওপর নির্ভর করে চললে জীবনে তেমন সাফল্য আসবে না।

কেউ যদি শুধু চাকরির জন্য পড়াশোনা করে, তাহলে বলব সে মস্ত ভুল করছে। পরিবার বা সমাজ মনে করে, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে চাকরির জন্য। আজকের সমাজ মান-সম্মানের কথা বেশি ভাবে। অথচ সভ্যতার ইতিহাসে দেখা যায়, কেউ কখনো হঠাৎ করে বড় হয়নি। জীবনে বড় কাজগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য ছোট কাজগুলোকে অবহেলা করলে চলবে না।

ছোট ছোট ইট দিয়েই বানানো হয় বিশাল অট্টালিকা, হাঁটি হাঁটি পা পা করেই পৌঁছানো যায় এভারেস্টের চূড়ায়। তাই কোনো কাজে লজ্জা না করে বরং কাজটা সম্মান দিয়ে করলে আসতে পারে মহা সাফল্য। সৃষ্টিকর্তা কারও ভাগ্য পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না সে নিজে তার ভাগ্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করে।

মনসুর হেলাল : শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৬ এপ্রিল ২০২২ /এমএম