বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: পদ্মা সেতুর পাইল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। রোববার সকালে ২৬ নম্বর পিয়ারের ৭ নম্বর পাইল ড্রাইভের কাজ শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শেষ হয়। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো এই সেতুর পাইল বসানোর কাজ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পদ্মা সেতুর পাইল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এ সময় সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এ বছরই পদ্মা সেতুর ২৯৪টি পাইলের ওপর ৪২টি পিয়ারের সব কটিই তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছেন সেতু কর্তৃপক্ষ।
নকশা–জটিলতার কারণে এর আগে পদ্মা সেতুর কোনো কাজই সময়মতো সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে সেতু প্রকল্পের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নতুন নকশা চূড়ান্ত করার পর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পাইল বসানোর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। মূল সেতুর নির্মাতা চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে এ সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলী জানান, ৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যানে গড়ে উঠবে পুরো পদ্মা সেতু। মূল নদীতে ৪০টি পিয়ার। নির্মাণকাজের শুরুতে মূল নদীর প্রতিটি পিয়ারে পাইলের সংখ্যা ছিল ৬। আর দুই প্রান্তে ১ ও ৪২ নম্বর পিয়ারে ১২টি করে মোট ২৪টি পাইল। সব মিলিয়ে ৪২টি পিয়ারে পাইল ছিল ২৬৪টি। কিন্তু নদীর গভীর তলদেশে কাদামাটির স্তর থাকায় নতুন নকশা করতে হয়। নতুন এই নকশায় ১ ও ৪২ নম্বর পিয়ারের ১৬টি করে মোট ৩২টি পাইল করা হয়। আর ২২টি পিয়ারে সাতটি করে পাইল ১৫৪টি এবং ১৮টি পিয়ারে ছয়টি করে মোট ১০৮টি পাইল রাখা হয়। সব মিলিয়ে ২৯৪টি পাইলে ৪২টি পিয়ারে থাকবে পদ্মা সেতু। ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানোর পর পদ্মা সেতুর ২ হাজার ১০০ মিটার এখন দৃশ্যমান।
১৩টি পিয়ার নির্মাণকাজ শেষ হলে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে উল্লেখ করে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, মূল বা গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল সেতুর পাইল ডাইভিং। এটি সম্পন্ন হয়েছে। জাজিরায় অনেক স্প্যান বসে গেছে। মাওয়ার কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে দূরত্ব কমে এসেছে। তাই কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে দু-এক দিনের মধ্যেই একটি করে স্প্যান পিয়ারের ওপর বসানো সম্ভব।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মাওয়া থেকে শুরু হয় পদ্মার সেতুর নির্মাণকাজ। কাজের শুরুতেই নদীর তলদেশের গভীরে পাওয়া যায় নরম মাটির স্তর। তাই হ্যামার দিয়ে পাইল বসাতে গিয়ে ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারের কাজে সমস্যা দেখা যায়। এ কারণে ১৪টি পিয়ারের নকশা চূড়ান্ত করা যাচ্ছিল না। কাদামাটির পরই শক্ত মাটি না পাওয়ায় পদ্মা সেতুর ২২টি পিয়ারে একটি করে পাইলের সংখ্যা বাড়ানো হয়। এসব খুঁটিতে ছয়টি পাইল অন্যান্য পিয়ারের মতোই রেকিং বা কিছুটা বাঁকা করে বসানো হবে। এই ছয়টি পাইলের মধ্যে ৭ নম্বর পাইল ভার্টিক্যাল বা সরাসরি সোজাভাবে বসানো হয়।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা / ১৫ জুলাই ২০১৯/ এমএম





