Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌ বাংলাদেশ গত এক দশকের বেশি সময় ধরে কৃষি, শিল্প, সড়ক যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে যে অভাবনীয় উন্নয়ন করে চলেছে, তা এক কথায় অসাধারণ ও অভূতপূর্ব। জিডিপি থেকে শুরু করে সব সূচকেই এ উন্নয়ন সারা বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।অদূর ভবিষ্যতে এসব মেগা-প্রজেক্ট যখন একের পর এক শেষ হবে, তখন জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ উন্নয়ন আরও দৃশ্যমান হবে আর এসব মেগা-প্রজেক্টের সুফল মানুষের কাছে পৌঁছতে শুরু করবে।

যখনই বাংলাদেশের মতো কোনো দেশ এ ধরনের অতি দ্রুত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে যায়, তখন বিভিন্ন খাতে যেমন-যোগাযোগ, পরিবেশ, জ্বালানি এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলি যোগাযোগ খাতে এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।এসব নতুন এবং আসন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের আশু প্রয়োজন যুগোপযোগী ও দূরদর্শী নীতি প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়ন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আসন্ন কিছু সমস্যা এবং সমস্যা নিরসনের পন্থা নিয়ে আলোকপাত করা হলো।

যোগাযোগ : গত এক দশকের বেশি সময় বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সংখ্যা অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের নতুন সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, হচ্ছে এবং আরও অনেক সমস্যার উদ্ভব হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখতে পাই, পরিবেশগত কারণে সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের জন্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ এসেছে।

এর পরপরই সংবাদ মাধ্যমের খবর-৪০ লাখ(?) অটোরিকশা চালকের জীবন অনিশ্চিত। আমি মনে করি, যারা এ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আমদানি এবং রাস্তায় চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল, তাদের জবাবদিহিতার প্রয়োজন আছে। একইভাবে ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা’ নামে ভারসাম্যহীন, দ্রুতগামী এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এক অদ্ভুত যাত্রীবাহী বাহনের উদ্ভব হয়েছে। এর পক্ষে যুক্তি হিসাবে বলা হয়ে থাকে ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী’দের জীবিকা নির্বাহের জন্য এ ব্যাটারিচালিত রিকশার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সাধারণ যানবাহনের চেয়ে যাত্রীবাহী যানবাহনের চালকের শারীরিক সক্ষমতা বেশি হওয়া প্রয়োজন, তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত এবং সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই এ বিপজ্জনক এবং অবৈজ্ঞানিক যানটি আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে প্রতিবন্ধী চালকের কারণে। প্রয়োজনে ব্যাটারিচালিত রিকশার প্রতিবন্ধী চালকদের অন্য ‘ইনডোর পেশা’য় কর্মসংস্থান করা যেতে পারে। সময় থাকতেই এ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তা থেকে উঠিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।

একই সঙ্গে আমরা দেখতে পাই ‘যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণের অভাবে’ সড়কে প্রতিদিন মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল এবং ক্রমবর্ধমান মারাত্মক দুর্ঘটনার খবর। যদি অতিদ্রুত ক্রমবর্ধমান এ মোটরসাইকেল চালকদের প্রশিক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা অন্যসব দুর্ঘটনাকে ছাড়িয়ে যেতে বাধ্য।

পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার ও কর্ণফুলী টানেলের মতো মেগা প্রজেক্টের সুফল ঘরে পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়ন্ত্রিত এবং অবৈজ্ঞানিক যানবাহনের উপদ্রবে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল এবং ফ্লাইওভার তৈরির ফলে যে পরিমাণ সময় বাঁচবে, তা অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতি এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহনের কারণে রাস্তায়ই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

স্বপ্নের মেট্রোরেল চালু হবে এ বছরই। মেট্রোরেলের মতো হাইটেক এবং সেনসেটিভ যোগাযোগ ব্যবস্থা আমাদের দেশে এই প্রথম চালু হতে যাচ্ছে। যে কোনো সামান্য যান্ত্রিক ত্রুটি বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতির জন্য ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা এবং যাত্রীদের অপরিসীম ভোগান্তি। আর মেট্রোরেলে দুর্ঘটনা ঘটলে তা হবে সম্পূর্ণ ভিন্নমাত্রার।

আমাদের দেশে নতুন কোনো সেবা বা প্রকল্প চালু হলেই দেখা যায়, নিয়ম পালনে শিথিলতা বা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি এবং অবহেলার কারণে কিছুদিন পরই তার মান খারাপ হতে থাকে। কিন্তু মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে এ ধরনের ন্যূনতম গাফিলতি বা অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। এ মেট্রোরেলেক সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য বাহন হিসাবে চালু রাখতে শিক্ষিত এবং বিদেশে প্রশিক্ষিত জনবলই যথেষ্ট নয়; আমাদের দরকার নিয়মিত কঠিন নির্দেশনা পালনে অভস্ত, দক্ষ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জনবল।

পরিবেশ : ক্রমবর্ধমান যানবাহন, শিল্পায়ন, আবাসন ও ভোগ্যপণ্যের ব্যবহারের ফলে দেশের পরিবেশ প্রচণ্ড হুমকির সম্মুখীন। দেশে বর্তমানে প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ের পরিমাণ খুবই নগণ্য। একই সঙ্গে যত্রতত্র বর্জ্য ফেলার ফলে পরিবেশের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। এডিস মশার মাধ্যমে ডেঙ্গি এবং চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব এখন নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং রিকশাও যোগ হয়েছে এ পরিবেশ দূষণের মিছিলে। এ ব্যাপারে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ এখন সময়ের এক নম্বর দাবি।

কোয়ারেন্টিনের কঠোর প্রয়োগ আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন; কারণ আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এখন বিদেশে আসা-যাওয়া করে থাকে। তাই বিদেশি পশু, পাখি বা উদ্ভিদ দেশে আনার ব্যাপারে আরও কড়াকড়ি প্রয়োজন। ‘বুড়িগঙ্গা’সহ বিভিন্ন নদীতে ‘সাকার’ মাছের উপস্থিতি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, কোয়ারেন্টিনের কঠোর প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা।

অস্ট্রেলিয়ায় শখের বশে খরগোশ আমদানির ফলে স্থানীয় উদ্ভিদ এবং পরিবেশের ওপর যে মারাত্মক প্রভাব পড়েছিল, তার থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এখনই সাবধান হওয়া উচিত। যথাযথ আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগের পাশাপাশি প্রাইমারি স্কুল থেকেই সমাজ পাঠ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং সড়ক আইন মেনে চলার উপকারিতা শিশুদের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে। এ ধরনের সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রভাব হয় সুদূরপ্রসারী এবং স্থায়ী।

তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ : ফেসবুক, টিকটকের মতো সামাজিক মাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব সর্বজনবিদিত। রামু থেকে শুরু করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা সব দাঙ্গার পেছনে গুজব ছড়ানোর কাজে ফেসবুক সব থেকে বেশি দায়ী এবং ক্ষতিকর ভূমিকা রেখেছিল। সামাজিক উসকানি ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জুয়া, মাদক এবং অসামাজিক কর্মকাণ্ডের নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে ও দ্রুত বিস্তার লাভ করে।

নারী পাচারের মতো অনেক ঘটনার পেছনেও এ ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা রয়েছে। চীনে যে কোনো গুজব বা সামাজিক উসকানিমূলক পোস্ট ইন্টারনেট থেকে সরাতে সময় নেয় ৩০ সেকেন্ড। আমাদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট কাজ বাকি। দেশে এ ব্যাপারে প্রয়োজন সময়োপযোগী নীতি প্রণয়ন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা প্রয়োগ।

ড্রোনের মতো নতুন প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ : এ ধরনের প্রযুক্তি রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও প্রাইভেসির প্রতি হুমকি। তাই এ ধরনের নতুন প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য। বিভিন্ন উন্নত দেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমাদের বাস্তব অবস্থার আলোকে আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগ করা উচিত।

গ্যাস সিলিন্ডার নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন : অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা ও সরবরাহ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আরও পাবে আগামী দিনগুলোতে। বোমার মতো বিস্ফোরক এ গ্যাস সিলিন্ডার উৎপাদন, পরিবহণ, মজুতের মতো প্রতি স্তরেই প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রয়োগ। যদি অতিদ্রুত সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না করা হয়, তবে আমরা কেমিক্যাল গোডাউনের বিস্ফোরণের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হব।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, নতুন এবং পুরাতন গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যার পাশাপাশি দুর্ঘটনা জ্যামিতিক হারে বাড়তে বাধ্য। বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার গোডাউনের মতো মারাত্মক বিপজ্জনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কীভাবে সংশ্লিষ্টদের চোখ এড়িয়ে যায়, তা সত্যিই চিন্তার বিষয়।

সড়ক ও যানবাহন ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ ও সুশৃঙ্খল জনবল : মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, কর্ণফুলী টানেল ও পদ্মা সেতুর সুফল মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য দরকার দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সুশৃঙ্খল জনবল। দেশে বর্তমানে দক্ষ জনবলের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই আমরা দেখি পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন রপ্তানি খাতে বর্তমানে প্রচুরসংখ্যক বিদেশি কর্মরত রয়েছেন।

আধুনিক সড়ক যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের ব্যাপক উন্নয়নের সুফল মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন দক্ষ ও সুশৃঙ্খল জনবল। টোল আদায়ের জন্য ‘এক হাতে লাঠি আর কানে মোবাইল’ নিয়ে কাজ করা অলস, অদক্ষ এবং গাফিলতিপ্রবণ জনবল দিয়ে ২১ শতকের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ, সফল ও দক্ষতার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালনা সম্ভব নয়। বর্তমান এবং অদূর ভবিষ্যতে মেগা প্রকল্পগুলো নিরাপদ, দক্ষ ও নিরবচ্ছিন্ন পরিচালনার জন্য আমাদের স্বল্প সময়ের মধ্যে দরকার প্রয়োজনীয়সংখ্যক দক্ষ ও সুশৃঙ্খল জনবল।

প্রতিবছর আমাদের সশস্ত্র বাহিনী থেকে ‘মেজর ও সমমান র‌্যাংকের অনেক অফিসার’ স্বাভাবিক ও ঐচ্ছিক অবসর গ্রহণ করেন। একইভাবে অনেক নন-কমিশন্ড অফিসার এবং সৈনিক অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে তাদের এলপিআরের সময় তাদের যোগ্যতা এবং ব্যাকগ্রাউন্ড অনুসারে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিলে তারা সামরিক বাহিনী থেকে অবসরের পর তাদের অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ ও মেধা দেশের বিভিন্ন খাতে যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা, রপ্তানিমুখী ও সেবা খাতে যথাযথ কাজে লাগাতে পারবেন। এতে দক্ষ ও সুশৃঙ্খল জনবল সংকটের অনেকটা সমাধান হতে পারে।

সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে গত একযুগ ধরে আমাদের সার্বিক উন্নতি অনেক গতিশীল হয়েছে। মেগা প্রজেক্টগুলোর সুফল এ গতিকে করবে আরও অনেক বেগবান। আমাদের দেশে জর্জ ওয়াশিংটন বা আব্রাহাম লিংকন নেই; কিন্তু আমাদের বঙ্গবন্ধু ছিলেন, যিনি একাই দেশকে স্বাধীন এবং জাতির মুক্তি নিশ্চিত করে গেছেন। আমাদের লি কুয়ান বা মাহাথির মোহাম্মদ নেই; কিন্তু আমাদের আছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সব বাধা এবং ষড়যন্ত্র অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণ করে চলেছেন।

চীন সম্পর্কে একটা কথা খুবই প্রচলিত আছে, তা হলো-‘মাও সে তুং চীনকে একক দেশ হিসাবে জন্ম দিয়েছেন, দেং জিয়াও পিং চীনকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং শি জিন পিং চীনকে শক্তিশালী করেছেন।’ বাংলাদেশ সম্পর্কে একইভাবে বলা যেতে পারে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এবং বাঙালি জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং একইসঙ্গে শক্তিশালী করছেন।

নাজমুল আহসান শেখ : অধ্যাপক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০৮ জানুয়ারি  ২০২২ /এমএম


Array