বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: বিশ্বের সর্ব বৃহত্তম বার্ন ইন্সটিটিউট ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট’-এর সেবাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ১৩তলা বিশিষ্ট এই বিশেষায়িত ইন্সটিটিউটের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইন্সটিটিউটের উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যুরালে পুষ্পস্তবক দেয়ার মাধ্যমে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ও বিভিন্ন বিভাগগুলো পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পরিদর্শন শেষে একটি উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। ইন্সটিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম জানান, বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের উদ্বোধন হলেও তিন দিন আগেই পরীক্ষামূলকভাবে এখানকার সেবা কার্যক্রম শুরু করেছি আমরা। তিনি বলেন, পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে নতুন দিক খুলে দিয়েছে।
রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হবে বিশ্বের সেরা এ ইন্সটিটিউটটি। ইন্সটিটিউটের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রথমে পাঁচটি শয্যা নিয়ে বার্ন ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ধাপে ধাপে তা ১শ’ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। এখন এটি পাঁচশ’ শয্যার ইন্সটিটিউটে রূপান্তরিত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বার্ন চিকিৎসার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন।
তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিল। জানা যায়, ১৮ তলাবিশিষ্ট এ ইন্সটিটিউটের মাটির নিচে তিনতলা বেজমেন্ট। সেখানে গাড়ি পার্কিং ও রেডিওলজিসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিভাগ রাখা হচ্ছে। ইন্সটিটিউটটিতে ৫০০টি শয্যা, ৫০টি ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট, ১২টি অপারেশন থিয়েটার ও অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড রয়েছে।
১৯৮৬ সালে ছয়টি শয্যা নিয়ে দেশে প্রথম বার্ন ইউনিট চালু হয় ঢাকা মেডিকেলে। এটি ৫০ শয্যা করা হয় ১৯৯৬ সালে। আরও ৫০ শয্যা বাড়াতে সময় লাগে ২০০৩ সাল পর্যন্ত। ২০১৩ সালে সরকার ইউনিটটিকে ইন্সটিটিউট করে ৩০০ শয্যা করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ইউনিটের জনবল ১০০ শয্যার, ওষুধ-পথ্যের জোগানও ১০০ জনের হিসাবে। বাকিটুকু চলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুদান নিয়ে।
এক পর্যায়ে সরকারের নির্দেশনায় রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ফরিদপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, বগুড়া ও ময়মনসিংহ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালু হয়। চিকিৎসকরা জানান, জন্মগত ঠোঁটকাটা-তালুকাটা, আঙুল জোড়া লাগানো, পায়ের ত্রুটি, ক্যান্সার, দুর্ঘটনা, ট্রমা, হাত-পা সার্জারি রোগীদের একটা বড় অংশ ঢামেক বার্ন ইউনিটে আসে।
দেশে প্লাস্টিক সার্জন দরকার ন্যূনতম ৪০০ জন, রয়েছেন ৬৫ জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল এই ইন্সটিটিউটটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং মূল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা / ০৫ জুলাই ২০১৯/ এমএম





