Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার ষড়যন্ত্রের ঘটনায় ব্যবসায়ী সমাজের ক্ষোভ ও নিন্দা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। এ বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন টেলিফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের মতো একজন স্বনামখ্যাত, সফল শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ধরনের ঘটনায় ব্যবসায়ী সমাজ গভীর উদ্বিগ্ন।

এ ঘটনার ক্রীড়নকদের আইনের আওতায় আনতে হবে যে কোনো মূল্যে। এটি সরকারেরই দায়িত্ব। আমরা এমন একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই যেন পরবর্তীতে আর কোনো দুষ্কৃতকারী এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর চিন্তাও করতে না পারে। একই ঘটনায় মন্তব্য জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে- এটি খুবই উদ্বেগজনক। নিন্দনীয়। চরম ভয়াবহ অপরাধ। অপরাধী যেই হোক চিহ্নিত করতে হবে।

গতকাল গণমাধ্যমে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) সভাপতি এনামুল হক খান দোলন ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া একই দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাউতুল কোরআন মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে সাইফুল ইসলাম সাদ (২৩) নামে চট্টগ্রামের পটিয়ার এক যুবককে আটক করে রাজধানীর ভাটারা থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ জানান, জুমার নামাজ চলাকালে সায়েম সোবহান আনভীরের ওপর হামলার প্রস্তুতি ছিল তার। সাদের মোবাইল ফোনে পটিয়ার সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে তার ছবি পাওয়া যায়।

ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা এ দেশে নতুন কোনো ইস্যু নয়। অকারণেই ব্যবসায়ীদের মামলা দিয়ে জেলেও ঢোকানো হয়। এর আগে ২০০৭ সালে ১/১১-এর সময়ও ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছিল। সে সময় তাঁদের কাছ থেকে জোরপূর্বক বিপুল পরিমাণ টাকাও আদায় করা হয়েছিল। অন্যায়ভাবে জেলে নেওয়া হয়েছিল শীর্ষ ব্যবসায়ীদের। এতে স্থবির হয়ে পড়েছিল দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি।

একজন ব্যবসায়ীকেও হয়রানি করা যাবে না-এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন

দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন গতকাল লন্ডন থেকে টেলিফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের মতো একজন স্বনামখ্যাত, সফল শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ধরনের ঘটনায় ব্যবসায়ী সমাজ গভীর উদ্বিগ্ন। আমি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলছি, ঘটনার গভীরে গিয়ে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন। কারণ, একজন উদ্যোক্তা এক দিনে সৃষ্টি হন না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে মেধা, মনন ও শ্রম দিয়ে সরকারের পাশে আছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের নিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র ব্যবসায়ী সমাজের অভিভাবক সংগঠন হিসেবে এফবিসিসিআই মানবে না।

সারা দেশে জুয়েলার্সদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে- বাজুস

দেশের শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনায় সারা দেশে সাধারণ জুয়েলার্সদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি- বাজুস। সংগঠনটি এই হত্যাচেষ্টা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সকল দোষীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।

গতকাল গণমাধ্যমে বাজুস সভাপতি এনামুল হক খান দোলন ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও বলেছে, এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ ও বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সদস্য সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রে জড়িত একজনকে রাজধানীর ভাটারা থানা পুলিশ আটক করেছে। বিষয়টি একদিকে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি আশাব্যঞ্জকও বটে। দেশের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ীকে হত্যার নীলনকশা প্রতিহত করার জন্য বাজুসের পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনীকে সাধুবাদ জানাই।

বাজুস বলেছে, এ ন্যক্কারজনক ঘটনার ফলে দেশের সাধারণ জুয়েলার্সদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, দেশের শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বাজুসের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম গোল্ড রিফাইনারি স্থাপনসহ বিভিন্ন গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাঁর এ উদ্যোগের ফলে জুয়েলারি খাতসহ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তাই বাজুসের পক্ষ থেকে আমরা এ হত্যাচেষ্টা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সকল দোষীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে-বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম : তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম এ প্রসঙ্গে বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে- এটি খুবই উদ্বেগজনক। নিন্দনীয়। চরম ভয়াবহ অপরাধ। অপরাধী যে-ই হোক চিহ্নিত করতে হবে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেন পরবর্তীতে আর কেউ এমন দুঃসাহস দেখাতে না পারে। অন্যথায় যে কাউকে যে কোনো সময় এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এখানে সবার আগে জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। বসুন্ধরার এমডিকে প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা দেশের ব্যবসায়ী সমাজের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও সরকারের উচিত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা। তাই সরকারকে এ ঘটনা খুবই শক্তভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে। যাতে অপরাধীরা কোনোভাবেই পার না পায়।

এমন হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণযোগ্য নয়- প্র্যাব সভাপতি এম মামুন সালাম

পেট্রোকেমিক্যাল অ্যান্ড রিফাইনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (প্র্যাব) সভাপতি এম মামুন সালাম বলেন, যে কোনো মানুষের ওপর হামলার পরিকল্পনা গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং বসুন্ধরা এমডির ওপর হামলার ঘটনায় আমি নিন্দা জানাই। আমি মনে করি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে। কারণ তাঁর (বসুন্ধরা গ্রুপের) মাধ্যমে দেশে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। যা দেশের অর্থনীতিতে অসামান্য অবদান রাখছে। এভাবে কাউকে হত্যার পরিকল্পনা করা খুবই ন্যক্কারজনক ও উদ্বেগের। এতে ব্যবসায়ী সমাজে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক কর্র্মকান্ডে বাধার সৃষ্টি করবে। এ জন্য সরকারের উচিত হবে, প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।

ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ

এদিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার ষড়যন্ত্রের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ গতকালও অব্যাহত ছিল। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের খবর- ঢাকা : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার পুত্রকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভাটারা এলাকাবাসী। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ভাটারা থানার সামনে প্রগতি সরণিতে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে ভাটারা এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সংগঠনের আট শতাধিক লোক ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার পরিকল্পনাকারী পটিয়ার সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এবং তার ছেলে নাজমুল করিম ওরফে শারুন চৌধুরীকে গ্রেফতারসহ হত্যার চেষ্টায় জড়িত সাইফুল ইসলাম সাদের ফাঁসির দাবি জানান। এ সময় বক্তারা বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু ভাটারাবাসীর কল্যাণে নয়, সারা দেশের কল্যাণে কাজ করছে। দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের সেরা উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। তাই এমন একজন ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

মানববন্ধনে ভাটারা এলাকার বাসিন্দা মো. মিলন হোসেন বলেন, ‘ভাটারা এলাকা ছিল আলোর নিচে অন্ধকার। সেই জায়গা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের জীবনমান উন্নয়ন করেছে। লুঙ্গি থেকে প্যান্ট পরা শিখিয়েছে। সেই বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি ও আমাদের ভাই সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টাকারী হুইপ সামশুল হক ও তার ছেলে শারুনকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি আমরা ভাটারা এলাকাবাসী।’

জাহিদুর রহমান জনি বলেন, ‘সায়েম সোবহান আনভীর শুধু বসুন্ধরা গ্রুপের রত্ন নন, তিনি সারা দেশের রত্ন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই, তাঁকে রক্ষা করে শারুনসহ তার সঙ্গে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।’ ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন খন্দকার বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোক ভাড়াকারী হুইপ ও তার ছেলে শারুনের শাস্তি কামনা করছি ভাটারাবাসী।’ মানববন্ধন শেষে প্রগতি সরণি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বারিধারা ফায়ার স্টেশনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় ‘বিচার চাই, বিচার চাই, শারুনের বিচার চাই’, ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, শারুনের ফাঁসি চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। চট্টগ্রাম : বসুন্ধরার এমডিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের মানববন্ধন থেকে পেশাজীবী জনতার সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে একাধিকবার হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন। এতে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি ও পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যা চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা বরদাস্ত করবে না। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানাব।’ দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর আঙ্গিকে পেশজীবী-জনতার সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার চেষ্টা মূলত দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা শিল্পগ্রুপগুলোর বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র। প্রকারান্তরে তা রাষ্ট্রশক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল। গণমাধ্যমের বৃহৎ প্রণোদনাকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বসুন্ধরার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানানো দেশের সব গণমাধ্যমকর্মীর দায়িত্ব। তিনি করোনাকালীন সাংবাদিক প্রণোদনা, হকারসহ গণমাধ্যমের প্রতিটি ক্ষেত্রে ও সামাজিক-মানবিক খাতে বসুন্ধরার এমডির সহায়তার বিষয়টি তুলে ধরেন। রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি অকাল প্রয়াত চট্টগ্রামের আলোকচিত্র সাংবাদিক দিদারুল আলমের পরিবারকে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। এখানেই শেষ নয়, করোনায় প্রয়াত সাংবাদিকদের পরিবারকেও অনুদান দিয়েছে এ শিল্পগ্রুপ। পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানবিকতার সহযোগিতার হাতও বাড়িয়েছে দেশজুড়ে। সমাবেশ ও মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলানিউজের ডেপুটি এডিটর তপন চক্রবর্তী, কালের কণ্ঠের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, দ্য ডেইলি সানের ব্যুরো চিফ নূর উদ্দিন আলমগীর মিলন, কালের কণ্ঠের ডেপুটি চিফ শিমুল নজরুল, নিউজটোয়েন্টিফোরের সিনিয়র রিপোর্টার শেখ জায়েদ, সিইউজের প্রতিনিধি ইউনিটের চিফ সাইদুল ইসলাম ও ডেপুটি চিফ সোহেল সরওয়ার।

বক্তারা বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে এ হামলার চক্রান্তকারীরা যত ক্ষমতাধর এবং যে দলেরই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়া ৭০ হাজার পরিবারের প্রায় ৫ লাখ মানুষের ভাগ্য এ শিল্পগ্রুপের ভাগ্যের সঙ্গে জড়িত। এ গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র, মামলা, এমনকি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে, দেশবিরোধী একটি চক্র বসুন্ধরা শিল্পগ্রুপের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা এদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চায়। লাখো মানুষের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পথ রুদ্ধ করতে চায়। সিলেট : দেশের সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সিলেটের ব্যবসায়ী সমাজে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন, এ ঘটনার পেছনে শক্তিশালী কোনো অপরাধী চক্র জড়িত। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্তের পাশাপাশি দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীর এমডিকে হত্যা করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে ওই চক্রটি। তাই এখনই এই ষড়যন্ত্রকারী অপরাধী চক্রকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা উচিত। গ্রেফতার সাইফুল ইসলাম সাদকে জিজ্ঞাসাবাদ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টার পেছনের সব কুশীলবকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা। বসুন্ধরা গ্রুপ ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এ টি এম শোয়েব বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের। এই শিল্পগ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে হত্যার চেষ্টা খুবই দুঃখজনক। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ‘দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে হলে সবার আগে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে যারা হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে তারা নিশ্চয়ই অনেক শক্তিশালী। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে হয়তো বেকায়দায় ফেলতে চাইছে। তাই এদের মুখোশ উন্মোচন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’ এফবিসিসিআইর পরিচালক তাহমিন আহমদ বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ দেশে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান করেছে। দেশের অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ রকম বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীর এমডিকে হত্যার ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই ছোট করে দেখা যাবে না। এটি একটি অশুভ সংকেত। এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে মুখোশ উন্মোচন করা উচিত। কারণ যারা ব্যবসায়ীদের শত্রু, তারা দেশের অর্থনীতিরও শত্রু।’

সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায় বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে হত্যার ষড়যন্ত্রে সারা দেশের ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তদন্তসাপেক্ষে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত।’

রাজশাহী : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে গতকাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। বেলা ১১টার দিকে নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশও হয়। কর্মসূচিতে ব্যবসায়ী নেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জুয়েল রানা, নজরুল ইসলাম বাবু, বুলবুল হোসেন, হালিম উদ্দিন, হারুন অর রশিদ, মামুন-অর-রশিদ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় যখন দেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে, তখন একটি মহল দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের এমডি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। তাঁকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারীরা যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। না হলে ব্যবসায়ী মহল থেকেই ওই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে। কারণ, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতার না হলে ভবিষ্যতে এমন হত্যাচেষ্টা আবারও ঘটতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে বক্তারা অবিলম্বে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান। সাভার : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে শিল্পাঞ্চল সাভারে প্রতিবাদ সভা হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে সিটি সেন্টারের সামনে গতকাল বেলা ১১টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সাভার প্রেস ক্লাবের সদস্য এবং নিউজ টোয়েন্টিফোর ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদার সভাপতিত্বে এ কর্মসূচি থেকে বসুন্ধরার এমডিকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি তাঁর নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। স্থানীয় সাংবাদিক ও তৃতীয় মাত্রা পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি সোহেল রানার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সাভার প্রেস ক্লাবের সদস্য ও ভোরের পাতা পত্রিকার সাংবাদিক তোফায়েল হোসেন তোফা সানি, সাংবাদিক ওমর ফারুক, রাজীব মাহমুদ, রওশন আলী, রিপন মিয়া, আহমেদ জীবন প্রমুখ। সাংবাদিক তোফা সানি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ী ও জনবান্ধব। তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর নেপথ্যে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে শারুনসহ যারা নীলনকশা করছেন তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই। তাদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হোক। অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।’ মানববন্ধ?নে একাত্মতা প্রকাশ ক?রে সাভারের ব্যবসায়ী নেতা নুর হোসেন বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলাম সাদের বিচার এবং এ হত্যাচেষ্টার নেপথ্যের কুশীলব হুইপ সামশুল হক ও তার ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনকে অবিলম্বে^ গ্রেফতারের দাবি জানাই।’

রংপুর : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে একাধিকবার হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে রংপুরে ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ মানববন্ধন করেছেন। গতকাল দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে ১ হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে শারুন চৌধুরীকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছে তারা সমাজের দুষ্ট ক্ষত। তাদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এ সময় বক্তব্য রাখেন মহানগর দোকান মালিক সমিতির নেতা আবুল হাসান চঞ্চল, ঠিকাদার সমিতির নেতা সৈয়দ গাফফারুল ইসলাম অতুল, বিশিষ্ট কনস্ট্রাকশন ব্যবসায়ী তাহেরুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক হারুন উর রশিদ স্বাধীনসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। বক্তারা বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার চেষ্টা দেশবাসী কোনোভাবেই মেনে নেবে না। হত্যার নির্দেশদাতা হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে শারুন চৌধুরীকে গ্রেফতারের দাবি জানান বক্তারা। মানববন্ধনে আসা রংপুর নগরীর সাতমাথা থেকে গৃহবধূ নূর নাহার, ফজিলা বেগম ও নাজমা বেগমদের চোখেমুখে ক্ষোভ দেখা গেল।

ময়মনসিংহ : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজ। গতকাল বেলা ১১টায় উপজেলার সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের মূল ফটকের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন হয়। পরে প্রতিবাদ সভা এবং বিক্ষোভ মিছিল হয়।

প্রেস ক্লাব নান্দাইলের সভাপতি মো. হান্নান মাহমুদ বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ হচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী। তাদের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবন-জীবিকা পরিচালিত হচ্ছে। এ কারণে তাদের সুনামে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি গোষ্ঠী বারবার তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

নান্দাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক বাবুল বলেন, ‘আমরা শুনেছি বসুন্ধরার এমডিকে প্রথমে দুধে বিষ মিশিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর হামলার প্রস্তুতি নেয় একটি চক্র। আমরা হত্যার পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

ব্যবসায়ী অরবিন্দ পাল অখিল বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী। আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের আইকন হচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর। পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাঁকে হুইপ সামশুল হক ও তার ছেলে শারুন যে হত্যার পরিকল্পনা করছেন আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টা এবং এর ইন্ধনদাতাদের গ্রেফতার দাবিতে গতকাল প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়। বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের এ কর্মসূচি থেকে অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পাঠাগারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত। আবরণী আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান পারভেজের সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর, তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের উপদেষ্টা দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সদর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটু, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন রানা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি সুজন দত্ত, যুব মৈত্রীর সদস্য সচিব ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, ড্রিম ফর ডিজঅ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. হেদায়েতুল আজিজ মুন্না, সাংবাদিক মো. মোশাররফ হোসেন বেলাল, মেহেদী নূর পরশ, আজিজুল ইসলাম সঞ্চয়, আবুল হাসনাত রাফি, চয়ন বিশ্বাস, মো. মাইনুদ্দিন রুবেল, নিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি, মাজহারুল করিম অভি, মো. মামুন, আবদুল্লাহ আল নাঈম, আশীষ সাহা, পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য উত্তম মল্লিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু। সংহতি প্রকাশ করেন জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য, জেলা হিন্দু বিবাহ রেজিস্টার্ড কল্যাণ সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল কুমার চক্রবর্তী, আজকালের খবর প্রতিনিধি মো. মোজাম্মেল হোসেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মো. শাহাদাৎ হোসেন, আরটিভির প্রতিনিধি মো. আজিজুর রহমান পায়েল। সমাবেশ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবনের সামনে মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন থেকে হত্যাচেষ্টাকারী ও ইন্ধনদাতাদের বিচার দাবি করা হয়। পটুয়াখালী : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে শারুনকে গ্রেফতারের দাবিতে পটুয়াখালীতে প্রতিবাদ সভা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় সাংবাদিকদের উদ্যোগে পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের ড. আতহার উদ্দিন মিলনায়তনে এ প্রতিবাদ সভা হয়। পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জি। এতে অংশ নেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পটুয়াখালীর সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক অতুল চন্দ্র দাস, সাবেক সভাপতি কাজী সামশুর রহমান ইকবাল, সাবেক সভাপতি কাজল বরণ দাস, পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আবদুস সালাম আরিফ, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের পটুয়াখালী প্রতিনিধি সঞ্জয় কুমার দাস লিটু, বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি মো. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া প্রতিবাদ সভায় পটুয়াখালীতে কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে বক্তারা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। যার পরিকল্পনাকারী হুইপ সামশুল হক। শুধু হুইপ কেন, তার ওপরেও শক্তিশালী কোনো ব্যক্তি অপরাধী হলে তাকেও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমরা সাংবাদিকরা বসুন্ধরার এমডির পাশে আছি। প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী সামশুর রহমান ইকবাল বলেন, হত্যাচেষ্টাকারী যতই শক্তিশালী হোক তাকে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজল বরণ দাস বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে হত্যাচেষ্টার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা জড়িতদের বিচার চাই। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পটুয়াখালী জেলার সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অতুল চন্দ্র দাস একাত্মতা প্রকাশ করে হত্যাচেষ্টা ও এর পরিকল্পনাকারীর শাস্তির দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। সাতক্ষীরা : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল শহরের সম্মিলিত সাংবাদিক ঐক্য সাতক্ষীরার আয়োজনে এ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়। সংগঠনটির হলরুমে এর আহ্বায়ক সুভাষ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আনিচুর রহিম, দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মিজানুর রহমান, দৈনিক কালের কণ্ঠের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোশারাফ হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার নির্দেশদাতা হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে শারুন চৌধুরীকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী। বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হুইপ সামশুল হক এবং তার ছেলে শারুন কর্তৃক হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে গতকাল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঞ্ছারামপুর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সনেটের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উজানচর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজী জাদিদ আল রহমান জনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম শহিদুল হক বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান উজ্জ্বল, পৌর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মাহমূদুল হাসান ভূইয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি নাছির উদ্দিন নাছিম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন টিপু, উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, হুইপ সামশুল হকের অত্যাচারে পটিয়ার বীর বাঙালি বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঘরছাড়া। হুইপ সামশুল হক ও তার পুত্র শারুনের যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় বাঞ্ছারামপুরবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে এবং তা প্রতিহত করতে সদা প্রস্তুত। বসুন্ধরার কর্ণধার সায়েম সোবহান আনভীরের মতো মানুষ ঘরে ঘরে হয় না। তিনি সারা বাংলার অহংকার, আমাদের প্রাণ। তাঁর কারণে সারা দেশের হাজার হাজার যুবক কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। পিতা-মাতা ভাই-বোনদের নিয়ে সংসার চালাচ্ছে। জামালপুর : বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে জামালপুরে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় জামালপুর জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বসুন্ধরা সিমেন্টের জামালপুরের পরিবেশক তারেক আহমেদ খান, এসএ টিভির সাংবাদিক ফজলে এলাহী মাকাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের শুভ্র মেহেদী, নিউজ টোয়েন্টিফোরের তানভীর আজাদ মামুন প্রমুখ। এ সময় বক্তারা দেশের গণমাধ্যম ও শিল্প খাতে বসুন্ধরা গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে অবিলম্বে সায়েম সোবহান আনভীরের হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ০৮ নভেম্বর  ২০২১ /এমএম