Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: পৃথিবীর ৭০০ কোটি মানুষের সবার হাতে ভ্যাক্সিন পৌঁছতে কম করে হলেও ৩-৪ বছর লাগবে। তাই কোথাও অনন্তকাল লকডাউন রাখা সম্ভব নয়, সে যত উন্নত রাষ্ট্রই হোক না কেন। তাহলে আমরা কি এভাবেই মরব? সহজ ভাষায় বলতে গেলে, হ্যাঁ এবং এটা একদমই প্রাকৃতিক ব্যাপার। যুগে যুগে এমন বিবর্তন হয়েছে।

একযুগে ডাইনোসর ছিল, কিন্তু প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারেনি বলে তারা আজ নেই। অথচ সেই জুরাসিক যুগের ‘তেলাপোকা’ এখনো টিকে আছে। কারণ সে নিজেকে বিবর্তিত করে, পরিবর্তন করে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পেরেছে।

ম্যামথও ছিল তখন, হয়তো ম্যামথ তার রূপ পরিবর্তন করেই বর্তমানের হাতি হয়েছে। এসব বলার অর্থ-আমাদেরও প্রকৃতির উপাদানের সঙ্গে বিবর্তিত হতে হবে। লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। আমাদের নিজেদেরও পরিবর্তিত হতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই টিকে থাকা সম্ভব।

অভ্যাস : বাজে অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। কথায় কথায় মুখে আঙুল দেওয়া, কলমের মুখ কামড়ানো, আঙুল জিহ্বায় লাগিয়ে কাগজ ওল্টানো, থুতু দিয়ে টাকা গোনা-যুগ যুগ ধরে চলে আসা এসব বাজে অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সেই মঙ্গে মাস্ক পরতে হবে এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ২০০৩ সালে জাপানে সার্স ভাইরাসের মহামারির পর তাদের মধ্যে এই অভ্যাসগুলো গড়ে উঠেছিল, যা আজ খুব ভালো কাজ করছে ইমিউনিটি বাড়াতে। ধূমপান যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে।

পরিবেশ : আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা এমন একটি পরিবেশে আছি। নয়তো এই ঘনবসতির দেশ কবেই শেষ হয়ে যেত। এখানে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা খুব ভালো কাজ করছে। আর্দ্রতা বেশি থাকা মানে বাতাসে ধুলাবালি কম ওড়া। শীতে আর্দ্রতা কম থাকে, চারদিক শুষ্ক থাকে বলে বেশি ধুলা ওড়ে। এজন্য শীতপ্রধান দেশে করোনাভাইরাস হানা দিচ্ছে বেশি। এসি রুমের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। তাই এসি এড়িয়ে চলতে হবে।

ইমিউনিটি : এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হার্ড ইমিউনিটির বিকল্প নেই। আমাদের ইমিউনিটি বাড়াতেই হবে। সেটা কিভাবে? শারীরিক ও মানসিকভাবে।

শারীরিক : নিয়মমাফিক ঘুমাতে হবে, রাত জাগা খুব খারাপ শরীর ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে প্রায় ১৫-৩০ মিনিট। মাসল অ্যাক্টিভিটি বাড়াতে হবে। প্রায়ই রোদে ঘুরতে হবে ছাদে। রোদ দরকার, কারণ ভিটামিন ডি লাগবেই লাগবে।

খাবার : ভাতে কোনো পুষ্টি নেই, উল্টো অতিরিক্ত ভাত খেলে আপনি মোটা হবেন। ভাত কম খেয়ে তরকারি এবং প্রোটিনজাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি খেতে হবে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে। শাকসবজি খেতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে বাজারে যেতে হবে। ভিটামিন সি বা টক ফল-কমলা, লেবু খেতে হবে। এছাড়াও সিজনাল ফল খেতে হবে।

প্রতিদিন সকালে লেবু সিদ্ধ গরম পানি খান। ফাস্ট ফুড সম্পূর্ণ বন্ধ, চিনি ও লবণ খাওয়াও কমাতে হবে। আমাদের দেশের মসলাগুলো দারুণ কাজের। লবঙ্গ, জিরা, হলুদ, দারুচিনি এগুলো দারুণভাবে ইমিউনিটি বাড়ায়। দুধে হলুদ মিশিয়ে খাবেন, হলুদ অনেক কাজের। চায়ে মসলা মিশিয়ে খাবেন। গ্রিন টি (অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট) সবচেয়ে ভালো। কালিজিরা কার্যকরী একটা খাদ্য। প্রতিদিন সকালে উঠে এক চামচ মধুর সঙ্গে কালিজিরা খুব ভালো একটা কম্বিনেশন। এছাড়া কালিজিরা ভর্তা/ভাজি খাবারের সঙ্গেও খেতে পারেন।

মানসিক : ইমিউন বৃদ্ধির জন্য হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখা জরুরি। তাই মনকে শান্ত রাখতে হবে, হাসিখুশি থাকতে হবে। ধর্মীয় প্রার্থনায় মন দিন, মন সুন্দর থাকবে।

সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। (সূত্র : ফেসবুক)

মীরজাদী সেব্রীনা ফ্লোরা : রোগতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৩ এপ্রিল ২০২১ /এমএম