Menu

জয়দীপ সান্যাল, ক্যালগেরি,  আলবার্টা, কানাডা :: বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের মহান শহীদ, তাঁদের সহযোদ্ধা এবং সুদূর কানাডা থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের লড়াকু কারিগর, সালাম ভাই ও প্রয়াত রফিক ভাইকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। আমরা কম বেশী সবাই জানি যে, ২০১২ সালের জুন মাসে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছিল। পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংকের উপদেষ্টা লুই মোরেনো ওক্যাম্পোর (Luis Moreno Ocampo) নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি নিয়োগ করে এই দাতা সংস্থা। তাঁর জোর সুপারিশে প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী পদত্যাগে বাধ্য হন এবং
যোগাযোগ সচিবকে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলে পাঠানো হয় (পরে নির্দোষ প্রমাণ হলে মুক্তি পান)। পদ্মা সেতুর পরবর্তী পরিক্রমাও প্রায় সবারই জানা। কিন্তু আমরা কতটুকু জানি পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুনীতির প্রধান তদন্তকারী জনাব ওক্যাম্পো সম্পর্কে ? তাঁর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুঁজতে গিয়ে লেখাটি দীর্ঘ হয়ে গেল। এতে বিরক্তির কারণ হয়ে থাকলে সহৃদয় পাঠক/ পাঠিকা ক্ষমা করবেন আশা করি ।

বর্ণাঢ্য কেরিয়ারের আর্জেন্টাইন আইনবিদ লুই ওক্যাম্পো বিশ্বব্যাংকের উপদেষ্টা নিযুক্ত হবার সময় নিউইয়র্কের আইন সংস্থা, Getnick & Getnick-এ কর্মরত ছিলেন। এক সময় তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের কেন্দ্রীয় বোর্ড মেম্বার ছিলেন । ২০০৩ সালের জুন মাসে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (International Criminal Court, আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর নিযুক্ত হন। জুন-২০১২ পর্যন্ত তিনি নয় বছর এক টানা আইসিসির এই পদে নিযুক্ত ছিলেন ।

আন্তর্জাতিক আদালতে বিভিন্ন দেশের অপরাধ সংক্রান্ত প্রায় ২৫টি অভিযোগ দায়ের হয়ে থাকলেও মাত্র পাঁচটি অভিযোগ বিচারের সম্মুখীন করা হয় যার একটির রায়ে নয় জন দণ্ড প্রাপ্ত হয়। আইসিসির অদক্ষতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় সংক্ষুদ্ধ পক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো এর প্রসিকিউশন ও দাপ্তরিক অন্যান্য কর্মকাণ্ডের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতে থাকে। ফ্রান্সের এক অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট মিডিয়াপার্ট (Mediapart) চল্লিশ হাজারের বেশি নথি উদ্ধার করে। সেগুলো জার্মান সাপ্তাহিকী DER SPIEGEL এবং European Investigative Collaboration (EIC) network-এর সাংবাদিকেরা সরজমিনে পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে ২০১৭ সালে জনাব ওক্যাম্পোর বিরুদ্ধে মারাত্মক সব অভিযোগ আনে যার সামান্য কিছু অংশ এখানে উল্লেখ করছি ।

• আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ত্যাগ করার পর, সুইজারল্যান্ড থেকে আগস্ট-২০১২তে জনাব ওক্যাম্পোর নেদারল্যান্ডের Abn Amro ব্যাংকে ৫০,০০০ মার্কিন ডলার জমা হয়। প্রেরকঃ Tain Bay Corporation, পানামা।

• একই প্রেরক কোম্পানি জনাব ওক্যাম্পোর নেদারল্যান্ডের ব্যাংক হিসাবে সুইজারল্যান্ড চ্যানেলেই পরবর্তী কয়েক মাসে অন্ততঃ ১৪০,০০০ মার্কিন ডলার জমা করে।

• European Investigative Collaborations (EIC) প্রকাশ করে যে, জনাব ওক্যাম্পো নিজেই পানামার Tain Bay Corporation-এর মালিক । এছাড়াও অনুসন্ধানে ওকাম্পো ও তার স্ত্রী, এল্ভিরা বুলিগিনের (Elvira Bulygin) মালিকানায় আরও দুটি কোম্পানি পাওয়া যায়। (১) ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে (বি ভি আই) Yemana Trading এবং (২) ক্যারিবীয় সাগরের উপকূলে অবস্থিত বেলিজে প্রতিষ্ঠিত Lucia Enterprises। প্রধান প্রসিকিউটর থাকাকালীন এই কোম্পানিগুলোতে যুক্ত থাকলেও জনাব ওক্যাম্পো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা জাতি সংঘকে অবহিত করেন নাই। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ পদের স্বচ্ছতার চুক্তি ও শপথ ভঙ্গের অভিযোগ স্পষ্ট হতে
থাকে।

কথিত ট্যাক্স-স্বর্গ পানামা, বি ভি আই এবং বেলিজে বিনিয়োগকারী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহক ও তাদের লেনদেনের তথ্য আইন করে গোপন রাখা হয়, অনেকটা সুইস ব্যাঙ্কের মত । সেখানে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অফশোর কোম্পানি হিসাবে পরিচিত, যাদের বিনিয়োগের লভ্যাংশও কর মুক্ত। ২০০৯ সালের শেষে বি ভি আইতে নতুন আইনে বিনিয়োগকারী কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের গোপনীয়তার বিধান শিথিল করা হয় ।

২০১০ সালের ১লা জানুয়ারিতেই জনাব ওক্যাম্পো তাঁর পার্সোনাল ব্যাংকারকে পারিবারিক কোম্পানি Yemana Trading বি ভি আই থেকে পানামায় স্থানান্তর করতে বলেন। অথচ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ান অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় জনাব ওক্যাম্পো ট্যাক্স-স্বর্গের কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গোপন কারবারের বিরুদ্ধে ছিলেন যথেষ্ট সোচ্চার। এ কি সজ্ঞানে আর্থিক প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া?

পরবর্তীতে DER SPIEGEL এবং EIC-র প্রথিতযশা সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসতে থাকে। আইসিসিতে প্রধান প্রসিকিউটর থাকাকালীন বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক, ট্রাস্টি বোর্ড (ফাউন্ডেশন), লবিস্ট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে তাঁর অবৈধ যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যায় । ২০১৭ সালের অনুসন্ধানী রিপোর্টগুলোতে আরও অভিযোগ করা হয় আইসিসি থেকে বিদায় নেবার পরেও জনাব ওক্যাম্পো তাঁর সময়ের স্টাফদের মাধ্যমে আইসিসিতে বিচারাধীন তাঁর ক্লায়েন্টদের স্বার্থ উদ্ধার করেছেন। এগুলো আইসিসির প্রসিকিউশন প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা ও গ্রহণ যোগ্যতাকে চরম প্রশ্নের সম্মুখীন করে । আজ আমি একটি মাত্র প্রতিবেদনের উল্লেখ করছি, যা শিউরে ওঠার মত ।

গাদ্দাফী উত্তর লিবিয়ায় বিদ্রোহী সেনা ও জেহাদি মিলিশিয়াদের কোয়ালিশন, Libya Dawn-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) প্রধান ছিলেন জেনারেল (পরবর্তীতে ফিল্ড মার্শাল) খলিফা বেলকাসিম হাফতার। জেঃ হাফতারের সহায়তায় লিবিয়ার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, হাসান তাতানাকি লিবিয়ার তেল ক্ষেত্র নিজেরদখলে রাখতেন । গৃহযুদ্ধের শুরুতে জেঃ হাফতারের পক্ষে এক কমান্ডার ঘোষণা দেন, যেসব বিদ্রোহী সেনা ও  অফিসার তাদের বাহিনীতে যোগ দেবেননা তাদের জবাই করা হবে এবং তাদের সামনেই স্ত্রীদের ধর্ষণ করা হবে। লিবিয়ায় সংঘটিত মানবতা বিরোধী এমন সব অপরাধ আইসিসির তদন্তাধীন ছিল। মুলতঃ যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগ থেকে জেনারেল হাফতারকে মুক্ত করার জন্য তাতানাকি Justice First নামে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করেন। ২০১৫ সালে জনাব ওক্যাম্পো এই প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা নিযুক্ত হন।

এবাবদ ত্রিশ লক্ষ মার্কিন ডলার এবং দৈনিক পাঁচ হাজার ডলার বেতনে তিন বছরের চুক্তি হয় তাঁর সাথে। ফাউন্ডেশনের আড়ালে জনাব ওক্যাম্পো আইসিসি প্রসিকিউশনে তাঁর আগের সহকর্মীদের অবৈধ ভাবে প্রভাবিত করতে থাকেন বলে অভিযোগ আসে। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে এ ব্যাপারে প্রায় ৭৫,০০০ ডলার লেনদেনের খোঁজ মেলে।

২০০৯ সালে তাতানাকি গাদ্দাফির ছেলে, সাইফ আল-ইসলামের ইকো ট্যুরিজম প্রোজেক্টে সত্তর কোটি ডলার বিনিয়োগ করেন । গাদ্দাফি পন্থি তাতানাকির বেতনভোগী জনাব ওক্যাম্পো মাত্র চার বছর আগে আইসিসির প্রসিকিউশনে কিন্তু গাদ্দাফি, সাইফ আল-ইসলাম এবং লিবিয়ার ইন্টেলিজেন্স প্রধান, আব্দুল্লাহ সেনুসিকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য বিধি ও বিধির বাইরে সক্রিয় ছিলেন। অর্থের বিনিময়ে জনাব ওক্যাম্পোর এটা কি ধরনের দ্বিচারিতা?

২০১২ সালের অগাস্ট থেকে যে কয়েক মাস পানামার অফশোর কোম্পানি থেকে তাঁর ব্যাংক একাউন্টে অবৈধ অর্থ আসছিলো তখন কিন্তু ওক্যাম্পো্ সাহেব পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তদন্তে বিশ্বব্যাংকের দলপতি ছিলেন ।পদ্মা সেতু বিরোধী জাতীয়/ আন্তর্জাতিক চক্রের অর্থ যে তাঁর অফশোর প্রতিষ্ঠানে জমা পরেনি তাই বা কে
জানে?

২০১২ সালের অক্টোবর থেকে যতবার ঢাকায় এসেছেন টেলিভিশন চ্যানেল গুলোতে লুই ওক্যাম্পোর রণ হুংকার শোনা গেছে । তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রীকে অপসারণ এবং যোগাযোগ সচিবকে সাময়িক বরখাস্ত
করে জেলে পাঠানোর পরেও তিনি বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান ও বাংলাদেশ সরকারের
অর্থ উপদেষ্টা, ডঃ মশিউর রহমানের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেছেন ।

আইসিসি’র দীর্ঘ দিনের আন্তর্জাতিক বিচারক, জার্মান আইন বিশেষজ্ঞ হ্যান্স পিটার জনাব ওক্যাম্পো্ সম্বন্ধে সম্ভবতঃ যথার্থই বলেছেন, Ocampo ran his department "like an Argentine land baron." যার বাংলানুবাদ করলে দাঁড়ায়, ওক্যাম্পো নিজের অফিস চালাতেন আর্জেন্টিনার জমিদারের মত ।

লুই ওক্যাম্পোর কিছু কুকীর্তি প্রথম আলো সহ বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকায় ২০১৭ সালের ৬ই অক্টোবর
প্রকাশিত হয়। এই নিবন্ধের শেষে তথ্য সূত্র হিসাবে কিছু ওয়েব সাইটের লিঙ্ক দেওয়া হল। এসব লিঙ্কের
পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ও আদালতের প্রকাশিত ডকুমেন্ট, ইমেইল ও ব্যাংক লেনদেন দেখলে পাঠক আরও চমকিত
হবেন ।

এখন সময় এসেছে DER SPIEGEL এবং EIC-র সহায়তা নিয়ে লুই ওক্যাম্পোর তিন অফশোর কোম্পানি ও সকল ব্যাংক হিসাব পুঙ্খানু পুঙ্খ তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া। এতে পদ্মা সেতু বিরোধী বা অন্য কোন স্বার্থান্বেষী মহলের অর্থ জমা হয়ে ছিল কিনা তা পরিস্কার হতে পারে। সে রকম কিছু হয়ে থাকলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি/ প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ ও বিচারের আওতায় আনা জাতির স্বার্থে জরুরী প্রয়োজন।এ বছর ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশ ও জাতি অনেকটা পরিণত হয়েছে । ধীর গতিতে হলেও নতুন প্রজন্মের জাগরণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ক্রম অগ্রসরমান । দেশি বিদেশী লবির লাগাতার বিরোধিতা, লম্ফ ঝম্ফ কোন কাজে আসেনি। এদের অভিযোগের তীর ছিল বাংলাদেশে প্রচলিত মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীর বিচার ব্যবস্থার দিকে, যদিও ট্রাইবুনালে সাজা প্রাপ্তদের সুপ্রীম কোর্টে্ আপীলের সুযোগ আছে। নীতিভ্রষ্ট লুই ওক্যাম্পোর সময় আন্তর্জাতিক আদালতের প্রসিকিউশনের ব্যাপারে কোন অভিযোগ কি এদের থেকে কখনও শুনেছেন?

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বব্যাপী সব দেশের দূর্নীতির তুলনামূলক চিত্র 'দূর্নীতি ধারণা সূচকের' মাধ্যমে প্রকাশ করে। সঙ্গত কারণে এই সংস্থার ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ান অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন জনাব ওক্যাম্পোর রিপোর্ট প্রশ্নাতীত নয়।

বিশ্বব্যাংক সহ অন্যান্য দাতা সংস্থা দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শর্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়ে থাকে এবং কনসালটেন্ট নিয়োগ করে। প্রশ্ন আসতেই পারে জনাব ওক্যাম্পো ছাড়া ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ও দাতা সংস্থার বাকি সবাই কি ধোয়া তুলশী পাতা? এছাড়াও রয়েছে সাড়া বিশ্বে বিভিন্ন নামে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা ট্রাস্টি বোর্ড আর ফাউন্ডেশন। সেখানেও আন্তর্জাতিক লবিং-এর নামে টেবিলেরনীচে জ্ঞাত-অজ্ঞাত অর্থ লেনদেনের সুযোগ থেকে যায় ।

দাতা গোষ্ঠীর সাহায্য ছাড়া পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর বাইরেও সামাজিক সূচক, প্রবৃদ্ধির হার, পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং সময় মত করোনা ভ্যাক্সিন যোগাড় সহ বেশ কিছু অর্জনের গৌরব গাঁথা আছে বাংলাদেশের। বিদ্যমান স্থিতিশীলতা, বিদ্যুৎ/ গ্যাসের ক্রম বিকাশ এবং মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের সক্ষমতা প্রত্যক্ষ করে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইউরোপ ও তুরস্ক সহ আরও দেশ বেশ কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চলে পুঁজি বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে। কিন্তু প্রগতি বিরোধী দুর্নীতি, ব্যাংক লুট ও বিদেশে বিশাল অঙ্কের অর্থ পাচার আজ জাতি হিসাবে আমাদের প্রধানতম কলঙ্ক। এগুলো কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে উন্নয়নের মহা সড়কে মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নে এক্সিম ব্যাংক বা বাইরের কোন অর্থায়নের আর প্রয়োজন হবেনা ভবিষ্যতে । স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিন, এই ২৬শে মার্চে জাতি শুনতে চায় আর এক যুদ্ধের ঘোষণা, “এবারের সংগ্রাম দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম, এবার সংগ্রাম ব্যাংক ডাকাত আরজুদ্ধে চারকারীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম”। ঘোষণার দিন থেকে নয় মাসের মধ্যে দুর্নীতি আর অর্থ লুটের পালের গোদা সরকারী দল, অঙ্গ-সংগঠন বা দলের বাইরের রাজনীতিজীবি, ব্যাঙ্কার, ব্যবসায়ী , আমলা ও অন্যান্য পেশাজীবিদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন করতে হবে।

চুনোপুঁটিরা তখন ভয়েই সোজা হয়ে যাবে। তাহলেই ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন হবে সার্থক আর বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতক উদযাপন চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে । একই সাথে বাংলাদেশ অর্জন করবে বিশ্বের কাছে বিশেষ মর্যাদার ভাবমূর্তি। তখন বিদেশী কুশীলব, কুৎসা রটনাকারী বিদেশী মিডিয়া ও বিদেশে পালানো দেশী ব্যাংক ডাকাতদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ভাবে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়াও সহজ হয়ে যাবে।

স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকীর দুর্লভ সুযোগ এসেছে ২০২১-এ। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী এই ২৬শে মার্চেই ২য় মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করুন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে নিজ দলের অর্থ-দস্যুদের বিচার শুরু করার মধ্য দিয়ে। আপনার ধমনীতে আছে জাতির জনকের রক্ত-তেজ-সাহস। একুশের প্রাক্কালে ২য় মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতি প্রস্তুত, দল-মত-জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে । বাহান্নর ভাষা আন্দোলনে যেমন ১ম মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন হয়েছিল। পারবেন কি মাননীয়া এ কঠিন লড়াই শুরু করতে, ইস্পাত দৃঢ়তার সাথে? এবার ব্যর্থ হলে যে দেশি-বিদেশী কুলাঙ্গারদের বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতেই কাঁদতে থাকবে। শত্রু আজ চিহ্নিত, এরাই দেশের সার্বিক উন্নয়নের প্রধান প্রতিপক্ষ ।

তথ্য সুত্রঃ:
https://theblacksea.eu/stories/secrets-of-the-international-criminal-court-
revealed/?fbclid=IwAR0CFNLQjsW-TiQxUTYzu9nKwUEuLP2GoVu7tLaGUi8gK8zfCZJglfX-8YQ
https://eic.network/blog/court-documents
https://www.spiegel.de/consent-a-
?targetUrl=https%3A%2F%2Fwww.spiegel.de%2Finternational%2Fworld%2Focampo-affair-
the-former-icc-chief-s-dubious-libyan-ties-a-1171195.html%3Ffbclid%3DIwAR1cA-
326KrVMiDgkiMAlExJJTdKOr3HQ0QyUN7ojtPdSJu-j0UTH_csbaA
https://www.spiegel.de/consent-a-
?targetUrl=https%3A%2F%2Fwww.spiegel.de%2Finternational%2Fworld%2Fa-closer-look-at-luis-
moreno-ocampo-s-offshore-companies-a-
1171210.html%3Ffbclid%3DIwAR3YgR9FpTALXGQ5LD8HVHAl2TKPMRPnvkdZdYSLQpr7pB0BYIOKik0O6Z
4&ref=https%3A%2F%2Fl.facebook.com%2F
https://www.legal-tools.org/doc/895f3b/pdf/
www.legal-tools.org


Array