Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::  শৈশবে পরীক্ষায় যখন প্রশ্ন আসতো-সমস্যাটি সমাধানের জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করো; তখন আমরা নির্দ্বিধায় লিখে ফেলতাম, এ সমস্যার সমাধানে সামাজিক সচেতনতা নিশ্চিত করতে হবে বা সমস্যাটি নির্মূল করতে হলে সমাজিক সচেতনতা জোরদার করতে হবে। আসলে সামাজিক সচেতনতা বলতে আমরা কী বুঝি তা বাস্তবে ব্যাখ্যাসহ সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। সাধারণভাবে সামাজিক সচেতনতা বলতে আমরা বুঝি সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং সমাজে শান্তি আনতে যেসব বিষয় বাধা সৃষ্টি করে সেসবের বিরুদ্ধে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ।

সামাজিক সচেতনতা গড়ে ওঠার পেছনে যেসব বিষয় মুখ্য ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষা, সংস্কৃতি, সামাজিক পরিবেশ, নীতি-নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ। তবে ভাবনার বিষয় হলো আমাদের দেশের নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা কোনো সমস্যার সমাধানে কার্যকর ফলাফলকে বিবেচ্য বিষয় না ধরেই সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান করেন। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে করোনা মহামারি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিটি দেশেই এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

কিন্তু আসল ব্যাপার হলো দেশের জনগণের একটি বড় অংশ গ্রাম বা মফস্বল এলাকায় বসবাস করেন। তাদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা কম বা নেই বললেই চলে। তারা মনে করে থাকেন- ‘করোনা বলতে কিছুই নেই’, ‘এটা বড়লোকদের রোগ’, ‘আল্লাহ রোগ দিয়েছেন, আল্লাহই মানুষকে রক্ষা করবেন’ ইত্যাদি। এক কথায়, তাদের মনে এক ধরনের গোঁড়ামি কাজ করে। তাদের মধ্যে আত্মসচেতনতা কম। এমনকি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে যে সামাজিক অবস্থান সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন, তারা তাও অনুসরণ করছে না।

গ্রামে, মহল্লায়, পাড়ায়-পাড়ায় এখনও দেখা যাচ্ছে, মানুষ ঘনিষ্ঠভাবে বসে খোশগল্পে ও আড্ডায় মেতে উঠছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণই দেখা যায় না তাদের মধ্যে। এই অসচেতনতা দেশ ও জাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। সংকটের সময়ে জনগণ যদি সচেতন না হয় তাহলে দেশের মঙ্গল কোনোভাবেই সাধন হবে না।

সাম্প্রতিককালে আমাদের দেশের জনগণ জাতীয় ইস্যুগুলোতে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল, যেমন- দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও গুজবের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে। সেগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সবচেয়ে বড় পথ হচ্ছে আত্মসচেতনতা। নিজে সচেতন থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করা।

আমরা সভা, সেমিনার, আলোচনা, বিজ্ঞাপনে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলে থাকি। তবে কতটুকু সামাজিক সচেতনতা অর্জন হল, অর্জনের পথে বাধাগুলো কী সেগুলো শনাক্ত করতে হবে। সেসব বিচার-বিশ্লেষণ করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে আশা করা যায় সামাজিক সচেতনতা দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য সহায়ক হবে।

সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে অচিরেই দেশের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জিত হবে।

এসএম শাহাদাত হোসেন অনু : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/০৫ জানুয়ারি ২০২১ /এমএম

 

 


Array