Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: এখনই বিনিয়োগের সঠিক সময়। তিন থেকে ছয় মাসের মাসিক খরচ রেখে বাকি জমানো টাকা বিনিয়োগ করুন। কোথায় করবেন, সেটা ভেবে না পেলে প্রয়োজনে স্টক মার্কেটে করুন।

তার আগে প্রাথমিক কিছু পড়াশোনা করে নিতে পারেন। প্রথম কিছু মাস হয়তো লোকসান হবে, ব্যালান্স শিট খারাপ দেখাবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটাই আপনার তুরুপের তাস হবে। ২০০৮ সালে যারা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা হয়তো আমার সঙ্গে একমত হবেন। এ বিনিয়োগে ব্যক্তিগত স্বার্থের সঙ্গে জাতীয় স্বার্থও হাসিল হবে।

সিভি ঘষামাজা করুন : অর্থনৈতিকভাবে বিনিয়োগ না করতে চাইলে বা সামর্র্থ্য না থাকলে নিজের ওপর বিনিয়োগ করুন। ভাবুন, গত তিন চার মাস সময়গুলোকে কীভাবে কাজে লাগিয়েছেন, কী করতে পারতেন।

খুব স্বাভাবিকভাবেই জাতীয়, বৈশ্বিক চাহিদার কারণে অনেকেরই চাকরি থাকবে না। সেটার কোপ আপনার আমার সবার ওপর পড়তে পারে। তার জন্য নিজেকে ঢেলে সাজানোর সময় এখনই।

বাজারে এমনিতে কোয়ালিফাইড মানুষের অভাব, মহামারীর পর সেটা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। খুব কম্পিটিটিভ না হলে আমার আপনার ভাগ্যে একটা ভালো চাকরি নাও জুটতে পারে।

যদি চাকরি চলে যায়, সেজন্য প্রস্তুতি এখনই নিন। কীভাবে? কিছু ফ্রিল্যান্স কোর্স করেন, কিছু প্রোগ্রামিং সফটওয়্যার শিখে ফেলুন, ইংরেজিটা ভালো করে রপ্ত করুন, অফিস ম্যানেজমেন্ট, বিগ ডাটা, ঝঅচ ইত্যাদি শিখুন। আপনার বস যা যা পারে, আপনি তার থেকেও বেশি কিছু শিখে ফেলুন। চাকরি গেলে বসের যাবে, আপনার না; আর চাকরি না গেলেও প্রমোশন পাবেন।

Jack না হয়ে Master হোন : ‘Jack of everything but master of nothing’ না হয়ে ‘master of onething’ হোন। আশপাশে একটু তাকালেই দেখা যায়, আমি আপনি যা জানি; অনেকেই সেগুলো জানে। কিন্তু একটা বিষয়ে এক্সপার্ট পাওয়া কঠিন।

নিজেকে প্রশ্ন করুন- কোন বিষয়ে আপনি এক্সপার্ট? হোক সেটা সুন্দর করে কথা বলা, মানুষকে বোঝানোর ক্ষমতা, কৃষিকর্ম অথবা একজন খেলোয়াড়। তাই এখনই সময় নিজের শক্তির, পছন্দের জায়গাটাকে ঝালাই করে এক্সপার্ট বনে যাওয়ার।

নিজের একটি শখ বানান : আমার মনে হয়, দেশের অধিকাংশ মানুষেরই কোনো নির্দিষ্ট শখ নেই। জিজ্ঞেস করলে দেখা যাবে, এইটা ওইটা কত শখের নাম বলবে; কিন্তু আদৌ সেগুলো তার শখ নয়। তাই, একটা শখ তৈরি করে ফেলুন।

এতে দুটি লাভ আছে। এক, করোনাকাল ভালো কাটবে। দুই, এক গবেষণায় দেখা গেছে- যাদের কোনো একটি নির্দিষ্ট জিনিসের প্রতি শখ বা আকর্ষণ থাকে, তারা জীবনে সুখী হয়; আবার তাদের সফলতার সম্ভাবনাও বেশি। কে জানে, হয়তো আপনার শখের জিনিসটাই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে।

হতে পারে সেটা মানসিক, হতে পারে আর্থিকভাবে। যদি কিছুই না পারেন, বই পড়া শুরু করে দেন। সেটাও না করলে নতুন-পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে নতুন করে আবার পরিচিতি লাভ করুন। এর মাধ্যমে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে। মানসিক, ব্যক্তিগত এবং প্রফেশনাল ক্ষেত্রে তা খুবই কাজে আসবে।

মেডিটেশন বা ফোকাস শক্তি বাড়ান : আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত অথবা কর্মক্ষেত্রের অনেক স্বপ্নই স্বপ্ন থেকে যায় ফোকাস শক্তি কম থাকার কারণে।

আপনি হয়তো বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে চান অথবা ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শিখতে চান কিংবা মনের কোণে সুপ্ত বাসনা একটা বড় ব্যবসা করবেন- এসব কিছুই অঙ্কুরে বিনষ্ট হয় এ ফোকাস শক্তির কারণে।

সে কারণে মেডিটেশন করতে পারেন বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনাগুলো জমাট বাঁধার জন্য। But don’t dismiss meditation as a spiritual gimmick. মেডিটেশন শুধু আত্মিক বা ধর্মীয় কিছু বিষয় না; এটা খুবই শক্তিশালী মানসিক টুলস, যেটা ফোকাস লেভেল এবং আউটপুট বাড়াতে সাহায্য করে। দু-তিন মাস করে দেখেন, ফল অবশ্যই পাবেন।

এএনটি কমিয়ে ফেলুন : Automatic Negative Thought এএনটি বা স্বয়ংক্রিয় নেতিবাচক চিন্তাধারা হল, নিজের সম্পর্কে এলোমেলো নেতিবাচক চিন্তা, যা আপনার মনকে দিনে একাধিকবার অতিক্রম করে। এগুলো বাড়তি চাপ, সামাজিক উদ্বেগ, এমন কী হতাশাগ্রস্ত হতে ভূমিকা রাখে। মানুষকে শারীরিকভাবে দুর্বল করে দেয় এই এএনটি।

কোনো কিছু ‘এড়ানো’ এবং কিছুর ‘মুখোমুখি’ হওয়া হল দুটি কৌশল, যা আপনি এখনই অনুশীলন করতে পারেন। বর্তমান মুহূর্তে সম্পূর্ণরূপে অধিষ্ঠিত হওয়া বা মননশীলতার অনুশীলনে এএনটির জন্য কোনো স্থান রাখবেন না। বিপরীত কৌশলটিতে যখনই আপনার কোনো কিছুর ব্যাপারে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা রয়েছে- সময় নিন, বিরতি দিন; প্রশ্নটি নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। এর প্রবাহটি ভাঙতে এবং আবার দাবি করতে এটি ইতিবাচকভাবে পুনরায় ঘোষণা করুন।

Last not the least, একটা চ্যালেঞ্জ নিন। ছোট বা বড় যাই হোক। তা হতে পারে আগামী দুই মাসের করোনাকালে। এ ছোটখাটো চ্যালেঞ্জগুলোই একদিন অভ্যাসে পরিণত হতে হতে গড়ে দিতে পারে আপনাকে, সমাজকে।

সহযোগী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ

গুয়াংডং ইউনিভার্সিটি অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিকস

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০/এমএম


Array