Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের সমকালীন বৈশিষ্ট্য নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। পরিবর্তনশীল সমাজ ও অর্থনীতি কীভাবে মূল্যবোধ গঠনে ভূমিকা রাখছে- সন্ধানী দৃষ্টিতে তা ধরাও পড়ছে। বৈষয়িক চিন্তা মানুষের মৌলিক চেতনাকে ভারাক্রান্ত করছে বলে অনেকে সন্দেহ করছেন। এও সত্যি, প্রযুক্তির বিস্ফোরণ সভ্যতার বিবর্তনে গতি এনেছে। জীবন হয়েছে সহজ ও উপভোগ্য। উপরিকাঠামোর এ রূপান্তর ভাবনার জগৎটাকেও নাড়িয়ে দিয়েছে।

পাল্টে যেতে বসেছে প্রথাগত সম্পর্কের বুননগুলো। সমাজের চাহিদা, শিক্ষকের মান কিংবা রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গিও হয়তো এসব পরিবর্তনে নীরব অনুঘটকের কাজ করেছে। ঐতিহ্যের বিস্তীর্ণ পটভূমি পেরিয়ে গুরু-শিষ্যের পরম্পরা আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে কিনা, তাও কৌতূহলের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে সম্প্রতি যশস্বী লেখক ড. জাফর ইকবালের সঙ্গে মফস্বলের একঝাঁক শিক্ষার্থীর সপ্রাণ আলাপচারিতায় কিছু ভিন্ন স্বাদ, ভিন্ন দৃষ্টি, ভিন্ন কণ্ঠের আভাস মিলেছে। অবলীলায় উঠে এসেছে তারুণ্যের কিছু আনকোরা আবেগ, অকপট ভালোবাসা, নির্দোষ আকাক্সক্ষা, উৎকণ্ঠার ভ্রুকুটি কিংবা স্বপ্নকুঁড়ির উচ্ছ্বসিত ব্যঞ্জনা; যা সমকালীন প্রেক্ষাপটে যথেষ্টই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বৈচিত্র্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের পসরা সাজিয়েছিল বাগেরহাট জেলা প্রশাসন। স্মৃতিচারণ, আবৃত্তি, গান, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা অথবা বিতর্ক-সংস্কৃতির সব অঙ্গেই বিচরণ করেছে এ জনপদের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এমনই একটি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন ড. জাফর ইকবাল। ৩ ঘণ্টার বেশি সময়জুড়ে তিনি শিক্ষার্থীদের কথা শুনেছেন; কথা বলেছেন।

৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট- বয়স কিংবা স্তর নির্বিশেষে সবাই তার ছাত্র। অনুগত, উচ্ছ্বসিত, উত্তেজিত। একের পর এক প্রশ্ন এসেছে বাঁধভাঙা স্রোতের মতো। শিক্ষক উত্তর দিলেন সাবলীল দক্ষতায়, জটিল বিষয়গুলোকে সহজ করে তুললেন জাদুতুলির স্পর্শে। শিক্ষক যখন কথা বলেছেন- শ্রোতা তখন উদ্বেলিত, সম্মোহিত। আলাপনের ক্যানভাস ছিল বিস্তৃত, বৈচিত্র্যপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, মানুষ, প্রকৃতি, সাহিত্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, গবেষণা, বই, লেখক, এমনকি শিক্ষাব্যবস্থার খুঁটিনাটি- কোনোকিছুই বাদ পড়েনি। শিক্ষার মানে অধোগতি বা শিক্ষার্থীর নিস্পৃহতা- এমন অভিযোগগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে অসার মনে হয়েছে। সমকালীন পরিপ্রেক্ষিত, লক্ষ্য ও করণীয় সম্পর্কে শিশুরা যে সচেতন; তা প্রমাণ হয়েছে। তারা এমন জরুরি প্রশ্ন তুলেছে, এমন বিষয়ে কৌতূহল দেখিয়েছে যে, শিক্ষক নিজেই তাতে মুগ্ধ হয়েছেন, তাকে আপ্লুতই মনে হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের একজন প্রথমেই জানতে চায়- লেখার প্রেরণা তিনি কীভাবে পেয়েছেন। এত সুন্দরভাবে কথা বলা বা লেখার নিপুণ শিল্পটি তিনি কেমন করে রপ্ত করেছেন। ড. ইকবাল সবটুকু কৃতিত্ব দিয়েছেন তার বাবাকে, যিনি পরিবারের সবাইকে বই পড়তে উৎসাহী করতেন। ভোগ-বিলাসের প্রাচুর্য না থাকলেও তাদের বাড়িতে অনেক বইয়ের সংগ্রহ ছিল। বই পড়ে, গল্প শুনে, কবিতা মুখস্থ করতে করতে তিনি বড় হয়েছেন। পড়ার মাঝেই তিনি নতুন আস্বাদ পেয়েছেন, আনন্দ খুঁজে নিয়েছেন, হয়তো সেভাবেই তার গল্প বলার অভ্যাসটাও তৈরি হয়েছে।

ছেলেবেলার কথা স্মরণ করে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ যোগ করেন- রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ বা নজরুল সবাই তার মানসজগতে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। শুধু একজনের বই নয়, অনেক লেখককে পড়তে হবে। কেবল তার বই পড়লে সম্পূর্ণ হওয়া যাবে না। বই পড়ার সংস্কৃতি লালন করতে হবে। সেখান থেকেই জন্ম নেবে শুদ্ধ জীবনবোধ। এর মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা, জীবনের প্রতি মমত্ব, মানুষের প্রতি ভালোবাসা। জেগে উঠবে দেশপ্রেম। রোদ, বৃষ্টি, পাখি, পতঙ্গ, জীবজগৎ- সবখানেই ছড়িয়ে আছে অসীম আনন্দের উপকরণ, অফুরন্ত শিক্ষার উপাদান। সুন্দরবনের কথা বলতে গিয়ে তিনি উজ্জীবিত হয়ে পড়েন। সুন্দরবনের গাম্ভীর্য, অপার রহস্যময়তা, নিঃসীম নৈঃশব্দ, অনিন্দ্য সুন্দর অরণ্য আর বিপুল প্রকৃতি হয়তো তাকে বারবার কাছে টানে।

সাহিত্য না বিজ্ঞান- শিক্ষার কোন অঙ্গটি তার কাছে প্রিয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাহিত্য ও বিজ্ঞান তার কাছে ডাল-ভাতের মতো। দুটির গুরুত্বই তার কাছে সমান। একে অপরের পরিপূরক। জীবনের লক্ষ্য ঠিক করা প্রসঙ্গে তার ধারণা, সব শিশুরই হয়তো লক্ষ্য বদলে যায়। যেমন তার বেলায়ও ঘটেছে। প্রথমে তার মনে হয়েছিল জলদস্যু হওয়াটাই বুঝি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর।

পরে ভাবলেন- দমকলের চালক হবেন। এক সময় ঠিক করেছিলেন ডাক্তার। হয়ে গেলেন বিজ্ঞানী। তবে সবাইকে তিনি মনে মনে একটা স্বপ্ন লালন করতে বলেন। সে স্বপ্ন থাকবে মনের গভীরে, নিভৃতে। এ স্বপ্নের কোনো শেষ হয় না। শেষ যদি হয়েই যায়, তবে আবার নতুন স্বপ্নের শুরু। এভাবে ছোট স্বপ্ন থেকে বড় স্বপ্ন- জীবনভর তা চলতেই থাকে। জীবনও এগিয়ে চলে তার আপন ছন্দে, নিজস্ব গতিতে।

কীভাবে সফল হওয়া যায় বা ‘সফল হওয়া’ বলতে কী বোঝায়- এমন বিষয়ে প্রখ্যাত শিক্ষাবিদের মত হচ্ছে, আসলে উদ্দেশ্যই ঠিক করে কোনো কাজের সাফল্যের মানদণ্ড। কেউ জালিয়াতি করে সফল হয়, কেউ আবার নিজের টাকায় রাস্তার পাশে গাছ লাগিয়ে তাতে ফল ধরিয়ে সফল হন। কেউ পার্থিব ঐশ্বর্যের নিরিখে জীবনের সাফল্য-ব্যর্থতা বিচার করে, কেউবা মানুষকে সেবা করে, ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সাফল্য অনুভব করে।

খ্যাতির বিষয়ে তার ধারণা- এটা অনেকটা লটারির মতো। ঠিক যেন নোবেল পুরস্কার। অনেকে একসঙ্গে একই রকম কাজ করে, গবেষণা করে। একজন পুরস্কার পান। খ্যাতিটাও ঠিক তাই। এজন্য এর পেছনে দৌড়ানো ঠিক নয়। হলে ভালো, না হলে নাই। খ্যাতির বিড়ম্বনা অনেক। এ কথাও মনে রাখতে হবে। খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের মাঝে আদর্শ পুরুষ খোঁজা আর একটা ভ্রান্তি। আমাদের চারপাশে এমন অনেক আদর্শবান মানুষ আছে। তিনি আমাদের মা-বাবা, বিশ্বস্ত বন্ধ, এমন কী গৃহকর্মী- যে কেউ হতে পারেন। যাকে আমরা রোজ দেখি। খেয়াল করলে এদের মধ্যেই দুর্লভ ব্যক্তিত্বের উপাদান মিলে যাবে। ‘লিভিং লিজেন্ড’ খোঁজার দরকার নেই।

একজন শিক্ষার্থী তার কিছু ব্যক্তিগত অনুভূতি, পর্যবেক্ষণ ও আক্ষেপের কথা তুলে ধরে। জিপিএ-৫ তাকে আকর্ষণ করে না। সে বিজ্ঞানকে ধারণ করতে চায়, উদ্ভাবন করতে চায়, নতুন সৃষ্টিকে উদযাপন করতে চায়। ছোটদের কাছে তার এই সৃষ্টির উল্লাস ব্যক্ত করতে চায়, অভিজ্ঞতা হস্তান্তর করতে চায়। কিন্তু দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় উদ্ভাবনের অনুকূল পরিবেশ নেই। মূল্যায়নের প্রক্রিয়াগত কাঠামো নেই। ল্যাবে ব্যবহারিক পাঠের পর্যাপ্ত পরিসর নেই। অবকাঠামো দুর্বল। তাহলে সে বিজ্ঞানকে মস্তিষ্কে ধারণ করবে কীভাবে- এ প্রশ্ন ছুড়ে দেয় বিজ্ঞানের ছাত্রীটি। দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ বললেন, তিনি নিজেও ছোটবেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ল্যাবের যথেষ্ট সুবিধা পাননি। বিদেশে পেয়েছেন। তার সদ্ব্যবহারও করেছেন। আসল ব্যাপার হল ইচ্ছার তীব্রতা, ভালো লাগা। সেটি থাকলে, বিজ্ঞানমনস্ক হলে দক্ষতা অর্জনের পথে কোনো বাধাই টিকে থাকতে পারে না। নিজের বাড়িতে একটা ছোট ল্যাব তৈরি করে নিতে তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন। সামান্য কিছু যন্ত্রপাতি জোগাড় করে পরীক্ষা চালাতে খুব খরচ হয় না। এখন জ্ঞানের ভাণ্ডার অসীম এবং তা সবার হাতের মুঠোয়।

যা কিছুদিন আগেও ছিল ভাবনার অতীত। ইন্টারনেট দুনিয়া এখন আগ্রহী শিক্ষার্থীকে সাহায্য করতে রীতিমতো মুখিয়ে রয়েছে। প্রযুক্তির এই সুবিধা নিতেই হবে। অন্তর্জালের অসীম ভুবনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নানা মডেল ভেসে বেড়াচ্ছে। নিজে নিজে কোনো একটা এক্সপেরিমেন্ট করে সফল হলে আনন্দের সীমা থাকবে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে, প্রযুক্তি যেন শিক্ষার্থীকে ব্যবহার করতে না পারে। ছোটদের কোনো সমস্যা সমাধান না করে বরং ক্লু দেয়াটাই সমীচীন। যাতে সে চিন্তা ও বিশ্লেষণের সুযোগ পায়। আর যখন সে সমাধান সূত্র নিজে বার করবে, তখন একদিকে যেমন সে আনন্দে আত্মহারা হবে, অন্যদিকে এ শিক্ষা তার মস্তিষ্কে স্থায়ী হয়ে যাবে।

জিপিএ-৫ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষক মনে করেন, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন তেমন কঠিন কিছু না। স্বাভাবিক পড়াশোনা চালিয়ে গেলে আপনা-আপনি এই গ্রেড শিক্ষার্থীর নাগালে এসে যাবে। এর জন্য আলাদা প্রস্তুতির দরকার পড়ে না। আগ্রহ আর আনন্দ নিয়ে লেখাপড়া করাটাই জরুরি। পড়াশোনায় মন বসে না- একজন শিক্ষার্থীর এমন অভিব্যক্তির প্রতিক্রিয়ায় অভিজ্ঞ এই শিক্ষক বলেন, পড়াশোনার প্রতি শিশুদের এই দৃষ্টিভঙ্গি একদম স্বাভাবিক এবং চিরচেনা। কোনো শিশুরই তা ভালো লাগে না। কিন্তু পড়তে পড়তেই নতুন কোনো আনন্দের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়। আর তখনই সৃষ্টি হয় আকর্ষণ। একবার এই দুর্লভ মুহূর্তের স্বাদ পেলে বই-ই হয়ে ওঠে তার নিত্যসঙ্গী। পাঠ্যপুস্তক ও কারিকুলাম পরিমার্জনের বিষয়ে ড. ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীর মননে যাতে সৃষ্টিশীলতা জেগে ওঠে, কোচিং-গাইডের অশুভ ছায়া থেকে যেন শিশুরা মুক্ত হতে পারে, সে লক্ষ্য নিয়েই এ কাজে তার সংযুক্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতারও বদল ঘটে- সে কারণেও কিছু সংস্কার, কিছু পরিমার্জনের দরকার হয়; নতুন মডেলের প্রয়োজন হয়। তবে বিজ্ঞানের ভাষা যাতে সহজবোধ্য ও সরল হয়, প্রচ্ছদ যাতে রঙিন ও আকর্ষণীয় হয়, সেদিকেও তার খেয়াল ছিল।

একজন শিক্ষার্থী অকপটে বলে ফেলে, সে জাফর স্যারের কোনো বই পড়েনি। তাই আজ তার ভীষণ লজ্জা আর কষ্ট। বই পড়ার আগ্রহ এখন তার মনে তীব্র হয়ে উঠেছে। সে স্যারের মতো লেখক হতে চায়, বিজ্ঞানী হতে চায়। ড. জাফর ইকবাল বলেন, লেখক হওয়ার জন্য কোনো বৃত্তি নির্বাচনের দরকার হয় না। একজন খেলোয়াড়, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক- যে কেউই লেখক হতে পারেন। তবে বিজ্ঞানী হতে গেলে তাকে বিজ্ঞানমনষ্ক হতে হবে, মানসকাঠামোয় বিশ্লেষণের পরিসরকে পরিচর্যা করতে হবে। ভালো করে গণিত শিখতে হবে। কেননা বিজ্ঞানের ভাষাই হল গণিত।

জনপ্রিয় লেখক ড. জাফর ইকবাল তার লেখা বইগুলোর বিষয় ও চরিত্র নিয়ে অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দেন। শিশুদের নিষ্পাপ ভালোবাসায় সিক্ত লেখক বলেন, লেখার সময় তার মনেই হয়নি, এই বইগুলো এভাবে শিশুদের মন জয় করবে। এটা তার বাড়তি পাওয়া। তার চরিত্রগুলো কখনও কাল্পনিক, কখনও বাস্তব জীবনের ছায়ারূপ। জগৎ সংসারের নানা অসঙ্গতি কিংবা বিজ্ঞান জগতের গূঢ় রহস্য- সবকিছুই তার উপজীব্য হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সাধারণ মানুষের অবর্ণনীয় আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেমের মহত্তম শিক্ষা তার লেখায় অবলীলায় জায়গা করে নিয়েছে।

ড. জাফর ইকবালের লেখায় প্রবন্ধের গাম্ভীর্য নেই, বাক্য কৌশলের কৌলীন্য নেই, জ্ঞানের আড়ম্বর নেই; আছে শুধু শব্দের খেলা, শিল্পের মাধুর্য আর অদ্ভুত এক মাদকতা, যা শিশু-কিশোরকে শুধু তীব্রভাবে আকর্ষণই করে না, একইসঙ্গে তাদের কল্পনায় পরিবর্তনের ছাপ রেখে যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংলাপ শেষ হলেও তার রেশ থেকে গেছে অনেকটাই। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে কেউ চোখ মুছেছে, কেউ বলেছে এ রাতে সে আর ঘুমাবে না, কেউ আবার সংকল্পে বুক বেঁধেছে- সে বিজ্ঞানী হবে, দেশের জন্য কিছু একটা করতেই হবে। শুধু বেঁচে থেকে লাভ নেই, যুক্তির সমর্থনে বুদ্ধির আলোয় একটা সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে হবে। এখানেই একজন শিক্ষকের সার্থকতা। সার্থক শিক্ষক তিনিই, যিনি শিক্ষার্থীর মনোজগতে অবলীলায় বিচরণ করেন তার মনকে স্নিগ্ধ করার জন্য, নির্মাণ করার জন্য, মুক্ত করার জন্য।

অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ২৯ আগস্ট ২০২০/এমএম


Array