Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: যমুনা গ্রুপের কর্ণধার নুরুল ইসলামের মৃত্যুর খবরটি প্রথমে প্রচার করে তার মালিকানাধীন টেলিভিশন যমুনা টিভি। ব্রেকিং নিউজে ও স্ক্রলে তার মৃত্যুর খবরটি শুনে কলিজাটা দপদপ করতে থাকে বেশ কিছু সময়। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে কিছুক্ষণ পর সামলে নিলাম। তারপরও বুকের ভেতরটা স্বাভাবিক হচ্ছিল না। তিনি হঠাৎ এমন করে চলে যাবেন, তা একটুও ভাবতে পারিনি।

গাজীপুরের ছয়দানার বাসন সড়কে তার মালিকানাধীন যমুনা ফ্যান কারখানায় গত শতকের আশির দশকে একটি নিউজ সংক্রান্ত ঘটনায় তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তার কাছে হাত পাতলে খালি হাতে কাউকে ফেরাতেন না। কমবেশি যাই হোক, পেয়ে সবাই খুশি হতেন। খুব কাছ থেকে না দেখলে বোঝাই যেত না এমন একজন রাগী চেহারার মানুষের মনটা দানশীলতায় ভরপুর।

এমনই এক ঘটনা আজ থেকে ৩৬ বছর আগে ঘটেছিল আমার জীবনে। টঙ্গী পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম স্যার আমাকে এবং আমার এক সহকর্মী সাংবাদিক বন্ধু মাহবুবকে ডেকে বললেন, চলো আজ এক জায়গায় যাব। এই বলে আশরাফ স্যার আমাদের তার গাড়িতে করে বাসন সড়কের যমুনা ফ্যান কারখানায় নিয়ে হাজির হলেন। নুরুল ইসলাম ভাই তার চেম্বারে বসা। আমাদের দেখে তিনি খুব সমাদর করে সবাইকে বসতে দিয়ে চা-নাস্তার ব্যবস্থা করলেন।

তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলতে বলতে এক সময় আশরাফ স্যার বললেন, টঙ্গী পাইলট স্কুলের মসজিদের জন্য ছয়টি ফ্যান দরকার, ভাই আপনাকে দিতেই হবে। নুরুল ইসলাম ভাই আশরাফ স্যারের এ কথা শুনে বললেন, মাত্র ছয়টি ফ্যান! এ কথা বলে তিনি আমাদের কারখানার মেশিনারিজের কাছে নিয়ে গেলেন। ঘুরে ঘুরে পুরো কারখানাটি দেখালেন।

এ সময় তিনি একজনকে ডেকে কানে কানে কী যেন বললেন। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই কানে কানে বলা লোকটি বড় এক ট্রলিতে করে ফ্যানের বেশ কয়েকটি প্যাকেট নিয়ে এলেন। নুরুল ইসলাম ভাই সবগুলো ফ্যানের প্যাকেট আমাদের হাতে দিয়ে বললেন, ছয়টি নয়, বারোটি ফ্যান দিলাম; সবগুলো ফ্যান মসজিদে ঘন ঘন করে লাগাবেন, কোনো মুসল্লি যেন ফ্যানের বাতাস থেকে বঞ্চিত না হন।

শিকড় থেকে উঠে আসা আকাশচুম্বী খ্যাতিতে ভরা এই মানুষটার জন্য আল্লাহর কাছে আজ বেহেশত চাইব না তো কার জন্য চাইব? ইয়া আল্লাহ আমাদের নুরুল ইসলাম ভাইকে বেহেশত নসিব করুন।

নূরুল ইসলাম : সাংবাদিক; সাবেক সভাপতি, টঙ্গী প্রেস ক্লাব

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৯ জুলাই ২০২০/এমএম


Array