Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: করোনা মহামারী আর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ধাক্কায় উপকূলীয় এলাকার বিপর্যস্ত চিংড়ি খাতকে সচল করতে সহায়তার প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিল্প মালিকরা।

এ খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি আর রপ্তানি পুনরায় সচল করতে ছয় দফা সুপারিশ প্রস্তাবনা আকারে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ শ্রিম্প এন্ড ফিশ ফাউন্ডেশনের (বিএসএফএফ) কার্যনির্বাহী বোর্ডের জরুরি সভায় আলোচনায় এ সব বিষয় উঠে আসে।

পাশাপাশি শ্রিম্প হ্যাচারি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেব) ও বাংলাদেশ অ্যাকুয়া প্রোডাক্টস কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন (বাপকা) থেকে চিংড়িখাতের সমস্যা সমাধানে সুপারিশের বিষয়েও গত ২ জুন আলোচনা করা হয়।

আলোচকরা বলেন, বাংলদেশে চিংড়ি খাত বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার ২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮১ হেক্টর পুকুর ও ঘেরে চিংড়ি চাষ দেশজ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং রপ্তানি আয়যোগ্য পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।

চিংড়ি উৎপাদনে বাংলাদেশে হ্যাচারিগুলি এবং মাঠ পর্যায়ে চিংড়ি চাষীরা তাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে চলমান করোনা মহামারী এবং সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আমফানের ফলে চিংড়িখাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সভায় উল্লেখ করা হয়, করোনার কারণে ঢাকার বাইরে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চিংড়িখাতে ঋণ প্রবাহ কমে যায়। দীর্ঘদিনের সাধারণ ছুটির প্রেক্ষাপটে চিংড়িখাতে- হ্যাচারি ও মাঠ পর্যায়ের চিংড়ি খামারে প্রকট শ্রমিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় হ্যাচারি ও খামারিরা শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় উপকরণ আমদানি ও বিপনন মারাত্মকভাব ব্যাহত হয়েছে। হ্যাচারি মালিক ও মাঠ পর্যায়ের চিংড়ি চাষিরা বিশেষ করে ক্ষুদ্র চিংড়ি চাষিরা অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিংড়ি উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ কিনতে পারছেন না।

আমদানি কম হওয়ার কারণেই উপকরণের দামও বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আমফানের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চিংড়ি ঘেরগুলি অপূরণীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্লাবিত হওয়া ছাড়াও ঘেরগুলির এক বিরাট অংশের পানি সরবরাহের পয়ঃপ্রণালী এবং সুরক্ষা বাঁধ ও খামারের প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

খামারিদের নিজেদের পক্ষে এই ক্ষতি পূরণ করা সম্ভরপর নয়। ক্ষুদ্র চিংড়ি চাষিদের পক্ষে ব্যাংকিং খাত থেকে প্রচলিত ঋণ প্রাপ্তি সম্ভবপর নয় বিধায় তারা চিংড়ি চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার সামর্থ হারিয়েছেন।

চিংড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি পুনরায় সচল করার সভায় ছয়টি সুপারিশ প্রস্তাবনা আকারে তুলে ধরা হয়।

১. ক্ষুদ্র চিংড়ি চাষিদের জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রদান।

২. বিনা শুল্কে মাছ ও চিড়ি চাষের খাদ্য এবং উপকরণ আমদানির সুযোগ।

৩. বিনা শুল্কে আমদানি করা হ্যাচারি ও চিংড়ি চাষের উপকরণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ।

৪. সুলভ মূল্যে মাছ ও চিংড়িচাষ উপকরণ বিপণন ও সরবরাহ ব্যবস্থা পরীবিক্ষণ।

৫. হ্যাচারি ও চিংড়ি চাষের উপকরণসমূহআমদানির জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের দেয়া অনাপত্তি পত্রে উল্লেখিত শর্তাদির অতিরিক্ত শর্তাদি আরোপ ও তা ছাড়করণে বন্দরে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন।

৬. সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে চিংড়ি খামারগুলি প্লাবিত হওয়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সুরক্ষা বেড়িবাঁধ, পয়ঃপ্রণালি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর/ ঘেরেগুলির পুনর্বাসনের জন্য জরুরি ও সমন্বিত উদ্যোগ।

সভা শেষে বাপকার সভাপতি মোহাম্মদ তারেক সরকার, সেব’র সভাপতি আশেক উল্লাহ রফিক এমপি ও ওবিএসএফএফ’র চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহমুদুল হকের স্বাক্ষর করা সুপরিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ অর্থ, বাণিজ্য, পানিসম্পদ, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো হয়।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১০ জুন ২০২০/এমএম


Array