Menu

ডা. শেখ জলিল :: যুদ্ধের মাঠে, ময়দানে কোনো রাষ্ট্রনায়ক বা সমরনায়ক থাকে না সম্মুখ সমরে, থাকে লড়াকু সৈনিকগণ। আর সে সমস্ত সৈন্যের জন্য থাকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র, রসদ, খাদ্য, ওষুধ সরবরাহ। সর্বোপরি থাকে রাষ্ট্রনায়ক, সমরনায়কদের তরফ থেকে সঠিক দিক নির্দেশনা এবং উদ্দীপনামূলক উপদেশ ও বাণী।করোনা ভাইরাস কোনো যেনতেন আতংক নয়। এর বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে চলছে মরণাপণ যুদ্ধ। এটাকে তুতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে তুলনা করছেন অনেকেই। এই যুদ্ধে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হচ্ছেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও হেলথ টেকনিশিয়ানরা। দেশে দেশে তাদের সাথে সহযোগিতায় আছেন হাজার হাজার ভলান্টিয়ার।

করোনা চিকিৎসায় কিংবা মৃত্যুরোধে উন্নত বিশ্বেও ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ হয়েছে। বন্ধ হয়েছে নিয়মিত চিকিৎসা এমন কি শল্য চিকিৎসাও। তারা প্রথম প্রাইওরিটি দিচ্ছেন করোনা মোকাবিলাকে। তারা জানেন প্রয়োজনীয় প্রোটেকশনহীন একজন ডাক্তারের প্রাইভেট চেম্বার থেকেও করোনা রোগী বাড়তে পারে হাজার হাজার।সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা এতো বেশি যে প্রতিটি উন্নত রাষ্ট্রই হিমসিম খাচ্ছে এ মহামারী সামাল দিতে। বাংলাদেশে লোকসংখ্যার অনুপাতে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও কম। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে পেশাগত দোষাদুষি, চাকরী খাওয়ার হুমকি, গালাগালি।

একটু সর্দি-কাশি হলে যে দেশের মন্ত্রী, এমপি, সচিব, কোটিপতিরা বিদেশে পাড়ি জমান তারা আজ পারছেন না বাইরে যেতে। তাই ডাক্তারদের মুণ্ডুপাত করে নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। ব্যাংক লুটপাট, অর্থপাচার, দুর্নীতি, চাঁদাবাজির টাকা গেলো কই? এই দুর্যোগে, মহামারীতে ত্রাণ দিন, চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনুন। লড়াকু সৈনিক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রেটেকশনের ব্যবস্থা করুন। ডাক্তার- নার্সদের করোনা হলো তাদেরও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

স্মরণ করুন- একাত্তরে দেশমাতা রক্ষার্থে, স্বাধীনতা আনতে, সম্মুথ যুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছিলো বীরসেনানী অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা। খাদ্য দিয়ে, ওষুধ দিয়ে, আশ্রয় দিয়ে, পথ দেখিয়ে দিয়ে তাঁদের সাহায্য করেছেন দেশের সব মানুষ। নেতাদের বলছি কাজে লাগান আপনার কর্মীদের, ছাত্রনেতাদের। আর্মি, পুলিশ যেমন করছে তারাও সহায়তা দিক এই দুর্যোগে, স্বাস্থ্যসেবায়।

মুষ্টিমেয় কিছু ডাক্তারের কথা বাদ দিয়ে সমবেত চেষ্টায় এগিয়ে যান। একাত্তরেও কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলে অনেক নেতারা দেশ ছেড়েছিলেন, আত্মগোপনে ছিলেন। সামর্থ থাকা সত্বেও শরীরে বলীয়ান অনেক যুবকেরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নাই। তবুও কিন্তু যুদ্ধ থেমে থাকে নাই, স্বাধীনতার সূর্য়োদয়ও হয়েছে।করোনা যুদ্ধে আমাদের জয় হবেই।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০৯ এপ্রিল ২০২০/এমএম