Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: মুজিব জন্মশতবর্ষ যখন পালন করা হচ্ছে, তখন কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশে ঋতুরাজ বসন্ত বিরাজ করছে। বসন্তে বাংলার প্রকৃতি অপূর্ব সাজে সেজে ওঠে। গাছে গাছে ফুটে শত ফুল। পাখির কলকাকলিতে ভরে ওঠে চারদিক। তাই প্রত্যাশা, প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মুজিব জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানও শত ফুলের মতো নির্মোহ আনন্দ লাভ করুক।কোনো প্রকার সংকীর্ণতা, মলিনতা যেন এই মহতী উৎসবকে নিরানন্দে পরিণত করতে না পারে। কারও মনে যেন অপরিপূর্ণতা, অনুশোচনা বিরাজ না করে।

শতবর্ষ একটি সমীকরণ, কালের মহাবিবর্তনের একটি মাইলফলক। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার গভীর অন্তর্দৃষ্টির বলে তার জীবদ্দশায় অর্জিত অর্জনসমূহের শতকাল পরের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ভেবেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন :

‘আজি হতে শত বর্ষ পরে,

কে তুমি পড়িছো মোর কবিতা খানি, কৌতূহল ভরে,

আজি হতে শত বর্ষ পরে।’

সত্যি যারা সৃষ্টিশীল মানুষ তারা তাদের সৃষ্টি শতকাল পরে মানবমনে কী প্রভাব রাখবে তা ভেবে ব্যাকুল হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি স্বাধীন দেশের স্রষ্টা, বাঙালি জাতির পিতা, সোনার বাংলা গড়ার রূপকার। তাই বঙ্গবন্ধুর মনেও তার গড়া সোনার বাংলাদেশ শতবর্ষ পরে কোন রূপ পরিগ্রহ করবে, বাংলাদেশের মানুষ কেমন থাকবে- তাই নিয়ে ছিল তার অন্তহীন চিন্তা ও আগ্রহ।

বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে থাকলে তিনি হতেন শতবর্ষজীবী এবং তিনি প্রত্যক্ষ করতে পারতেন বাংলাদেশের বর্তমান রূপ। অন্যদিকে বাঙালি জাতি তাদের রাষ্ট্রের স্রষ্টাকে নিয়ে পালন করতে পারতেন ঐতিহাসিক মুজিব শতবর্ষ। সঙ্গে থাকতে পারতেন বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে, তার সহধর্মিণী এবং নিকট আত্মীয়-পরিজন।

কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, স্বাধীনতার অনতিকাল পরেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের পরিণতিতে কতিপয় মানুষরূপী নরপশুর হাতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে মৃত্যুবরণ করতে হয়। ফলে তার নিজের হাতে গড়া সোনার বাংলাদেশ ভিন্ন ধ্যান-ধারণার লোকদের হাতে চলতে শুরু করে। বাংলাদেশ হারায় তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। উদার অসাম্প্রদায়িক দেশটি ভরে ওঠে সাম্প্রদায়িকতায় বিষবাষ্পে।

সুখের কথা, দীর্ঘ একুশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পর তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার প্রিয় দল আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আরোহণ করে। আজ শেখ হাসিনার শাসনামলেই উদযাপিত হচ্ছে পিতার শতবর্ষ পালন উৎসব। মানুষ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, এই মহতী আয়োজনটি হয়ে উঠবে সবার মিলন মেলা। সবাই দলমত নির্বিশেষে হয়ে উঠবেন আনন্দে আত্মহারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোনো দলের সম্পদ নন, তিনি সমগ্র দেশের এবং সমগ্র জনগণের অমূল্য সম্পদ। তাই দলমত নির্বিশেষে সবাই যেন এই উৎসবে যোগ দিতে পারেন, আশা করি সর্বত্র সেই পরিবেশ বিরাজ করবে। পরিশেষে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে একান্ত প্রার্থনা, এই মহান আয়োজন আনন্দের রূপ পরিগ্রহ করুক এবং তার সফল ও সুন্দর পরিসমাপ্তি ঘটুক।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১৪ মার্চ ২০২০ /এমএম


Array