শেখ জলিল, এডমন্টন প্রতিনিধি :: নানান দেশের নানান ভাষা/ বিনে স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা… শনিবার, মার্চ ৭ কানাডার এডমন্টনে স্থানীয় সেজং মাল্টিকালচারাল সেন্টারে বসেছিলে বাংলাদেশি বাঙালিদের প্রাণের মেলা। আগের রাত ও সারাদিনব্যাপী তুষারপাতের প্রতিকূল আবহাওয়ার তোয়াক্কা না করে সবাই এসেছিলো ‘একুশ ও স্বাধীনতা’ দিবসের অনুষ্ঠানে। এসেছিলো প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষা, দেশের স্বাধীনতাকে প্রবাসের মাটিতেও সমুন্নত রাখতে।
চিত্তাকর্ষক এই অনুষ্ঠান চলেছে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অব্দি। শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক প্রদানের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপর বিসিএই’র বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড. এইএম আশলাফ আলী তাঁর ২০২০ সালের কার্যকরী কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেন আগত সুধিবৃন্দের সামনে। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ বাংলা স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের গীতিনাট্য, নাচ, গান ও অভিনয় ছিলো অতুলনীয়। একুশ ও স্বাধীনতার উপর কোরাস গান পরিবেশন করেন বাংলা মিউজিক স্কুল ছাত্র ও বড়রা। কোরাস পরিচালনা করেন নাজনীন বেগম রুবী।
মূল অনুষ্ঠানের মাঝে অতিথিদের বক্তব্য ও উৎসাহপ্রদানে আগত বাংলাদেশিদের মাঝে বেশ আশার সঞ্চার হয়। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন মাননীয় সার্ভিস আলবার্টা মন্ত্রী ন্যাট গ্লুবিস, মাননীয় এমপি ও ছায়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট জেনেরক্স, এডমন্টন-এলার্সলি এমএলএ রড লোয়েলা এবং ইন্টারন্যশনাল হেরিটেজ এন্ড ল্যাংগুয়েজ এ্যাসোসিয়েশন (আইএইচএলএ)-এর প্রেসিডেন্ট ড. এনটোনেলা করটেজ। আগত অডিয়েসেন্সর কাছে তাঁরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব আরোপ করে বক্তব রাখেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা জানান।
মাননীয় স্বাস্থ্য ছায়ামন্ত্রী ম্যাট জেনেরক্স বিসিএই-কে কমিউনিটি কার্যক্রমের জন্য স্মারক প্রদান করেন। বিসিএই’র বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড. এইএম আশরাফ আলী ও কার্যকরী কমিটির সদস্যগণ মিলে এই ক্রেস্ট গ্রহন করেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ কানাডা এ্যাসোসিয়েশন অব এডমন্টন এবং সিআইবিসি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্য ও সমাজ সেবার জন্য বিশেষ অবদান রাখার জন্য সর্বজনাব ডা. সৈয়দ আমীর আলীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আটাশি বছর বয়সী ডা. আলী এই সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এডমন্টন প্রবাসী কণ্ঠশিল্পী খালেদ আশরাফীসহ সিআইবিসি ব্যাংক থেকে আসেন এডওয়ার্ড ডি এ্যামারাল-এর নেতৃত্ব একটি বিশেষ প্রতিনিধিদল।
অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিলো সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ম নিয়ে হানাহানির প্রতিবাদে নির্বাক গীতনাট্য ‘ধর্ম যার যার, দেশ সবার’। সুঅভিনিত ও শিক্ষনীয় এই গীতিনাট্য পরিচালনায় ছিলেন জাহিদুল ইসলাম ও পারভীন আকতার। এরপর বেশ কিছু স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশিত আবৃত্তি, গান, নাচ চলতে থাকে গভীর রাত অব্দি।
সব শেষে খাবার টিকেটের কুপনের উপর লটারী ড্র অনুষ্ঠিত হয়। স্পন্সারে ছিলো বাংলাবাজার, আলিফ হালাল মিট, সিএন ট্যাক্স এন্ড অ্যাকাউন্টিং, সৈয়দ মটগেজ এবং ডা. জেসমিন আক্তার। বিসিএই সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ফেরদৌসের ধন্যবাদ প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ১০ মার্চ ২০২০ /এমএম