Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: বাড়ছে মানুষ, এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে খাদ্যের চাহিদা। আর এই অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন এবং নানা রকম বাণিজ্যিক ব্যবহারে পানিসম্পদ কমে যাচ্ছে। এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বৃষ্টির পানি ব্যবহারের ওপর জোর দেয়ার কথা বলছেন বিশ্বের পানি বিশেষজ্ঞরা। পানির অপচয় বেড়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাই বাংলাদেশকে প্রকৃতিনির্ভর পানি সংকট সমাধানের দিকেই যেতে হবে।

শুষ্ক মৌসুমে (ডিসেম্বর-এপ্রিল) ব্যবহারের জন্য নদীর পানি ধরে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে নদীতে রাবার ড্যাম ও ব্যারাজের মাধ্যমে পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে সেচকাজে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

পৃথিবীতে মানুষসহ প্রাণীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পানির উৎস সংরক্ষণ করতে হবে। পানি দূষিত হয় এবং চলাচলে বাধা পায় এমন সব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে আমাদের বাঁচার তাগিদেই। জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ পানি ঘাটতির সমস্যায় পড়েছে। ২০৩০ সালের দিকে তীব্র পানি সংকটে প্রায় ৭০ কোটি মানুষ দেশের মধ্যে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হবে। দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং কৃষি-শিল্প-অবকাঠামোর উন্নয়নসহ নিত্যব্যবহারের জন্য পানির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় দখল হয়ে যাওয়ার ফলেও পানির উৎস সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে আজ অযত্ন-অবহেলার কারণে সুপেয় পানি অপেয় হয়ে উঠেছে। ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের তিনটিতে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞ টিম জরিপ চালিয়ে হাইকোর্টকে এ তথ্য জানিয়েছে গত ৭ জুলাই। ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি এবং পানি সমস্যা নিয়ে জনগণ ক্ষুব্ধ ও হতাশ। গত ১৮ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন ওয়াসার ১১ খাতে দুর্নীতি শনাক্ত করে ১২ দফা সুপারিশ করেছে। এ বছর ২২ জানুয়ারি বিভিন্ন সংবাদপত্রে বোতলজাত পানি নিয়ে বিএসটিআই’র উদ্ধৃতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজারে চালু থাকা অনুমোদিত পাঁচটি কোম্পানির বোতল ও জারের পানি মানহীন ও পানের অযোগ্য। হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫টি কোম্পানির বোতল ও জারের পানি পরীক্ষা করে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এ অবস্থায় নিরাপদ পানির বিকল্প উৎস হতে পারে বৃষ্টির পানি। দেশের একজন পানি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ঢাকা শহরের ১০০টি সরকারি ভবনের ছাদে যদি বৃষ্টির পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট গড়ে তোলা যায়, তাহলে নগরীর পানি সমস্যার অনেকখানি সমাধান করা সম্ভব।

শুধু ঢাকা নয়, দেশের ৬৪ জেলায় এ কার্যক্রম গ্রহণ করা গেলে একদিকে যেমন খাবার পানির ব্যবস্থা করা যাবে, অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে তা জলাবদ্ধতা হ্রাসেও সহায়ক হবে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ মাটির নিচের পানি খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার করে।

অনেক সময় বাসাবাড়ির ছাদে পানি তুলতে গিয়ে মোটর চালু করে দিয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকে। এ সময় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পানি অপচয় হতে দেখা যায়। পানির এ অপচয় কমাতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য পানি সমস্যার সমাধান করতে সেন্সর পদ্ধতির মোটরের ব্যবহার অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

মো. শামীম আল-মামুন : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০৩ জানুয়ারি ২০২০ /এমএম


Array