Menu

পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর আর নেই

বাংলানিউজ সিএ ডেস্ক :: প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ও সিনিয়র সাংবাদিক মো. শাহ আলমগীর আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে ভারতের চেন্নাইতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন শাহ আলমগীর। গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি সিঙ্গাপুর যান চিকিৎসার জন্য। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২০ ফেব্রুয়ারি জানান, শাহ আলমগীর লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর পাশাপাশি থ্যালাসামিয়া, উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ আরও কিছু জটিলতা তার শরীরে দেখা দেয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে ২১ ফেব্রুয়ারি সিএমএইচে ভর্তি করা হয় তাকে। কয়েকদিন সিসিইউ, এইচডিইউতে রাখার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে নেয়া হয় আইসিইউতে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে শাহ আলমগীরের পৈত্রিক বাড়ির পূর্ব গোড়ান জামে মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরাদেহ পিআইবিতে নেয়া হবে।

তারপর বিকেল ৩ টায় মরাদেহ জাতীয় প্রেসক্লাবে নেয়া হবে। সেখানে শ্রদ্ধা ও জানাজা শেষে এরপর তারপর নিজবাসভবন উত্তরায় নেয়া হবে। সেখানে ১১ নং সেক্টরের বাইতুলনূর জামে মসজিদে জানাজা শেষে বিকেল ৫ টায় উত্তরার ১২ নং সেক্টর কবরস্থনে দাফন করা হবে।

শাহ আলমগীর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)- এর মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। গেল বছরের জুলাইতে সরকার তার চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করে। এরফলে ২০১৯ সালের জুলাইয়ের ০৭ তারিখ পর্যন্ত পিআইবি মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা তার।

ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতা শুরু করেন শাহ আলমগীর। ৩৫ বছরের দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে তিনি একাধিক ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। পিআইবিতে যোগদানের পূর্বে তিনি সর্বশেষ এশিয়ান টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় যোগদানের মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। এখানে তিনি সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদ-এ। প্রথম আলো প্রকাশের সময় থেকেই তিনি পত্রিকাটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা-সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর তিনি টেলিভিশন মিডিয়ায় কাজ শুরু করেন। চ্যানেল আই-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক, একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন শাহ আলমগীর। তিনি শিশু কল্যাণ পরিষদ এবং শিশু ও কিশোরদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান ‘‌‌‌‌চাঁদের হাট’-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি’র পরিচালনা বোর্ডেরও সদস্য তিনি।

সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬, ‘ চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫’, ‘রোটারি ঢাকা সাউথ ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০০৪’ এবং ‘কুমিল্লা যুব সমিতি অ্যাওয়ার্ড ২০০৪’ পেয়েছেন।

বাংলানিউজসিএ/ইএন/২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ইং