Menu

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: ২০১৬ সালে প্রণীত শিল্পনীতিতে ‘একটি গ্রাম, একটি পণ্যে’র (ওয়ান ভিলেজ ওয়ান প্রোডাক্ট) প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ সর্বশেষ শিল্পনীতিতে অঞ্চলভিত্তিক কাঁচামালনির্ভর শিল্পায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ইস্যুটি আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে নতুনই বলতে হবে। কারণ আগের কোনো শিল্পনীতিতে এ বিষয়ের ওপর কোনো গুরুত্বারোপ করা হয়নি। ওয়ান ভিলেজ ওয়ান প্রোডাক্টের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে যে এলাকায় যে পণ্য বা কাঁচামাল বেশি উৎপাদিত হয়, সেই এলাকায় সংশ্লিষ্ট কাঁচামালনির্ভর শিল্প স্থাপনের ওপর জোর দেয়া। এতে শিল্পায়ন প্রক্রিয়া সহজ হয়। কারণ সেই এলাকার উদ্যোক্তাদের শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামালের জন্য অন্য কোনো এলাকার ওপর নির্ভর করতে হয় না।

স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত কাঁচামালনির্ভর শিল্পায়নের ফলে এলাকার কাঁচামাল উৎপাদকরাও লাভবান হন। তাদের কাঁচামাল বাজারজাতকরণের জন্য অন্য কোনো স্থানে যেতে হয় না। বিশেষ করে কৃষি খাতের উন্নয়নে এ উদ্যোগ বিশেষ অবদান রাখে। কোনো এলাকা একটি বিশেষ পণ্যের জন্য বিখ্যাত হলে সেই এলাকার পণ্যটিকে ভৌগোলিক নির্দেশক আইন বা জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন অ্যাক্ট দ্বারা সুরক্ষা দেয়া হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের পণ্যকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য এ আইনটি ব্যবহৃত হয়।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন অ্যাক্ট (জিআইঅ্যাক্ট) বা ভৌগোলিক নির্দেশক আইন নিয়ে কিছু কাজ হয়েছে। বাংলাদেশের মসলিন, রাজশাহীর ফজলি আম, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, জামালপুরের নকশিকাঁথা, ঢাকাই জামদানি শাড়ি ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী বেশকিছু পণ্য আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল; কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী তৎপরতার কারণে শেষ পর্যন্ত এসব পণ্যের আন্তর্জাতিক মালিকানাস্বত্ব সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রত্যেকটি দেশেরই কিছু কিছু পণ্য থাকে যা একান্তই তার নিজস্ব পণ্য হিসেবে গণ্য হওয়ার দাবি রাখে। কারণ সেই পণ্যগুলো অন্য কোনো দেশে উৎপাদিত হয় না বা হলেও গুণগত মান থাকে নিু পর্যায়ের। কিন্তু কোনো দেশ যদি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছ থেকে এসব পণ্যের মালিকানাস্বত্ব নিয়ে নেয়, তাহলে সেই দেশ ব্যতীত অন্য কোনো দেশ তাদের নামে এসব পণ্য আন্তর্জাতিকভাবে বাজারজাত করতে পারে না। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগী কোনো কোনো দেশ আমাদের কয়েকটি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের প্রপার্টি রাইট নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল; কিন্তু উপযুক্ত সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে তাদের সেই উদ্যোগ সফল হয়নি।

বাংলাদেশের প্রায় প্রতি জেলায় কোনো না কোনো পণ্য পাওয়া যায়, যা অত্যন্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এমনই একটি জেলা হচ্ছে জামালপুর। সম্প্রতি ময়মনসিংহ বিভাগের এ জেলা সফরের সুযোগ হয়। কিছুসংখ্যক সিনিয়র সিটিজেনের সমন্বয়ে গড়ে তোলা বেসরকারি অলাভজনক পর্যটনবিষয়ক সংস্থা ‘কাছে এসো’র উদ্যোগে দেশের ৬৪টি জেলা সফরের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা এবার জামালপুর জেলা সফর করি। দেশের অন্যতম দরিদ্র জেলা জামালপুরের নকশিকাঁথার সুনাম আগেই শুনেছিলাম। জামালপুর সফরকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উইমেন চেম্বারের আহ্বায়ক এবং বিভিন্ন ব্যবসায় সম্পৃক্ত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে জামালপুরের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ হয়। তারা সবাই আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জামালপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা খুবই ভালো। সুযোগ পেলে এবং প্রাপ্ত সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে আগামীতে জামালপুর আর দরিদ্র থাকবে না।

বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (প্রস্তাবিত) আহ্বায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জামালপুর হস্তশিল্প অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. সাঈদা আক্তার বলেন, জামালপুর বাংলাদেশের একটি অন্যতম সম্ভাবনাময় জেলা। জামালপুরের মানুষ, বিশেষ করে নারীরা অত্যন্ত কর্মক্ষম এবং উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী। তারা যে কোনো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম। এ এলাকার নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে অনেকেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রসারিত করতে সমর্থ হয়েছেন। আমি একসময় জামালপুর পৌরসভার কমিশনার ছিলাম। সেই সময় লক্ষ করেছি, জামালপুর এলাকার নারীদের মধ্যে ঘরের বাইরে কর্মসংস্থানের ব্যাপারে কিছুটা হলেও অনীহা ছিল। এখন সেই অবস্থা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে জামালপুরের নারীরা অন্যান্য জেলার তুলনায় হস্তশিল্পের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছে। বিশেষ করে জামালপুরের নকশিকাঁথার সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে আছে। জামালপুরের নারীদের তৈরি দৃষ্টিনন্দন নকশিকাঁথা এবং অন্যান্য হস্তশিল্পের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা দেশের সর্বত্রই রয়েছে। জামালপুর জেলায় অন্তত ৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা নিয়মিত হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এদের অনেকেরই আধুনিক শোরুম আছে। যাদের শোরুম নেই তারাও বাড়িতে বসে নানা ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করে সংসারের জন্য অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করছেন। এ জেলার নারীরা আগে চাকরির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের চেষ্টা করতেন। এখন তারা চাকরির চেয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। অনেকেই উচ্চশিক্ষা অর্জন করার পর চাকরিতে না গিয়ে ব্যবসায় নিয়োজিত হয়েছেন। নারীর আর্থিক ক্ষমতায়ন না হলে সমাজ-সংসারে তার উপযুক্ত মূল্যায়ন হয় না। উইমেন চেম্বারের পক্ষ থেকে এ লক্ষ্যার্জনে যা যা করণীয়, তা করা হচ্ছে।

আশার কথা, জামালপুরের মেয়েরা শুধু হস্তশিল্পেই নয়, অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যেও ভালো করছেন। আগামীতে নারীর আর্থিক ক্ষমতায়নে জামালপুর একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। এক সময় জামালপুর ছিল অর্থনৈতিকভাবে অনুন্নত একটি জনপদ। নারীরা গৃহকর্ম ব্যতীত তেমন কোনো আয়বর্ধক কাজ করত না। জামালপুরে এক সময় ভিক্ষুকের সংখ্যা ছিল বেশি। এমনকি জামালপুরে কাজের বুয়ার আধিক্য ছিল। এক সময় ঢাকায় কাজের বুয়া, বাড়ির কেয়ারটেকারের বৃহদংশই ছিল জামালপুর-শেরপুর এলাকার। আজ সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন স্থানীয়ভাবে আমরাই কাজের বুয়া খুঁজে পাই না। দরিদ্র নারীদের অধিকাংশই কোনো না কোনো হস্তশিল্পে কাজ করছে। তারা এখন অর্থনৈতিকভাবে মোটামুটি স্বাবলম্বী। জামালপুরের নারী উদ্যোক্তাদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ব্যবস্থা না হওয়া। যেহেতু জামালপুর এলাকা এখনও দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে, তাই নারী উদ্যোক্তারা চাইলেই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি সংগ্রহ করতে পারেন না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও নারী উদ্যোক্তাদের ঋণদানের ক্ষেত্রে নানাভাবে সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। তারা নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে চান না। ঋণ চাইতে গেলেই জামানত এবং গ্যারান্টার চান; কিন্তু নারী উদ্যোক্তারা ইচ্ছে করলেই জামানত এবং গ্যারান্টার জোগাড় করতে পারেন না।

জামালপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে আলাপ হয় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা জামালপুরের উন্নয়নের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। জামালপুরের গর্ব হচ্ছে নকশিকাঁথা। বাংলাদেশের আর কোনো জেলায় এত উন্নত মানের নকশিকাঁথা তৈরি হয় না। জামালপুরে একটি নকশিপল্লী স্থাপনের প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলে অনুমোদিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পের জন্য আড়াইশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াবে এক হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের হস্তশিল্পীদের উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইতিমধ্যেই এ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জামালপুর দেশের ৬৩তম জেলা এবং দরিদ্রতম জেলাও বটে। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জামালপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জামালপুরে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ, টেক্সটাইল কলেজ, দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। জামালপুরে বর্তমানে ৫০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হওয়ার পর জামালপুর জেলা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। আমি মনে করি, আগামী ১০ বছর পর জামালপুর জেলা দেশের ৬৩তম জেলা হিসেবে থাকবে না। বরং জামালপুর জেলা দেশের শীর্ষস্থানীয় ১০টি জেলার একটিতে পরিণত হবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছি।

জামালপুর সফরকালে জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করে বেশ ভালো লাগল। ইতিমধ্যেই জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে শহরের সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচুরসংখ্যক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়া রোডের ওপর হস্তশিল্পের অসংখ্য শোরুম গড়ে উঠেছে। এসব শোরুমে নকশিকাঁথাসহ নানা ধরনের হস্তশিল্পজাত পণ্য শোভা পাচ্ছে। কয়েকটি শোরুমের মালিকের সঙ্গে আলাপ হলে তারা জানান, বিক্রি বেশ ভালোই হচ্ছে। তবে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও উৎপাদিত পণ্যের দাম সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। ফলে তাদের মুনাফার পরিমাণ কমে যাচ্ছে; কিন্তু শ্রমিকের মজুরিও দিন দিনই বেড়ে যাচ্ছে। আগে সস্তায় শ্রমিক পাওয়া যেত; কিন্তু এখন আর স্বল্প মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া যায় না। শ্রমিকদের অনেকেই এখন নিজেরাই উৎপাদকে পরিণত হয়েছেন। জামালপুরের হস্তশিল্প মালিকরা পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে পুরনো অথচ ব্যতিক্রমী একটি কৌশল অবলম্বন করছেন। শোরুম মালিকরা এলাকার দরিদ্র মহিলাদের দিয়ে সাব কন্ট্রাক্টে নকশিকাঁথা ও অন্যান্য হস্তশিল্পজাত সামগ্রী তৈরি করিয়ে থাকেন। বিষয়টি এরকম- একজন শোরুম মালিক তার চাহিদাকৃত ডিজাইন এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ গ্রামীণ দরিদ্র মহিলাদের সরবরাহ করেন। মহিলারা বাড়িতে বসে সেই ডিজাইন অনুসরণ করে হস্তশিল্পজাত পণ্য তৈরি করে শোরুমে সরবরাহ করেন। বিনিময়ে উপযুক্ত পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। এতে গ্রামীণ দরিদ্র মহিলারা বাড়িতে বসেই টাকা উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন। আর শোরুম মালিকরা তুলনামূলক স্বল্প মূল্যে তাদের চাহিদাকৃত পণ্য পেয়ে যাচ্ছেন। রাজধানীসহ দেশের বাইরেও জামালপুরের নকশিকাঁথা ও অন্যান্য হস্তশিল্পজাত সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে।

জামালপুরের নারী উদ্যোক্তাদের যদি তুলনামূলক সহজ শর্তে ব্যাংক লোন এবং অন্যান্য সহযোগিতা করা যায়, তাহলে তারা হস্তশিল্পজাত পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারবেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারিকৃত এক সার্কুলারের মাধ্যমে এসএমই শিল্পের আওতা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে কুটির এবং মাইক্রো শিল্পও এসএমই শিল্পের আওতায় চলে আসবে। ফলে কুটির শিল্প এবং মাইক্রো শিল্পোদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্য সুবিধাপ্রাপ্তি সহজ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্যবিমোচন করে না। দারিদ্র্য লালন করে। তার এ বক্তব্য অত্যন্ত যৌক্তিক এবং বাস্তবানুগ। সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রচলিত ধারার ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে আসতে সমর্থ হয়েছেন। কারণ ক্ষুদ্রঋণ একজন ব্যক্তির সার্বিক প্রয়োজন মেটানোর মতো নয়। বরং ক্ষুদ্র ঋণের বিকল্প হতে পারে উপযুক্ত ঋণ। অর্থাৎ যার যেটুকু অর্থ প্রয়োজন, তাকে সেই পরিমাণ ঋণই দিতে হবে। কম বা বেশি দিলে চলবে না। কম ঋণ দিলে তার প্রয়োজন মিটবে না। আবার বেশি পরিমাণ ঋণ দিলে তা অপচয় হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তাই উপযুক্ত ঋণ দিতে হবে। একইসঙ্গে ঋণ প্রদানের পর নিবিড়ভাবে মনিটরিং করতে হবে এবং গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও তা বাজারজাতকরণের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

জামালপুর সফরকালে সেখানকার নারী উদ্যোক্তাদের যে কর্মোদ্দীপনা লক্ষ করেছি, তাতে এটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়, তারা প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা পেলে এলাকার অর্থনৈতিক চেহারা বদলে দিতে এবং দেশের অন্যান্য এলাকার মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ /এমএম


Array