Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ চূড়ান্ত করেছে। তবে তা চূড়ান্ত করা হয়েছে আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি ছাড়াই। সনদের অঙ্গীকারে বলা হয়েছে, সনদ পূর্ণাঙ্গভাবে সংবিধানে তফশিল হিসাবে অথবা যথোপযুক্তভাবে সংযুক্ত থাকবে। সমন্বিত খসড়ার সঙ্গে চূড়ান্ত সনদের বেশ কয়েকটি পার্থক্য রয়েছে অবশ্য। খসড়ায় বলা হয়েছিল, সনদের বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা কিংবা জারির কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। কিন্তু চূড়ান্ত সনদে বলা হয়েছে, স্বাক্ষরকারী দলগুলো কোনো প্রশ্ন তুলবে না। বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে। বাস্তবায়নের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো দ্রুতই অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে। এ ছাড়া আরও কিছু বিতর্কযোগ্য বিষয় রয়েছে। আগে যেসব দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিল, তাদের নাম উল্লেখ ছিল; চূড়ান্ত সনদে দলের নাম উল্লেখ না করে শুধু দলের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। ওদিকে খসড়ায় ছিল, সনদের কোনো বিধানের ব্যাপারে শুধু সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। চূড়ান্ত সনদে তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

ঐকমত্য কমিশন বলছে, কোনো প্রশ্ন না করেই রাজনৈতিক দলগুলোকে সনদে স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো আগের অবস্থানে রয়েছে। বিএনপি বলছে, সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত বিষয়গুলো পরবর্তী নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে। ওদিকে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ চায় জামায়াত। আর এনসিপি বলছে, গণপরিষদ গঠন করে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে। ফলে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষ হয়েছে। রোববার কমিশন আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসবে।

আমাদের কথা হলো, জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা না হলে একটা রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নৈতিক ভিত্তিও দুর্বল হতে পারে, আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়া নিয়েও তৈরি হবে শঙ্কা। কারণ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আগামী নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে জুলাই সনদ গৃহীত হওয়ার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা রয়েছে, সেগুলোর মীমাংসা হওয়া জরুরি। সদিচ্ছা থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক দূরত্ব শূন্যতে নামিয়ে আনা না গেলেও যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে ফেলা সম্ভব। দূরত্ব কমানো না হলে যে সংকট দেখা দেবে, তাতে রাজনীতিতে অপশক্তির আগমন ঘটতে পারে। ফলে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে, আমরা মনে করি, মতপার্থক্যগুলো দূর করে সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সনদ স্থির করা উচিত। আগামী রোববারের বৈঠকে একটা ইতিবাচক উপসংহার দেখার জন্য জাতি অপেক্ষা করছে।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১৪ সেপ্টেম্বর  ২০২৫ /এমএম


Array