প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সুকণ্ঠী গায়ক আদনান সামি। কিন্তু জানলে চমকে উঠবেন, এই গায়কের আয়ু ছিল মাত্র ছয় মাস! এক সাক্ষাৎকারে এমনই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছিলেন পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া বলিউডের এ গায়ক। একইসঙ্গে নিজের ওজন কমানোর পেছনের রহস্যও প্রকাশ করেন। আদনান যখন প্রথম টেলিভিশনের পর্দায় আসেন তখন তার ওজন ছিল ২৩০ কেজি। ২০০৬ সালে ডাক্তার তাকে জানান, তিনি আর ছয় মাস বেঁচে থাকবেন! যেমন করেই হোক ওজন কমাতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল আমার কাছে ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতি। তাই ওজন কমানোর বিকল্প আমার কাছে ছিল না।’
জানলে আরও অবাক হবেন, ২৩০ কেজির আদনান সামির ওজন এখন মাত্র ৮০ কেজি। অর্থাৎ, ১৫০ কেজি ওজন কমিয়েছেন তিনি! এই ওজন কমানোর ব্যাপারটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, তা নিয়ে সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত তুলে ধরেন আদনান সামি। তার একাধিক জনপ্রিয় গান এখনও শ্রোতাদের সাড়া জাগানোর জন্য যথেষ্ট। শুধু গান নয়, তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও উত্তেজনার শেষ নেই।
সে কারণে হঠাৎ আদনানের এই পরিবর্তন সাধারণ মানুষকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল। কেন এই ধরনের পরিবর্তন? কেন এত কঠোর পরিশ্রম করে ১৪৫ কেজি ওজন কমানো? তিনি কি প্রেমে পড়েছিলেন? তিনি কি কোনো সিনেমায় অভিনয়ের জন্য নিজের শরীরে বদল এনেছিলেন? উত্তরে গায়ক বলেন, ‘এই পরিবর্তন শুধু আমার বেঁচে থাকার জন্য। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম।’
আদনান জানান, কিশোর বয়সে তিনি ফিট এবং রোগা ছিলেন। তখন তিনি পোলো, স্কোয়াশ, ঘোড়ায় চড়ার মতো বিভিন্ন খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ সালে পাকিস্তানি নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর ভারতের নাগরিক হয়েছিলেন এবং ২০২০ সালে বলিউড গানে অবদানের জন্য ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আমার ওজন নিয়ে নিয়মিত ঠাট্টার মুখে পড়তে হতো। আমার পরিচিত অনেক লোক আমাকে ছেড়ে দিয়েছিল, ভেবেছিল আমি রোগা হতে পারব না। তবুও আমি নিজের চেষ্টায় সক্ষম হয়েছি।’
যে মন্ত্রে কমিয়েছিলেন ওজন
জানা গেছে, আদনান প্রচণ্ড খাদ্যপ্রেমী। তার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা এমন ছিল, তিনি নাকি বেশি শর্করা, চিনি, লবণ আর চর্বিজাতীয় খাবার খেতে ভালোবাসতেন। সেই সব খাবার খাওয়ার পরে তার অপরাধবোধ হতো। পরে আবার সেই জিনিসগুলোই বেশি করে খেতেন। তাই প্রথমেই তার মনকে এই জায়গা থেকে বের করে আনা হয়। এরপর তার জন্য একটি কম ক্যালোরির ডায়েট প্ল্যান তৈরি করা হয়।
কী ছিল আদনানের ডায়েট প্ল্যানে?
প্রথমে আদনান চিনি ছাড়া চা দিয়ে দিন শুরু করতেন। দুপুরের খাবারে তিনি সবজির স্যালাড খেতেন। যাতে মাত্র ১ চা চামচ স্যালাড ড্রেসিং থাকত। সঙ্গে খেতেন মাছ। সন্ধ্যায় ঘরে তৈরি পপকর্ন খেতেন। যাতে মাখন বা তেল তো নয়ই, চিনি এবং লবণও থাকত না। রাতের খাবারে সিদ্ধ মসুর ডাল বা মুরগির মাংস খেতেন। কিন্তু সঙ্গে রুটি বা ভাত খেতেন না।
এভাবে ওজন ৪০ কেজি কমে গেলে আদনান জিমে যোগ দেন। সপ্তাহে ৬ দিন ১ ঘণ্টা করে শরীরচর্চা করতেন। মোটামুটি এই নিয়ম মেনেই দীর্ঘ চেষ্টার পরে ১৫০ কেজি ওজন কমিয়েছেন আদনান সামি। তিনি এখন সকল মোটা মানুষদের আদর্শ, যারা ওজন কমাতে মরিয়া।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৮ মার্চ ২০২৪ /এমএম