আহসান রাজীব বুলবুল, প্রধান সম্পাদক, প্রবাস বাংলা ভয়েস :: কানাডার টরেন্টোতে অন্টারিও আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ডেনফোর্থের রেড হর্ট তান্দুরীতে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন কানাডায় বসবাসরত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
অন্টারিও আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক লিটন মাসুদ, সভাপতিত্ব করেন বাকসুর সাবেক ভিপি ও অন্টারিও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফায়েজুল করিম, দোয়া পরিচালনা করেন সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন নান্নু।
আলোচনা সভায় বক্তারা ৩রা নভেম্বরের জেল হত্যাকে নজিরবিহীন এক হত্যাকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতা—সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেছিল। তারা সবাই বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে একাত্তর সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইতিহাস অনেক হত্যাকাণ্ড আর রক্তাক্ত অধ্যায়ের সাক্ষী। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের হত্যাকাণ্ড ছিল নজিরবিহীন।
আজ আমরা পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই চার জাতীয় নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে। দুঃখের বিষয়, জেলহত্যার পর দীর্ঘদিন ক্ষমতা দখলে রেখেছিল খুনিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষের দল। তারা ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল হত্যা মামলার বিচার। সুপরিকল্পিতভাবে অনেক আলামত নষ্ট করা হয়েছিল।
বক্তারা বলেন,আওয়ামী লীগের প্রতি বিদ্বেষের প্রথম বহিঃপ্রকাশ ঘটে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে। ঘাতকরা ধারণা করেছিল, একটি দলকে নিশ্চিহ্ন করতে হলে প্রথমে তার শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বকে শেষ করে দিতে হবে। শুরুটা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে। মোশতাক জাতীয় চার নেতাকে নানা টোপ দিয়ে তার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করতে চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু কোনো প্রলোভনই বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর দলের সঙ্গে তাদের বিশ্বাসঘাতকতা করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি। এ প্রেক্ষাপটেই ঘটে ইতিহাসের আরেক নৃশংস ঘটনা, কারা অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা।
এক নিমেষেই সমাপ্তি ঘটেছিল বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় চার নেতার জীবনের; যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। একাত্তরের পরাজয় মেনে নেয়নি এবং নিজেদের অবস্থান থেকেও সরে আসেনি যে শক্তি, তারাই পরবর্তীকালে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে এবং নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা ছিল সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এ হত্যাকাণ্ড শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। কারাগারের নিরাপত্তা নীতি ভেঙে রাতের অন্ধকারে এভাবে জাতীয় নেতাদের হত্যার ঘটনা বিশ্বে বিরল।
বক্তারা আরো বলেন, অাগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাতে আবারও সরকার গঠন করে, সে লক্ষ্যে কানাডা থেকে ব্যাপক প্রচারণার জন্য নির্বাচনী প্রচারণা কমিটি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হোসেন মনা, অন্টারিও আওয়ামী লীগে সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন নান্নু, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নওশের আলী, সহ-সভাপতি এডভোকেট রাধিকা রঞ্জন চৌধুরী, আনোয়ারুল আলম কামাল, মুশফাকুর আকন্দ, দপ্তর সম্পাদক খালেদ শামীম, প্রভাষক ম্যাক তারিক, নাসের হায়দার, শাকিল আহম্মেদ।
এছাড়াও কানাডা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ জসিম উদ্দিন, সম্পাদক ঝোটন তরফদার, মোরশেদ আহমেদ মুক্তা, আব্দুল মান্নান, আব্দুল এস বি এম হামিদ। স্বেচ্ছাসেবক লীগের তাজুল ইসলাম, জাকির হোসেন। কানাডা ছাত্রলীগের সভাপতি ওবায়দুর রহমান, তৌহিদ খান আশিক, তৌহিদুর রহমান খান দূর্জয়, ফয়সাল কবির নাহিদ, মো: আমির আফজাল জনি, ফুয়াদ হোসেন ফাহিম, রেজাউল ইসলাম, কায়সুর খান, আসাদ উদ জামান, রোকন চৌধুরী, মো: সোহাগ হোসেন,মো: সাকিব, রবিন ঢালী সহ অনেকে।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০৫ নভেম্বর ২০২৩ /এমএম





