Menu

বৈরী আবহাওয়ার কবলে দেশ

বাংলানিউজসিএ ডেস্ক :: আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আবহাওয়া অধিদফতর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়েছে দেশ। বেড়েছে ঝড়, জলোচ্ছাস, খরা, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুযোগ। বেড়েছে এসব দুযোর্গের তীব্রতা। এ থেকে জনজীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজন বিশ্বাসযোগ্য পূর্বাভাস। পরিবেশবিদরা মনে করেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে টালমাটাল অবস্থা। সাগরে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় উপক‚লবর্তী দেশগুলো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় টর্নেডো, জলোচ্ছ¡াস বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও বেড়েছে। বৈশ্বিক আবহওয়া পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছে বাংলাদেশ। অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে। কাল বৈশাখীর ঝড় হচ্ছে। হুমকীর মুখে আছে আমাদের ষড়ঋতুও। পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পৃথিবীর প্রাকৃতিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষা, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং একই সঙ্গে সমগ্র পৃথিবীর পানিচক্র ও জলবায়ু ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে মেঘমালা প্রধান ভ‚মিকা পালন করে থাকে। বিশ্বের আবহাওয়া, জলবায়ু ও পানিচক্রের ওপর মেঘমালার প্রভাব সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামসুদ্দীন আহমেদ বলেন, সময়মতো আবহাওয়ার পূর্বাভাস জীবন ও সম্পদ রক্ষাসহ নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। প্রযুক্তি ব্যবহার আবহাওয়ার পূর্বাভাস নির্ণয়ের সক্ষমতাকে শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া জলবায়ু সেবা’ নামে একটি সেবা অনুমোদন করেছে; যা তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণ বিশেষত কৃষকের কাছে আবহাওয়া ও জলবায়ু সংক্রান্ত সেবাসমূহ পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। আবহাওয়া অধিদফতরের আধুনিকায়ন এবং চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমসমূহ একটি কার্যকরী আগাম পূর্বাভাস ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। এটি আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে সহায়তা করবে।
আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু পরবির্তনে দুর্যোগের তীব্রতা এবং মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং মেগাসিটির অসুন্দর রকমের বিস্তৃতি আমাদের জনজীবনকে করছে আরো বেশি সংকটাপন্ন। এ বাস্তবতা মোকাবিলায় আমাদের আগের তুলনায় আরো বেশি ‘আবহাওয়া প্রস্তুত , জলবায়ু স্মার্ট’ এবং জল-বিষয়ক বোধ-বুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া বিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু হয়েছে আছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া বিজ্ঞানের ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক। বিশ্বে আবহাওয়া ও জলবিদদের অবদানের ক্ষেত্র অনেকগুলো। উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলো হলো আবহাওয়া ও জলবায়ু নিরীক্ষণ, বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন, এভিয়েশন শিল্প, পর্যটন ও বিনোদন, জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, কৃষি, জ্বালানি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জল সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পরিবহন, উন্নয়ন কৌশল, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পরিবেশ সুরক্ষা প্রভৃতি। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে আবহাওয়া ও জলবিজ্ঞান গবেষণায় আন্তরিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
বুয়েটের পানি সম্পদ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার বলেন, বজ পাত , টর্নেডো ও কাল বৈশাখীর মতো প্রলয়ঙ্করী ঘটনার সময় এবং স্থান ভিত্তিক আগাম বিশ্বাসযোগ্য পূর্বাভাস জনজীবন নিরাপত্তায় অপরিহার্য। এটি আবহাওয়া বিজ্ঞানের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এজন্য সুদক্ষ গবেষক দলের সুনিবিড়, সুনিপুন গবেষণা অব্যাহত রাখা একান্ত প্রয়োজন।

বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/২৩ মার্চ ২০১৯/ইএন


এই বিভাগের আরও সংবাদ