Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌  সেলফি এখন আর অভ্যাস নয়, মানসিক রোগে পরিণত হয়েছে। কেউ আজকাল ফোন কিনতে গেলে প্রথমেই ফোনের ক্যামেরাতে সেলফি যাচাই করে নেয়। দিনে অসংখ্য সেলফি তোলা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা অংশে দেয়ার সুযোগ থাকা। আপনি চাইলে স্টোরিতে দিতে পারেন, অথবা পোস্ট করতে পারেন। একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একাউন্ট থাকলে তো কথাই নেই।ফোকলোরিক চর্চা হিসেবে সেলফি তোলা নিয়ে এবং এর মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা চলছে। সমাজবিজ্ঞানীদের এক ধরনের পর্যবেক্ষণ এবং মনোবিজ্ঞানীদের এক ধরনের পর্যবেক্ষণ রয়েছে। যেমনটিই হোক সেলফি আমাদের নানা সমস্যায় আক্রান্ত করছে।

সেলফির কারণে সমস্যা
সেলফি তোলার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা, সেখানে বারবার কমেন্ট ও লাইক দেখা-সবকিছুই এই উদ্বেগের অংশ। আবার আপনি বারবার ভাবছেন, আমার পোস্টে লাইক কমেন্ট কেন নেই। সেটাও আপনাকে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন করবে।
আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে মানুষ। সেলফি তোলা ও সেটি পোস্ট করতে এত মনোযোগ দিচ্ছে তারা, যে আশেপাশের সবার সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো দুরূহ হয়ে পড়ছে তাদের জন্য।সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা না পেলে কমছে আত্মবিশ্বাস। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই ব্যক্তি তার যোগ্যতা, দক্ষতা ও চরিত্রের স্বীকারোক্তি পেতে চাচ্ছে। অন্যের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা বাড়ছে, যা বাড়াচ্ছে অবসাদ।

সমাধান: সব সময় সেলফি নয়
যেমনটি বলেছি, সেলফি তোলা একটি মানসিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনার সদিচ্ছা থাকতে হবে। সব সময় সেলফি নয়। মোবাইলের জগত থেকে একবার চারপাশে তাকান এবং অকেশন বুঝুন। ঠিক কখন সেলফি তুলবেন না বা পরিবেশ বুঝে কিভাবে মানিয়ে নেবেন তা বোঝানো যাক।

আড্ডার সময় বন্ধুদের মাঝে
আলাপচারিতাই উপভোগ করা উচিত। আলাপচারিতার মাঝে নিজে বা অন্য কোনো বন্ধু বা সবাইকে নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে চমৎকার সময়ে ছেদ ঘটাবেন না। তবে কথা বলতে বলতে চট করে সবার একটা সেলফি তুলে ফেললে সেটা ভিন্ন বিষয়। আবার আড্ডা শেষে সবাই মিলে একটা সেলফি তুললে তো আর বড় সমস্যা নেই। সেটা বরং ভালো। কথার মাঝে ফোনে মনোযোগ দিলে আড্ডার অনেকেই বিরক্ত হন।

অফিস পরিবেশে
অফিসে নিজের ব্যক্তিত্ব প্রবল রাখতে হয়। আপনি চাইলে কলিগের সঙ্গে সেলফি তুলতেই পারেন। তবে অফিসে নিজের সেলফি না তোলাই ভালো।

কাউকে হাস্যকর উপস্থাপনা করলে
অনেক সময় মানুষ হতবুদ্ধিকর পরিস্থিতিতে হাসির খোরাক হয়। গবেষণা বলছে, এই সময় মানুষকে ক্যামেরাবন্দি করা হলে তারা ভীষণ রেগে যায়। কাউকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করার পর একসঙ্গে সেলফি তুলতে যাবেন না। আপনি হাসির মতো সামান্য কথা ভাবলেও অপরপক্ষ তা নাও ভাবতে পারেন।

খাওয়ার সময়
একা, পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়ার আয়োজনে সেলফিতে সময় নষ্ট করতে নেই। সবাই মিলে খাবার উপভোগের বিষয়টি অনন্য অভিজ্ঞতা। এগুলো স্মৃতি হয়ে থাকে। খাবার মুখে তোলা রেখে ওটার ছবি তোলা নির্বোধের পরিচায়ক। তা ছাড়া আপনি এ কাজটি পছন্দ করলে অন্যরাও যে উপভোগ করবে, এমন কোনো কথা নেই।

চালকের আসনে বসে
গাড়ি চালানো অবস্থায় সেলফি তোলার মতো ঝুঁকি আপনি নিতে পারেন না। এটা বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া গাড়ি চালানোর সময় ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে এটেনশন চাওয়া এক ধরনের মানসিক রোগই।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ /এমএম