বায়াজিদ গালিব, ক্যালগেরি :: আমরা যে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম আমার মনে হয় তখন আঁতেল যুগ তুঙ্গে। ঐতিহাসিক শিল্প বিপ্লবের মত আঁতেল আমি দেখতাম কাঁধে ঝোলা নিয়ে তারা মাথা ঝুকিয়ে হাটছে, জ্ঞানের ভারে মাথা ভার আক্রান্ত। আর আমি আঁতেল না হতে পেরে আমার মন ভারাক্রান্ত। কি সুন্দর! কি তাঁদের জ্ঞান ভাণ্ডার। আমি কবিতা শুনতাম কিন্তু কিছুই বুঝতাম না।
এ ছাড়াও তাদের কাছে নতুন কিছু রাজনৈতিকশব্দ শিখলাম যেমন, বুর্জুয়া, পেটি বুর্জুয়া, ফ্যাসিবাদী। বাহ্ কি সুন্দর সব শব্দ, আমি মুগ্ধ। নাহ! আঁতেল আমাকে হতেই হবে। আমার মনে তীব্র বাসনা আঁতেল হবার। যেমন ভাবা তেমন কাজ। বন্ধুদের সঙ্গ ছেড়ে এক আঁতেল বড় ভাইকে তেল মেরে ঢুকে গেলাম ওই দলে। নাম তো লেখালাম কিন্তু তাদের সাথে চলাফেরা করা বাধা হয়ে দাঁড়াল আমার পোষাক। এখানে ড্রেস কোড আছে।
জিনসের প্যান্টের সাথে টি-সার্ট বা সার্ট হলে চলবে না। পড়তে হবে পাঞ্জাবী সে পাঞ্জাবী হতে হবে কুমিল্লার খদ্দরের পাঞ্জাবী আর কাঁধে সুদৃশ্য চটের ঝোলা। চশমা হলে আরো ভালো হয়। ভাগ্যিস আমার চোখের দূর দৃষ্টি কমে যাওয়ার কারণে চশমা ছিল। আলগা চশমা কিনতে হয় নি। চশমার খরচ বেঁচে গিয়েছিলো। সেই সময় খদ্দরের পাঞ্জাবীর দাম ছিল ২০ থেকে ৫০ টাকা।
ছাত্র জীবনে ২০ টাকা খরচ করতেই হিমশিম ৫০ টাকা তো অনেক দূরের ব্যাপার। তাই অতি কষ্টে ২০ টাকা দিয়ে মধ্যম মানের একটা পাঞ্জাবি কিনেই মন প্রফুল্ল। পরের দিন আতেঁল আসরে বসবো সেই উত্তেজনায় রাতে ভালো ঘুম হলো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্ব তেমন গভীর হয় না। বন্ধুত্ব হয় ধীরে ধীরে।
তবে আড্ডাবাজি বেশ চলে। এটা একটা বড় সুবিধা হয়েছিলো আঁতেল বনে যাবার জন্য। কারণ কেউ লক্ষ্য করলো না আমি কোথায় যাই বা কি করি।অবশেষে আঁতেল সভায় যোগ দিলাম। আজ বেশ ভাব গম্ভীর পরিবেশ। এদিক ওদিক তাকিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলাম। আমি একটু হতাশই হলাম, কারণ কোনো মেয়ে আঁতেল দেখলাম না, সবাই ছেলে। অবশ্য মেয়ে আঁতেল কখনোই দেখি নাই। আসলে মেয়েরা কি ছেলেদের মত ঘটা করে আঁতেল হয়? মনে হয় না।
যাহোক, সেদিন সবাই তাদের জ্ঞান অন্যান্যদের সাথে আদান প্রদান করছেন। কার চেয়ে কার জ্ঞান বেশী ঠিক তারই তুমুল প্রতিযোগিতা। ছোট ছোট গ্রূপ ডিসকাশন। আমি একটা গ্রূপ বেছে নিয়ে বসে পড়লাম। চুপচাপ বসে আছি। কোনো কথা বলার সুযোগ নাই। আমার জ্ঞান খুবই সীমিত। তাছাড়া তাঁরা যে বিষয়ে আলোচনা করছেনা তা আমার মাথায় ঢুকছে না কারণ আমি তার কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
ভান করছিলাম আমি বক্তার থেকে জ্ঞান আহরণ করছি। ফলে বক্তার দৃষ্টি আমার উপরেই। অনেক দিন পর একজন মনোযোগী শ্রোতা পেয়ে সেও বেশ খুশী। অনেক আলোচনা হলো। তাঁদের মাথায় কি খেলে গেলো জানিনা, নতুন সদস্য হিসাবে আমাকে সভায় আমন্ত্রণ জানানো হলো কিছু বলার জন্য। আমি অপ্রস্তুত। কি বলবো? হঠাৎই আমার মাথায় একটা বিষয় এলো তা হচ্ছে “আঁতেল”।
তেলের সাথে আঁতেলের কি সম্পর্ক সেটা আমি যা বুঝেছি তারই বর্ণনা দিলাম। তাছাড়া প্রকৃত আঁতেল হতে হলে, বক্তব্যে ব্রিটিশ বিরোধী কিছু থাকা দরকার। তা না হলে আবার আমাকে মূর্খ্য ভাবতেই পারে। তাই মুর্খ্যতার ঝুলি ফেলে দিয়ে, মনে মনে আমার বক্তব্য তৈরী করলাম। আমি সিরাজদ্দউলা নাটক যাত্রা ও সিনেমা সবই দেখেছি।
তাহলে আমার কিছুটা অভিজ্ঞতা তো আছেই ভয় কি? উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে শুরু করলাম, ‘ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ আমাদের এই উপমহাদেশকে শোষণ করে আমাদের কৃষ্টি কালচার প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছে। আমাদের আদর্শকে পঙ্গু করে দিয়েছে। (হাততালি)। আমরা ব্রিটিশ এবং সবশেষে পাকিস্তানি শোষক গোষ্ঠীর হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করেছি।
(অপেক্ষাকৃত কম হাততালি) আমরা ব্রিটিশদের কাছে দুইটা জিনিস বেশ ভালো শিখেছি এক অযথা কথায় কথায় ইংরেজি বলা, দুই তেল মারা। (এবার হাততালি না মৃদু গুঞ্জন) আমাদের কথায় কথায় ইংরেজি বলা বন্ধ করতে হবে আর তেল মারা বন্ধ করতে হবে। কারণ তেল মারতে পারি না বলেই আমরা আঁতেল।
ভেবেছিলাম খুব হাততালি পাবো, তার পরিবর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো। আমার কানে ভেসে এলো কেউ একজন বলছেন, ‘এই গাধাটাকে কোথা থেকে আমদানি করেছো? কতবড় সাহস! বলে কি না তেল মারতে পারি না বলে আঁতেল’! যিনি আমাকে এই মহতী সভায় আমদানি করেছেন তিনি চুপ করে বসে রইলেন। এমন ভাব করলেন, যেন আমাকে কোনোদিনই দেখেনই নাই। তাই মানসন্মান বাঁচানোর জন্য চুপি চুপি কেটে পড়লেন।
কয়েকসপ্তাহ পর সাহস করে, আবার আঁতেল সভায় যোগ দিলাম, একটু অপরাধী ভাব নিয়ে। কারো দিকে তাকাই না। চুপ চাপ বসে শুনছি, না ঠিক শুনছি না শোনার ভান করছি। হঠাৎ নারী কণ্ঠ ভেসে এলো, চমকে তাকালাম। দেখলাম কিছু মেয়ে আঁতেল সভায় যোগ দিয়েছে।
হায় আমি এটা কি করেছি! কেন কয়েক সপ্তাহ আসি নাই! ‘এ বিশ্বের যা কিছু চির কল্যানকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’। কিন্তু এখানে তো অর্ধেক নারী নেই। যা আছে তাতেই চলবে কারণ এই পাঁচজনই অর্ধেক বলা যেতে পারে। এই পাঁচ নারী রুমের সবাইকে তাদের সুন্দরহাসি দিয়ে সম্মোহিত করেছে।
আজকের এই সভায় কিছু নতুন বিষয় লক্ষ্য করলাম। বেশ কিছু আঁতেলদের আতলামি ভাব দূর হয়েছে। তাদের মুখে হাসি আর খুশির ঝলক। তাঁরা খোশ মেজাজে মেয়েদের সাথে গল্প করছেন আর অহেতুক তাদেরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টায় আত্মনিয়োগ করেছেন। মেয়ে শুধুই পাঁচজন আর ছেলেদের সংখ্যা কয়েক গুন।
তাই কে কার আগে তাদের আকৃষ্ট করে তুরুপের তাস ফেলতে পারেন তারই প্রতিযোগিতা। কেউ কেউ আবার দেবদাস ভাব নিয়ে বসে আছেন। মনে বড়ই দুঃখ, দুঃখের নানা ধরণ আছে, তাদের দুঃখ হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের এই গানটির মতো।
‘বিধি ডাগর আঁখি যদি দিয়েছিল
সে কি আমারি পানে ভুলে পড়িবে না॥
…………নয়নে ভরি উঠে অমৃতমহোদধি–
এত সুধা কেন সৃজিল বিধি, যদি আমারি তৃষাটুকু পুরাবে না’॥
আহা! কেনই বা ভুলেই পড়িবে না! আর কেনই বা তৃষা মেটাবে না! এই অবস্থায় তো দেবদাসের কোনো বিকল্প নেই! তাদের ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে এ জীবনে আর আঁতেল হওয়া হলো না, তার পরিবর্তে দেবদাস হওয়াই শ্রেয়। হাসি কান্না দুটোই আমাকে সংক্রামিত করে পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে, যারা জন্মগত ভাবেই দেবদাস।
তাই দেবদাসদের উদাস আর দুঃখ দুঃখ চেহারা দেখে এমন মায়া হল যে আমার চোখে প্রায় জল এসে গেল। আমার মন খুব খারাপ হলো। আমি আজকের সভার আলোচ্য বিষয়ের ফাঁকে ফাঁকে দেবদাসদের দিকেও তাকাচ্ছি। তাদের গভীর দুঃখ অনুধাবন করার চেষ্টা করছি। আচ্ছা মেয়েরা কখনো দেবদাসী (আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে , দেবদাসের স্ত্রী লিঙ্গ দেবদাসী) হয় না কেন? আজ পর্যন্ত কোনো মেয়েকে দেবদাসী হতে দেখি নাই।
তাই কিছুক্ষন মন আঁতেল আসর থেকে সরিয়ে এই নিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম। আমার মত করেই ব্যাখ্যা পেয়ে গেলাম। কারণ মেয়েদের দাড়ি নাই তাই ওরা দেবদাসী হলেও বোঝার উপায় নাই। তাঁরা দুঃখ প্রকাশের জন্য তো আর দাড়ি রাখতে পারছে না । তাই হয়তো মনে মনেই দেবদাসী হয়ে লোক চক্ষুর অন্তরালে ওড়না বা শাড়ির আঁচলে অশ্রু মুছে। ব্যাখ্যা পছন্দ হলো তাই মন দেবদাসের মনগড়া ব্যাখ্যা থেকে আঁতেল সভায় ফিরিয়ে আনলাম।
আমি যে গ্রূপে বসে আছি, সেখানে কেন জানি আঁতলামি ঠিক জমছে না। এ কি শুধুই মেয়েদের উপস্থিতির কারণ! এ গ্রূপে আলোচনার বিষয় প্রেম ও ভালোবাসা। একজন বলছেন প্রেম আর ভালোবাসার মাঝে ব্যবধান হচ্ছে স্বার্থহীন ও স্বার্থপরতা। ভালোবাসায় কোনো স্বার্থ নেই কিন্তু প্রেমে স্বার্থ আছে। যেমন বাবার ভালোবাসা মেয়ের প্রতি, মায়ের ভালোবাসা সন্তানের প্রতি। প্রেম কখনোই স্বার্থহীন না।
প্রেমিক প্রেমিকার যেমন চাওয়া পাওয়ার একটা ব্যাপার আছে, তেমন স্বামী-স্ত্রীরও। আমি ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম। হঠাৎ আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো, “বললাম, আচ্ছা তাহলে তো আমাদের প্রেমিক প্রেমিকার অনেক ভুল শব্দ ব্যবহার করেছে এতদিন”। তিনি বললেন, বলো কি ভুল শব্দ ব্যবহার করেছে ? আমি বললাম, এতদিন প্রেমিক প্রেমিকাকে বলেছে আমি তোমাকে ভালোবাসি, আসলে বলা উচিত ছিল আমি “তোমাকে প্রেমবাসি”।
বড় ভাই কটমট করে আমার দিকে তাকালেন। সেই সাথে এ গ্রূপে অট্ট হাসির রোল। সর্বনাশ! আঁতেল সভায় অট্ট হাসি! এখানে হাসি, কান্না, দুঃখ সবই মেপে করতে হয়। আমি তাড়াতাড়ি এ গ্রূপ থেকে অন্য গ্রূপে বসলাম। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। সে কি তার রাগান্নিত চোখ। আমি ভুল কি বলেছি?
সে যাহোক, এখন কেন্দ্রীয় ভাবে আলোচনা হবে। সাধারণত এ সময় জাতীয় বিষয় নিয়ে কোন এক জ্ঞানী বক্তব্য দেবেন। তাই আমিও তার বক্তব্য শোনার জন্য মনোনিবেশ করলাম। আজকের আলোচনার বিষয় বাংলার বানানের সাথে উচ্চারণের মিল থাকতে হবে। যেমন মাগুরা কে ইংরেজিতে লেখা হয় Magura, কিন্তু বগুড়া হয়ে গেলো Bogra, এ কেমন কথা!
বাংলায় দুটি শব্দেই গুরা আছে কিন্তু ইংরেজিতে নেই কেন! তেমন ঢাকা’র সাথে DACCA যায় না, কেমন যেন ধাক্কা ধাক্কা ভাব। ঢাকার জনগণ কি শুধু ধাক্কাই খাবে? তা হতে পারে না। এই বানানের অবশ্যই পরিবর্তন দরকার। এটা ঠিক না। ইংরেজ ব্যাটারা যা করে গেছে তাই আমাদের মানতে হবে? আলবৎ না। আমার মাথায় একটা শব্দ ঘুরপাক খাচ্ছে। শুধু উচ্চারণই না। আমরা বাংলা ভাষায় যা বলি তার অনেক কিছুই আমার কানে খটকা লাগে। সে ব্যাপারেই আজ কথা বলবো । ভাবছি এটা বলেই আজকের সবাইকে তাক লাগিয়ে দিবো।
কিন্তু যে ভাবে তর্ক-বিতর্ক চলছে আর মেয়েদের নিয়ে আদিখ্যেতা চলছে তাতে মনে হয় আমার বলার সুযোগ খুবই কম। সভার সময় দীর্ঘ হচ্ছে। মেয়েদের সঙ্গ ছাড়তে মনে হয় কারো ইচ্ছে হচ্ছে না। তাই কথার পৃষ্ঠে কথা বাড়িয়ে নিজেদের জ্ঞান ভান্ডার উজাড় করে দিচ্ছেন। মেয়েরা ছেলেদের ভিতরে গতির সঞ্চার করতে পেরেছে। তাঁরা গতিদায়িনী।
আমি গভীর চিন্তায় মগ্ন ছিলাম। প্রমথ চৌধুরীর একটা প্রবন্ধে পড়েছিলাম। বৃষ্টির সময় চোখ কানে এসে ভর করে। এখানে বৃষ্টি নাই তবে বক্তৃতার অতি বর্ষণে আমি দৃষ্টিহারা হয়ে গেলাম। আমার চোখও কানে ভর করেছে। তাই দেখি নাই যে দুই নারী কখন আমার পাশে বসেছেন। আমি বাকরুদ্ধ ও নড়নচড়ন হীন হয়ে গেলাম।
এর মধ্যে আমাকে একজন বললেন, ‘তুমি কিছু বল’। আমি বলবো! হে ধরণী তুমি দ্বিধা হও। আমি তো নারীসংগে বাকরুদ্ধ হয়ে আছি। কি বলবো! আমি ইতস্তত করছিলাম। আমার মতিগতি ঠিক ছিল না। পাশের মেয়েটি আমাকে ইঙ্গিত করতেই আমার দ্বিধা কেটে গেলো, আমার মতি ঠিক হয়ে গতি বেড়ে গেলো। এবার আর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের কথা বলবো না, গত বক্তৃতায় সেটা বলা হয়ে গেছে I একটু টেনশনেই আছি I
মেয়েদের সামনে কি বলতে কি বলে ফেলি I তবে বক্তৃতার শুরুতেই মেয়েদের দিকে দৃষ্টি পড়তেই আমার আঁতলামির পরিবর্তে তোতলামি শুরু হয়ে গেলো I প্রথম দিনের বক্তৃতার মত আর আর হচ্ছে না, তাই তোতলাতে তোতলাতেই বক্তৃতা শুরু করলাম, ‘আমার আজ বিশেষ কিছু বলার নাই, পরিবর্তনের কথা যখন এসেছে তখন শুধু ভাষার পরিবর্তন না, আমাদের পোশাকের নামের কিছু পরিবর্তন আনা দরকার I আমি একটি উদাহরণ দিয়েই আমার বক্তব্য শেষ করবো I
আমরা প্রায়ই পায়জামা পাঞ্জাবি পরি I খুবই আরামদায়ক ও দৃষ্টিকাড়া পোশাকI কিন্তু এই পাঞ্জাবির নামের পরিবর্তন আনতে হবে বলে আমি মনে করি I পাঞ্জাবি একটি জাতি, একটি জাতিকে গায়ে চাপিয়ে আমরা ঘুরতে পারি নাI তাই পায়জামার সাথে মিল রেখে এর নাম ‘গায়ে জামা’ অর্থাৎ পায়জামা-পাঞ্জাবি না বলে পায়জামা-গায়জামা বলাই শ্রেয়।
আমার বক্তব্যে সবাই কিংকর্তব্যবিমূড়! বলে কি এই ছেলে! আমি বুঝতে পারলাম আরেকটা বাজে বক্তব্য দিয়ে ফেলেছি তাই কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা আড্ডা থেকে বের হয়ে গেলামI আর ঐমুখো হই নি কখনো I আমার মন আমাকে বললো, ‘এসব থেকে বের হয়ে ভালো হয়ে যা’। আমি ভাবলাম বলে কি! আঁতেল হবার বাসনা কি খারাপ?
ভাববার সময় শেষ হয়ে গেলো, কয়েকদিন পর যখন ক্লাস টেস্ট শুরু হলো, আমার জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব আর আঁতেল হবার বাসনায় অনীহা আসলো বা আসতে বাধ্য হলো। কলেজে যা শিখেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় তা কিছুই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া আরো অনেক কঠিন। তখন মনে হলো আমার অল্প জ্ঞানে অজ্ঞান হয়ে, রসায়নের মত বিজ্ঞান থেকে, রস আয়ন করা সম্ভব না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় মননিবেশ করলাম। তাপে আর চাপে আমার আঁতেল হবার বাসনার এখানেই সমাপ্তি ঘটলো।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৩ জুন ২০২০ /এমএম





