Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: ভূত নিয়ে কত কল্প-কাহিনি তো শোনা যায়। কিন্তু যদি বলা হয়-চলো ভূতের আড্ডায় যাই। তখন তো প্রশ্ন আসবে, আমরা কি তাহলে ভূত? আমরা যেখানে যাব সেখানে কি ভূতেরা আমাদের সাথে গল্প করবে, আড্ডা দেবে? হাসি-খুশিকে তাদের বাবা ঠিক এমন প্রস্তাবই দিয়ে বসল। চলো কাল সন্ধ্যায় আমরা ভূতের আড্ডায় যাব। সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন হাসির-আমরা কি ভূত, ভূত কি আমাদের সাথে আড্ডা দেবে? আর খুশির প্রশ্ন, বাবা আমরা কি ভূতের পোশাক পরে যাব? কারও প্রশ্নেরই জবাব দিলেন না তাদের বাবা। শুধু গেলেই বুঝতে পারবে। বেশ ভূতের আড্ডায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষার পালা। হাসি পড়ে প্রথম শ্রেণিতে আর খুশি প্লে-তে। হাসি রাতে স্বপ্ন দেখল, তারা দুই বোন ভূতের রাজ্যে উড়ে বেড়াচ্ছে। বড় একটা ভূতের ডানায় চড়ে সে আর তার ছোট বোন খুশি উড়ছে। মানুষের বাড়িঘর, সবুজ বন-বনানী, বিশাল জলরাশি পেরিয়ে চলে গেল মেঘের রাজ্যে। মেঘের রাজ্যের পরও উড়ে চলছে।

ভূতটা আরও উপরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের? এবার একটু ভয় হলো হাসির। ভূতটা কি তাদের রাজ্যে নিয়ে যাবে তাদের আড্ডায়। বাবা তো আমাদের কাল নিয়ে যেতে চেয়েছে ভূতের আড্ডায়। তাহলে আমরা দুই বোন যাচ্ছি ভূতের আড্ডায়। আর বাবা কই? মা কই? চিৎকার করে উঠল ‘বাবা’ বলে। গভীর রাতের এ চিৎকারে সবার ঘুম ভেঙে গেল। সবাই হাসিকে জড়িয়ে ধরল। বাবা বলল, কী হয়েছে মা! হাসি কাঁদছে, কথা বলতে পারছে না। মা জিজ্ঞেস করল, ঘুমের মধ্যে খারাপ স্বপ্ন দেখেছ? কী হয়েছে মা? বল। ঘুমের রেশটা একটু কাটলেই হাসি বলল-বড় একটা ভূত আমাকে আর খুশিকে ডানায় চড়িয়ে অনেক উপরে নিয়ে গেল। মেঘের রাজ্য ঘুরেছি। এই বুঝি ভূতদের আড্ডাখানায় চলে এসেছি। আরও উপরে উঠছি। তখন দেখি তোমরা কেউ নেই। তখন চিৎকার দিয়েছি। বুঝতে পারল সবাই-কাল ভূতের আড্ডায় যাওয়ার কথা না? ও রাতেই স্বপ্ন দেখেছে। বাবা বলল, ধুর পাগলি এখন ঘুমা। সকাল হলো। দুপুর গড়িয়ে গেল। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না। কখন বাবা তাদের নিয়ে যাবে ভূতের আড্ডায়। সন্ধ্যার একটু আগ দিয়ে সবাই রেডি হলো ভূতের আড্ডায় যাওয়ার জন্য। আশপাশের সব ভবনের রং ভিন্ন। তবে যে ভবনে বাবা তাদের নিয়ে গেল সেটার বাইরের দেওয়াল কালো। ভেতরে রিসিপশনে ঢুকতেই উহ, আহ, হা-হা ইত্যাদি কিছু ব্যতিক্রম আওয়াজ আসতে লাগল। একটা রুমে তারা গিয়ে বসল। বাবা বললেন, কেউ কোনো কথা বলবে না। শুধু খাবারের অর্ডার দাও। খুশির পছন্দ পিৎজা। অর্ডার দেওয়া হলো তাই। রুমটায় আলো কম। হালকা লাল, নিলাভ, হলুদ মিটি মিটি আলো। হাসি বলল, এখনই বুঝি ভূত আসবে? বাবা বললেন, কথা হবে না। একটা ওয়েটার এলো তার গায়ে কালো জামা, কালো প্যান্ট, কালো টুপি। তাহলে এটাই কি ভূত? এবার বলল খুশি। ভূত ভাই, ভূত ভাই! আমি পিৎজা খাব। যথাসময়ে পিৎজা এলো, সঙ্গে কোল্ড ড্রিঙ্কস মোজো। খাওয়া শুরু হলো। কিন্তু কৌতূহল মিটছে না। কখন ভূত আমাদের সঙ্গে আড্ডায় বসবে? পিৎজা খাওয়া শেষ। ভূতের জন্য অপেক্ষা। আবার এলো দুই ওয়েটার ভূতের পোশাক পরে। এবার ডিনারের অর্ডার দেওয়ার পালা।

মজার মজার খাবারগুলোর অর্ডার দেওয়া হলো। অর্ডার নিয়ে ভূত দুটো চলে গেল। সবাই মিলে মজা করে খেল রাতের খাবার। কিন্তু হাসির কৌতূহল মিটছে না। ভূত আমাদের সঙ্গে আড্ডা দেবে কখন? এবার বাবা বললেন, আমরা যে রেস্টুরেন্টে বসে খানা খাচ্ছি এটার নামই ভূতের আড্ডা। এখানে ভূত বলে কিছু নেই। হোটেলের পরিবেশটা একটু ভূতুড়ে। বাবার কথা শুনে হাসি আর খুশি হাসতে হাসতে ভূতের আড্ডা ত্যাগ করল।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ০২ অক্টোবর  ২০২৫ /এমএম


Array