বাংলানিউজসিএ ডেস্ক ::
আবার যদি কিশোর হতাম
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ
আবার যদি কিশোর হতাম ভাবছি বসে বসে
তারার আলো চাঁদের গায়ে পড়ত খসে খসে
সেই আলোতে হাসনাহেনা ডাকত বনের কাছে
মিষ্টি সুবাস বিলিয়ে দিয়ে রাখত মনের কাছে।
সূর্যকে রোজ ভেংচি কেটে দস্যিপনায় মেতে
কাটত যে দিন পাড়ায় পাড়ায় অশনি সংকেতে
বৃষ্টি বাদল মাথায় করে ফুটবল হতো সঙ্গী
পায়ের সঙ্গে পা লেগে রোজ মুখের সে কী ভঙ্গি!
দিন ফুরোলে রাতের কোলে পড়তেই হতো ঢলে
কিংবা চাঁদের মিষ্টি আলোয় গল্প কথার ছলে
ভুলেই যেতাম পড়ার কথা টগবগানো ঘোড়ায়
রাজার ছেলে কতই নিপুণ তরবারি তার ঘোরায়।
রাত্রি আরো গভীর হলে স্বপ্নে যেতাম ভেসে
ভাঙা নায়ে পাল উড়িয়ে নদীর কোলটা ঘেঁষে
নায়ের মাঝি হারিয়ে যেত কাশফুলের ওই বনে
একলা আমি কেঁদে বেড়াই নাই কি রে তার মনে!
আবার আমি কিশোর হলে রাত পোহালেই ছুটি
পাতার ফাঁকে হাত গলিয়ে টুনটুনিটার ঝুঁটি
চেপেই ধরে নিতাম দেখে কেমন বড় দরজি
কেমন করে সেলাই করে কেমন গানের মর্জি
গাছের খোড়ল শূন্য করে নিতাম সবুজ টিয়ে
রোদের সঙ্গে বৃষ্টি এলে খেকশিয়ালের বিয়ে
চোখ হতো যে ছানাবড়া রংধনুটা দেখে
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি তখন নিতাম গায়ে মেখে।
শরৎ রানী
অরুণ কুমার বিশ্বাস
নদীর ক‚লে সাতসকালে
ওই মেয়েটি কে?
শিশির ধোয়া শিউলি ফুলের
গন্ধ মেখেছে।
কাশের বনে ঢেউ লেগেছে
কে দিয়েছে দোল?
শরৎ রানী ফুল কুড়ানি
শিউলিভরা কোল।
গগন জুড়ে তুলোয় মুড়ে
জুটছে মেঘের দল
গাছের পাতায় শিশির ফোঁটা
করছে টলোমল।
ভোরের হাওয়ায় দোলনচাঁপা
দুলছে দোদুল দুল
কাশের বনে প্রাণের ছোঁয়া
হাসছে নদীর ক‚ল।
তারার মেলা
সৈয়দ শরীফ
রাত্রি হলে ঝোপের তলে জোনাক জ্বলে,
ভ্রমণ চলে দলে দলে আলোর ছলে।
এই কারণে দুঃখ অনেক ঝিঁঝির মনে,
কান্না ধ্বনি ঘাসবনে আর ঘরের কোণে।
আধ ভাঙা চাঁদ এই কালো রাত করছে সাদা,
দিন ফোটাতে রাতের সাথে চাঁদটা বাঁধা।
ঝাঁকে ঝাঁকে ডাকতে থাকে খেঁকশিয়ালও,
বড্ড চ্যাঁচায়, বলতে যে চায়- দেখছি আলো।
সবুঝ ঘাসে জ্যোৎস্না হাসে রাত্রিবেলা,
ওই যে দূরে- চাঁদপুরে হয় তারার মেলা,
ইচ্ছে জাগে সবার আগে ধরবো তারা,
দেখবো কীসে ভাসছে মিশে সৌরপাড়া।
দেখতে হলে আমার দলে জলদি এসো,
ওখান থেকে আসবো দেখে পরির দেশও।
চিন্তিত মন, লাগবে এখন দুইটি পাখা,
ধুত্তুরি ছাই হচ্ছে না তাই শান্ত থাকা।
মন চায়
আবদুস সামাদ
কিচিমিচি পাখি ডাকে ঐ দূর বনেতে
পাখিদের কলতানে সুর জাগে মনেতে।
শাখে-শাখে কুল ঝুলে নানা রং বাহারি
তাই দেখে জিভে জল ধায় যেন আমারই।
অদূরেই গাছে দেখি ডাঁশা-ডাঁশা পেয়ারা
চুরি করে খেয়ে যায় যতসব বেয়াড়া।
কুলগাছে কুল খায় রাতভর ইঁদুরে
পাকাটাই আগে খায় রাঙা যেটা সিঁদুরে।
ইয়াবড় ইঁদুরকে পাইনা কো নাগালে
মহা ধড়িবাজ সেই, ডরে নাকো হাঁকালে।
একঝাঁক সাদা বক নীলিমায় উড়ছে
দেখে তাই সহসায় মনোআশ পুরছে।
মোরগের দল সবে কোক্কুরুৎ ডাকছে
আজ কেন এইমনে এতো খুশি লাগছে!
মন চায় বলাকার সাথি হয়ে উড়তে
সাঁইসাঁই উড়ে-উড়ে দুনিয়াটা ঘুরতে।
বাংলানিউজসিএ/ঢাকা/ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ এমএম