Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::  অনেক ক্ষেত্রে সুপরিচিত ব্যক্তিরাও দাবি করেছেন, ক্যান্সার উপশমে প্রথাগত চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন বা বিকল্প চিকিৎসায় তারা উপকৃত হয়েছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরোপুরি নিরাময়ও হয়েছেন।তবে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেয় এমন অনেক দাতব্য সংস্থা (চ্যারিটি) বলছে, কোনো থেরাপি বা বিকল্প উপায়ে ক্যান্সার চিকিৎসার মেডিক্যাল প্রমাণ তাদের কাছে নেই। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, এই বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি বা থেরাপিগুলো আসলে কী এবং এগুলোর ব্যবহার কীভাবে বাড়ছে?

ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ নভজিৎ সিং সিধু গত নভেম্বরে জানান, তার স্ত্রী এখন পুরোপুরি ক্যান্সারমুক্ত। নিত্যদিনের খাবারে লেবুপানি, কাঁচা হলুদ, অ্যাপল সিডার ভিনেগার (সিরকা), নিমপাতা, তুলশি, মিস্টি কুমড়া, ডালিম, আমলকি, বিটরুট ও আখরোটের মতো উপাদান রেখেছিলেন তিনি। সিধুর এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ভারতের দুই শতাধিক ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ এক যৌথ বিবৃতি দেন।

এতে তারা দাবি করেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রাকৃতিক উপদানগুলোর প্রভাব নিয়ে গবেষণা চলছে, তবে এগুলোর ব্যবহারে সমর্থন করার মতো প্রমাণ তাদের হাতে নেই।বরং ‘অপ্রমাণিত’ এসব উপাদান বা পদ্ধতির ওপর নির্ভর করতে গিয়ে ক্যান্সারের মূল চিকিৎসা বিলম্বিত না করতেও বিশেষজ্ঞরা সবার প্রতি আহ্বান জানান ওই বিবৃতিতে।অস্ট্রেলিয়ান ডেল এলি ম্যাকফারসন গত সেপ্টেম্বরে জানান, সাত বছর আগে তার স্তন ক্যান্সার ধরা পড়েছিল। কেমোথেরাপির পরিবর্তে তিনি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির পাশাপাশি বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে আকুপাংচার (শরীরের বিভিন্ন পয়েন্টে চাপ দিয়ে বা সুঁচ ফুটিয়ে চিকিৎসার পদ্ধতি), যোগ ব্যায়াম, মেডিটেশন (শরীর ও মনে শিথিল করার বিশেষ পদ্ধতি) ব্যবহার করেন অনেকে।

এগুলো ব্যথা দূর করতে এবং রোগীকে ভালো বোধ করতে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট বাদ দিয়ে কেবল ডায়েটে বিশেষ কোনো প্রাকৃতিক উপাদান বা মিনারেল, ভিটামিন যোগ করে নিরাময় লাভের চেষ্টার ব্যাপারে চিকিৎসকরা সতর্কও করে দিয়েছেন।

দাতব্য সংস্থাগুলো দাবি করছে, এসব বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির কোনো কোনোটা ক্ষতিকর হতে পারে বা মারাত্মক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হতে পারে, এমনকি মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টে বিঘ্নও ঘটাতে পারে।

ক্যান্সার বিষয়ক মেডিক্যাল জার্নাল জামা অঙ্কোলজিতে ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়, বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর নির্ভর করার কারণে রোগীদের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে যাওয়ার হার কমে আসার সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এরপরও ক্যান্সার আক্রান্ত অনেকে এসব পদ্ধতির ওপর নির্ভর করছেন। এসব পদ্ধতির জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।

ক্যান্সার চিকিৎসা সেবাদানকারী ব্যক্তিদের সংস্থা আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজি (এএসসিও)-এর এক জরিপে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৪০ শতাংশের ধারণা বিকল্প পদ্ধতির চিকিৎসায় ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব।

অনলাইনে ‘ক্যান্সার-নিরাময়কারী’ ডায়েট নির্দেশ করে তৈরি ভিডিওগুলো লাখ লাখ মানুষ দেখছেন এবং অ্যামাজনে এ ধরনের বইগুলো বিক্রি তালিকার শীর্ষে উঠে আসছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) একটি থ্রেড ব্যাপক হারে শেয়ার করা হয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে প্রধানত খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন এনেই ক্যান্সার ‘প্রাকৃতিকভাবে’ নিরাময় করা সম্ভব। ৪৮ ঘণ্টায় এই থ্রেডে দুই লাখ লাইক পড়ে।

ক্যান্সারকে অনাহারে রাখতে রোগীদের উপবাস বা না খেয়ে থাকার কথা বলা হয় এতে। আরও বলা হয়, নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ডিএনএ-কে প্রভাবিত করে স্টেম সেলকে শক্তিশালী করা যায়।

ম্যাকমিলান নামে একটি ক্যান্সার চ্যারিটি বলছে, কোনো বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বনের আগে ক্যান্সার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বিকল্প পদ্ধতির জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?

কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই বিকল্প পদ্ধতি বা থেরাপিগুলোকে অলৌকিক আরোগ্য বলে প্রচার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ব্রিটিশ ক্যান্সার সার্জন ডক্টর লিজ ও রিয়োর্ডান বলছেন, ক্যান্সার একটি আতঙ্ক। এর ঝুঁকিসহ অন্যান্য বিষয়ে বলতে হবে আমাদের। রোগীরা আশা চান, আরোগ্যের অঙ্গীকার চান। কিন্তু মূলধারার এক চিকিৎসক সেটা দিতে পারেন না।

তথাকথিত এসব নিরাময় পদ্ধতিকে ব্যথাহীন বা প্রাকৃতিক- এরকম তকমা দেওয়া হয়, তবে আসলে এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের অবস্থা আরও খারাপ করতে পারে এবং মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টকে বিঘ্নিত বা মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

আরেকটি কারণ হলো, ভালো মানের ক্যান্সার চিকিৎসা বিশ্বের অনেকের কাছেই সহজলভ্য নয় এবং এটি বেশ ব্যয়বহুল।

ডক্টর লিজ ও’রিয়োর্ডান বলছেন, টাকা যেখানে একটি ইস্যু সেখানে তুলনামূলক সস্তা পদ্ধতিগুলো খুবই আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। আমার দুশ্চিন্তা হলো, ঝুঁকিপূর্ণ লোকগুলোকে মানুষ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে এবং প্রয়োজন নেই এরকম অনেক পণ্যও তাদের কাছে বিক্রি করছে।

ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, আফ্রিকা অঞ্চলে ক্যান্সার ও এর চিকিৎসা নিয়ে সচেতনতার অভাব অনেক বেশি। এছাড়া প্রশিক্ষিত চিকিৎসা সেবাদানকারীর সংকটও রয়েছে। মানুষের চিকিৎসা বিমার হারও কম। ফলে বিকল্প বিভিন্ন পদ্ধতির ওপর মানুষের নির্ভরতা অনেক বেশি। এরকম চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর নির্ভরতা অনেক ক্ষেত্রে সংস্কৃতির সঙ্গেও জড়িত।

আফ্রিকা, এশিয়া ও ভারতে চিকিৎসার অনেক প্রাচীন পদ্ধতির চল রয়েছে এবং দার্শনিক ব্যাখ্যার কারণে এগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাও বেড়েছে। চীনের প্রচলিত কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি ও আয়ুর্বেদ কোনো কোনো রোগের উপশমে কাজ করে বলে প্রমাণ যদিও রয়েছে, তবে ক্যান্সারের চিকিৎসায় এগুলোর সহায়ক ভূমিকার প্রমাণ অপ্রতুল।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা

আয়ুর্বেদ হলো প্রাচীন ভারতীয় এক চিকিৎসা পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপদানের ব্যবহার করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থান টিপে মূলত এই চিকিৎসা দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাপী দিনে দিনে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ২০২৮ সাল নাগাদ এর বাজার এখনকার তিনগুণ হয়ে যেতে পারে বলে মার্কেট রিসার্চ ফিউচারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আয়ূর্বেদে ভারতীয় উপমহাদেশে বহুল উৎপাদিত মশলা হলুদকে এমন এক পণ্য বিশ্বাস করা হয়, যার ক্যান্সার নিরাময়ের গুণ আছে।

স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোমিওপ্যাথি, বায়োপ্যাথি, নিউরোপ্যাথি বা হার্বাল পদ্ধতি, ঘরোয়া প্রতিকার, গমের চারা দিয়ে বা পানি দিয়ে চিকিৎসা, আকুপাংচারের মতো নানা পদ্ধতির ওপর নির্ভরতা রয়েছে ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকাগুলোয়। এর কোনো কোনোটায় ব্যথা-বেদনা হয়তো লাঘব হয়, কিন্তু ক্যান্সার চিকিৎসায় এসবের ভূমিকা নেই বলে মনে করেন ডক্টর ও’রিয়োর্ডান।

ক্যান্সার সংক্রান্ত চ্যারিটি ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে বলছে, হলুদের একটি উপাদান যার নাম কারকিউমিন, এটি ক্যান্সার সেল মেরে ফেলতে পারে, তবে এটি ঘটতে পারে নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে।

তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। হলুদ বা কারকিউমিন ক্যান্সার প্রতিরোধ বা নিরাময় করতে পারে এর কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই।

চীনে প্রচলিত চিকিৎসাবিদ্যা

ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজি জার্নালে একটি গবেষণার রিভিউ আর্টিক্যালে বলা হয়েছে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অনেক জায়গায় ক্যান্সার চিকিৎসায় চীনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি (ট্যাডিশনাল চায়নিজ মেডিসিন বা টিসিএম) বেছে নেওয়ার একটা চল বাড়তে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের কমই প্রশ্ন করতে দেখা গেছে।

টিসিএম হলো এমন এক বিষয় যেখানে আকুপাংচার, মেসেজ থেরাপি, হার্বাল থেরাপি এবং তাই চি (এক ধরনের মার্শাল আর্ট) এর সবগুলোই ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের লতাপাতা থেকেও শত শত রকেমর নির্জাস নেওয়া হয়।

ডক্টর লিজ ও’রিয়োর্ডান বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শে মেডিক্যার ট্রিটমেন্টের সহায়ক হিসেব টিসিএম ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কোনো কোনো হার্বাল উপাদান মূল চিকিৎসাকে বিঘ্নিত করতে পারে এমন ঝুঁকি রয়েছে।

ডায়েট পরিবর্তন

কিটো (খাদ্য তালিকায় শর্করা কমিয়ে আমিষ বাড়িয়ে দেওয়ার পদ্ধতি), ভেগান (ভেজিটেরিয়ান বা শাকসবজিনির্ভর খাদ্যতালিকা) বা উপবাস কেন্দ্রিক বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাস বিশ্বে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ক্যান্সারকে অনাহারে রাখতে ডায়েট নিয়ন্ত্রণের কথাও বলা হচ্ছে।

ক্যান্সার গবেষক ডক্টর ডেভিড রবার্ট গ্রিমস বিবিসিকে বলছেন, আপনি ক্যান্সারকে অনাহারে রাখতে পারবে না, বরং কেবল নিজের শরীরকে না খাইয়ে রাখতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় আপনি যদি ওজন হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েন তখন ক্যান্সারের প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে। ঝুঁকি বা ক্ষতির কথা চিন্তা না করেই অনেক রোগী এরকম বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাসে ঝুঁকে পড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ভারতের পাঞ্জাবের মোহনদাই অসওয়াল হসপিটালের ক্যান্সার চিকিৎসক ডক্টর কানুপ্রিয়া ভাটিয়া ক্যান্সার রোগীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এধরনের প্রচারণায় প্রভাবিত না হতে।

তিনি বলেন, নিজ উদ্যোগে (ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে) কোনো কিছু খেতে বা পান করতে শুরু করবেন না যেটা পরে ক্ষতির কারণ হতে পারে

ফেনবেনডাজোল

বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে পরজীবীর সংক্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এই ফেনবেনডাজোল ওষুধটি। অন্যান্যা বিকল্প থেরাপির সঙ্গে এই ওষুধটি সেবন করে ক্যান্সারমুক্ত হয়েছে, এক মার্কিন ব্যবসায়ী এই দাবি করার পর ক্যান্সার চিকিৎসায় এর জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে যায়। তবে প্রথমে তিনি বলেননি যে তিনি ক্যান্সার চিকিৎসার অন্যান্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও অংশ নিচ্ছিলেন।

দক্ষিণ কোরিয়া এই ওষুধটি এত পরিমাণেই বিক্রি হয় যে মজুত ফুরিয়ে যায়। সেবনকারীদের অনেকে সোশাল মিডিয়ায় নিজেদের অভিজ্ঞতার জানাতে শুরু করেন, যদিও পরে এক কৌতুকাভিনেতা ও গায়ক দাবি করেন ওষুধটি তার ওপর কার্যকরী ছিলো না, যে কারণে তিনি এটি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে জানিয়েছে, এই ওষুধের কোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি এবং এর নিরাপত্তার দিকটও প্রমাণিত নয়।

গ্রাভিওলা

গ্রাভিওলা গাছের ফল, পাতা ও ছাল অনেককাল ধরে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কোনো কোনো সংক্রমণের ক্ষেত্রে এর কার্যকারিত প্রমাণিতও হয়েছে।

স্থানীয়ভাবে এবং ইন্টারনেটে এমন তথ্যও ছড়িয়ে পড়ে যে ক্যান্সার আরোগ্যে গ্রাভিওলার ফলের ভূমিকা আছে। এমনকি সোশাল মিডিয়ার কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, কেমোথেরাপির চেয়েও এই ফল দশ হাজার গুণ বেশি কার্যকর। বিভিন্ন ক্যান্সার চ্যারিটি ও ফ্রেঞ্চ ক্যান্সার ইনস্টিটিউট বলছে, ক্যান্সার দূর করার কোনো ‘মিরাকল ফুড’ বা ‘অলৌকিক খাবার’ নেই।

চিকিৎসক ও ক্যান্সার দাতব্য সংস্থাগুলো কী বলছে?

এ ধরনের বিভিন্ন বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিতে মারাত্মক বিপদ লুকিয়ে আছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। এসব পদ্ধতি ব্যবহারে মূল চিকিৎসা বিঘ্নিত হওয়ার বা রোগীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসার বিষয়টি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

ডক্টর রিয়োর্ডান বলেন, মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টের পাশাপাশি এ ধরনের পদ্ধতি কোনোটির প্রয়োগ ঠিক হতে পারে। সমস্যাটা হয় তখনই যখন শুধু এসব পদ্ধতিই অবলম্বন করা হয়। এক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি দুই বা আড়াই গুণ বেড়ে যায়।

ডক্টর গ্রিমস বলেন, শক্তিশালী গবেষণা ওপর ভিত্তি করে ক্যান্সার চিকিৎসা চলে। বিকল্প পদ্ধতিগুলোর কারণে নয়, বরং বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের কঠোর পরিশ্রমের কারণেই বিশ্বজুড়ে ক্যান্সার থেকে মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং তাদের বেঁচে যাওয়ার হার বাড়ছে।

ভারতের ম্যাক্স ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার কেয়ারের চেয়ারম্যান ডক্টর হারিত চতুর্বেদি বলেন, ক্যান্সার এমন কোনো রোগ নয় যেটা কোনো জাদুকরি ফর্মুলায় দূর হয়ে যাবে।

বরং আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রতিটি রোগীর জন্য তাদের ক্যান্সারের ধরন, জিনগত বিশেষ পরিবর্তন, যে অঙ্গ থেকে ক্যান্সার ছড়িয়েছে সেটাসহ নানা বিষয় অনুসন্ধান করে বিশেষ চিকিৎসা পরিকল্পনা দেওয়া হয়।

অসুস্থতায় একটু আরাম পাওয়া যাবে এরকম কোনো সহায়ক পদ্ধতি রোগীরা নিতে চাইলে চিকিৎৎসকরা সাধারণত তাদের সমর্থন দেন। কিন্তু তারা কখনই শুধু এসব পদ্ধতির ওপর নির্ভর করার কথা বলেন না।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১২  ডিসেম্বর ২০২৪ /এমএম