প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: মলিনতার চাদরে কুয়াশাভেজা ভোর নিয়ে শীত আসছে গুটি গুটি পায়ে। ক্রমেই বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ইট-পাথরের নগরীতে শীত আসতে সময় নিলেও গ্রামের দিকে জেঁকে বসেছে শীত। ভোরের আলোর সঙ্গে কুয়াশা আর সোনালি আলোর এক নতুন বন্ধুত্ব গড়ে উঠছে। বেলা বাড়লেও সুয্যি মামার আলসেমি যেন কাটছেই না। তবে বিকালের দিকে শহরের কোলাহলের মাঝেও শীত শীত আমেজের আয়োজন ঠিক অনুভব করা যাচ্ছে। আর অল্প কিছু দিন পরই পিঠাপুলির আসর বসবে দোকানে দোকানে।
ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপটা হবে আরও ব্যস্ত। দিনের আলো ছুটি নেবে ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আগেভাগেই। এত কিছুর মাঝে শুধু রয়ে যাবে রুক্ষতার ছাপ। শীত এলেই যেন রুক্ষতা এসে হাজির হয় পিছু পিছু। ত্বকের মাঝে, চুলের মাঝে যার উপস্থিতি জানান দেয় সবার আগে। বাইরের ধুলাবালির মাত্রাও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাই চুল রাফ হয়ে যাওয়া যেন হয়ে দাঁড়ায় প্রতিদিনের সঙ্গী। তবে একটু যত্ন আর ঘরোয়া হাতের কাছের টুকিটাকি সরঞ্জাম আপনাকে শীতেও কীভাবে রাখবে পারফেক্ট লুকে তাই জানিয়েছেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী শাহিনা আফরিন মৌসুমী।
শীত এলেই যে কোনো ত্বকের রুক্ষতা, মলিনতা কিংবা তৈলাক্ততা বাড়ে। তাই ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখাটা সবচেয়ে জরুরি। তবে এর আগে ক্লিঞ্জিং, টোনিং, স্ক্রাবিং করা আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে ক্লিঞ্জিংয়ের জন্য যাদের ওভার ড্রাই স্কিন তারা একটু দুধের সঙ্গে বেসন মিশিয়ে ক্লিন করে নিতে পারেন। এ মিশ্রণটি কেবল ক্লিনিং না স্ক্রাবিংয়ের কাজও করে থাকে। এর পরের ধাপেই আসে ময়েশ্চারাইজিং। ঘরোয়াভাবে ময়েশ্চারাইজার ত্বকে লক করে রাখতে চাইলে ডিমের কুসুমের সঙ্গে আলুর রস আর ময়দা মিশিয়ে প্যাক আকারে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহারেই ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লক হতে শুরু করে। আর যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা মুলতানি মাটির সঙ্গে আলুর রস মিশিয়ে কিংবা যে কোনো ডালের বেসন দিয়েও ত্বকের ক্লিঞ্জিংয়ের কাজ সেরে নিতে পারেন। এতে ত্বকের বাইরের অংশ ও হাইড্রেড থাকবে পাশাপাশি তৈলাক্ততাও দূর হবে। আর এর পরের ধাপে ময়েশ্চারাইজার প্যাক ব্যবহার করতে চাইলে তুলসী পাতার রস আর পুদিনা পাতার রস সমান পরিমাণ মিশিয়ে শঙ্খ পাউডার মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহারে ভালো ময়েশ্চারাইজিং ত্বকে লক থাকে দীর্ঘ সময়। আর যাদের হাতে সময় কম, তারা এক কাপ গোলাপজল, হাফ কাপ র’ গ্লিসারিন, ওয়ান ফোর্থ কাপ অলিভ ওয়েল ভালো করে মিক্স করে কয়েকদিন রেখে ব্যবহার করতে পারেন। এ ময়েশ্চারাইজারটি যে কোনো ত্বকের জন্যই পারফেক্ট। আর যারা শীত এলেই ব্রণের সমস্যায় ভোগেন, তারা দারুচিনি গুঁড়া করে রেখে দেবেন।
এ গুঁড়া করা দারুচিনির সঙ্গে ময়দা অথবা বেসন যে কোনো একটি মিশিয়ে ত্বকের ক্লিঞ্জিংয়ের সময় ব্যবহার করতে পারবেন। এতে ব্রণের সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে সহজেই। এছাড়া ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল খুবই কার্যকর। বাজারে হাতের কাছে পাওয়া এ জেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসাবে অ্যাপ্লাই করতে পারেন। কেবল মুখেই নয় এ মিশ্রণটি হাতে, গলায় কালো দাগ দূর করতেও সাহায্য করবে। তবে এ প্যাকটি কেবল যাদের ত্বক তৈলাক্ত এবং ব্রণের সমস্যা আছে তারাই অ্যাপ্লাই করতে পারবেন।
আর যাদের চুল ফ্রিজি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু স্কাল্পের তৈলাক্ততা বাড়ছে তারা আমলকী, মেথি, শিকাকাই আগের রাতে ভিজিয়ে পরের দিন পেস্ট করে মাথার ত্বকে অ্যাপ্লাই করে আধা ঘণ্টা রেখে পরিষ্কার করে নিলেই পেয়ে যাবেন ফ্রেশ স্কাল্প। তবে তেল চুলে অ্যাপ্লাই করে এ প্যাক ব্যবহার করবেন না। তাই সময় নিয়ে আপনি আগে প্যাক ব্যবহার করে শ্যাম্পু করে শুকিয়ে এলেই তেল অ্যাপ্লাই করুন। চুলের উজ্জ্বলতা আরেকটু বাড়াতে শ্যাম্পুর সঙ্গে অল্প কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিলেও ভালো ফল পাওয়া যায় শীতের এ সময়।
প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ২৬ নভেম্বর ২০২৪ /এমএম