Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক :: হাইপারথাইরয়েডিজম’ বা ‘হাইপোথাইরয়েডিজম’ যাকে সহজ ভাষায় থাইরয়েড রোগ বলা হয়। ‘থাইরয়েড হল আমাদের একটি গ্রন্থি যা আমাদের গলার সামনের দিকে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে কিছু প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসৃত হয়। তবে অস্বাভাবিক পরিমাণে হরমোন নিঃসৃত হলে তা শরীরে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা ওজন কমানো। এই অবস্থাকে থাইরয়েড বলা হয়।

এছাড়া হরমোন আমাদের বিপাকসহ আরও বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই হরমোন তৈরির জন্য এই গ্রন্থিটির প্রয়োজনীয় পরমাণে আয়োডিনের দরকার হয়। হরমোন আমাদের বিপাক ক্রিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সাধারণত দেখা যায়, পুরুষদের চেয়ে নারীরাই থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। আটজন নারীর মধ্যে একজন নারী তার জীবনে অন্তত একবার থাইরয়েডের সমস্যার সম্মুখীন হবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়। থাইরয়েড নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বিপেন চৌধুরী। কিছু উপাদান, যেমন বয়স, শারীরিক গঠন ও শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে বেশির ভাগ নারী থাইরয়েডের সমস্যায় আক্রান্ত হয়।

লক্ষণ

থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
এ সমস্যার কারণে কেউ কেউ ডিপ্রেশনও অনুভব করতে পারেন। এই ধরনের ঘটনায়, চিকিৎসার সাথে থেরাপির সুপারিশ করা হয়।

থাইরয়েড গলার মধ্যে হয় এবং এটা সাধারণত বাইর থেকে দেখা যায়। ঢোক গিললে দেখা যায় এটা ফুলে উঠছে। অনেক সময় এটা ধরাও যায়। এতে অনেক সময় রোগী ভয়ে থাকেন যে, এটা আসলে কি হচ্ছে। অনেক সময় রোগীর গলার ভেতরে ফুলে গেলে খেতে কষ্ট হয়। আবার অনেক সময় গলার ভেতরে খুসখুসে অনুভূত হয় অথবা মনে হয় যেন গলার ভেতরে কিছু আটকে আছে। এছাড়া অনেক সময় এ রোগীরা শ্বাসকষ্টেও ভোগেন।

অনেকে হাই প্রেশার নিয়েও ডাক্তারের কাছে আসেন। এমনকি কিডনি রোগী কিছু ঔষধ খাচ্ছে তাতেও এ সমস্যা হতে পারে। নাক কান গলার সমস্যা নিয়ে অনেক বাচ্চা জন্মগ্রহণ করতে পারে। এছাড়া অনেক বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জন্মের সময় থাইরয়েডের গ্রন্থি ঠিকভাবে তৈরি না হলে কিংবা প্রয়োজনমত হরমোন তৈরি করতে না পারলে বাচ্চাদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়। যদিও অনেক সময় এর চোখে পড়ার মত লক্ষণ দেখা যায় না, যার ফলে অনেকে বুঝতেই পারেন না তারা হাইপোথাইরয়ডিজম এ আক্রান্ত।

পরামর্শ
ডায়াবেটিস যেমন দিনে তিনবার চারবার পরীক্ষা করতে হয়। সপ্তাহে কয়েকবার পরীক্ষা করতে হয়। অন্য দিকে থাইরয়েড হরমোন স্থায়িত্ব হলে তা বছরে দুই তিন বার পরীক্ষা করলেই হয়। অপারেশনে থাইরয়েড ফেলে দিলে হরমোনের রিপ্লেস করতে হবে। তবে অনেক সময় আমরা হরমোনের একটা অংশ ফেলে দেই। তখন বাকিটা রিকভারি হয়। তবে ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এই গ্রন্থির অর্ধেক কেটে ফেললেও রোগী তার বাকি অর্ধেক দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারে। তবে যাদের পুরো গ্রন্থিটিই কেটে ফেলেতে হয় তাদের বাকি জীবন আলাদাভাবে বাহির থেকে প্রয়োজনীয় হরমোন গ্রহণ করতে হয়।

থাইরয়েডের চিকিৎসা সুষ্ঠু ও সময়মতো হলে তেমন ভয়ের কারণ নেই। এছাড়া বিভিন্ন নিউক্লিয়ার মেডিসিন, তেজস্ক্রিয় আয়োডিন ব্যবহার করে আক্রান্ত হবার মাত্রা নির্ধারণ করে চিকিৎসকেরা পরবর্তী পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর তাই সুস্থ থাকতে বছরে অন্তত একবার রক্ত পরীক্ষা করে থাইরয়েড গ্রন্থি চেক করা একটা বয়সে মোটামুটি সবারই প্রয়োজন।

প্রবাস বাংলা ভয়েস /ঢাকা/ ১৬  জুলাই ২০২৪ /এমএম