Menu

প্রবাস বাংলা ভয়েস ডেস্ক ::‌ এবার বইমেলার ভেতরে দুই তরুণের আড্ডা হচ্ছে।

-বলো তো এবার বইমেলায় লেখকদের ছবি বেশি না পুলিশ কর্মকতাদের?

-উমম…। মনে হয়, লেখকদের।

-জনপ্রিয় লেখকদের না তরুণ লেখকদের?

-তরুণ লেখকদের।

-মহিলা না পুরুষ লেখক?

-পুরুষ

এ আলোচনা আর কতক্ষণ চলত বলা মুশকিল। আমি এগিয়ে গেলাম। সামনে দেখি এক লেখক ফটোগ্রাফ দিয়ে এবার অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। পাশ থেকে আরেকজন সম্ভবত লেখকের পরিচিত কেউ বললেন, ‘কী! অটোগ্রাফ দিচ্ছেন নাকি?’

-না, বাসার ঠিকানা দিচ্ছি-উনি আবার আমার পাওনাদারও কিনা। অবান্তর প্রশ্নের লাগসই উত্তর। বলাই বাহুল্য, লেখক কোনো রসিক রম্যলেখক নির্ঘাত!

এসবই আসলে বইমেলা নিয়ে ফান। তাহলে সিরিয়াস কি কিছু নেই? আছে। সিরিয়াস হচ্ছে, যারা মাইক্রোফোন হাতে বাইট নিতে আসছেন, সেই রিপোর্টাররা…। তাদের প্রশ্নগুলো এতই সিরিয়াস যে বোঝা কঠিন হয়ে যায়। একটা উদাহরণ দিই:

উদাহরণ-১

এক লেখকের কাছে প্রশ্ন-‘আচ্ছা মেলার শৈল্পিক নান্দনিকতা, বই কিনতে আসা পাঠকদের মননে কতটা প্রভাবিত করে বলে আপনি মনে করেন?’

উদাহরণ-২

এক পাঠকের কাছে প্রশ্ন-‘আবহমান বাংলা ভাষায় যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, তা কি এ প্রজন্মের তরুণ লেখকদের লেখায় আমরা খুঁজে পাচ্ছি?’

বহু আগে একটা সময় বইমেলায় ঢোকার মুখে চিংড়ির মাথা বিক্রি হতো। চিংড়ির গন্ধ নাকে নিয়ে মেলায় ঢুকতে হতো। যদ্দূর মনে পড়ে, এক প্রচ্ছদশিল্পী মেলায় ঢুকতে গিয়ে দেখেন বিশাল আকৃতির চিংড়ির মাথা বিক্রি হচ্ছে। এ দৃশ্যটি তিনি নিতে পারেননি। ফিরে গেছেন তার ডেরায়, সেই যে গেছেন আর কখনো মেলায় আসেননি।

তবে এখন চিংড়ির গন্ধ নেই; কিন্তু টিএসসি দিয়ে ঢুকতে গেলে প্রাকৃতিক টানা গণটয়লেটের গন্ধ নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে।

এরপরও প্রাণের বইমেলায় সবাই আসে। বই কেনে, প্রিয় লেখককে খোঁজে। কখনো কখনো পেয়েও যায়!

না পেলেও সমস্যা নেই নতুন বইয়ের ঘ্রাণ…সব ভুলিয়ে দেয়।

জীবন তো একটাই-বই ছাড়া বিনোদন আর কীইবা আছে! এজন্যই বোধহয় এক প্রাচীন দার্শনিক বলেছিলেন-‘আমি বই পড়ি। কারণ, বই আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় আমি মানুষ হয়ে জন্মেছি এই পৃথিবীতে।’

অনুলিখন : শুচি সৈয়দ

প্রবাস বাংলা ভয়েস/ঢাকা/ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ /এমএম