হরিজন পল্লী
নীলুফা আলমগীর
ভূপৃষ্টের এক দিকে রঙ্গীন আলোর হাতছানি
বহু তল বিশিষ্ট ভবনের ভোগ বিলাস
অন্যদিকে স্মশান অথবা
লাশ কাটা ঘরের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
গাদাগাদি করে পশুর মত বেঁচে থাকা
মানুষ হয়েও মানুষ যেন নয়;
জাতিভেদ প্রথার অযৌক্তিক বিভাজনে
স্বতন্ত্র পরিচয়, স্বতন্ত্র নিবাস
স্বদেশে থেকেও পরবাসী জীবন যাপন।
কল তলায় বালতি সারি সারি, লড়াইয়ের প্রস্তুতি
পুতিগন্ধময় ময়লা আবর্জনার স্তুপ
ভ্যাপসা গরম, বৈদ্যুতিক আলোর লুকোচুরি;
শহরকে পরিছন্ন ও ক্লেদ মুক্ত করে
সমাজের শুচিতাকে রক্ষা করে যারা
তারাই হল অচ্ছুৎ, ভিন্ন সম্প্রদায়
উঁচুতলার মানুষের কাছে মানুষ নয় তারা
হরিজন পল্লীর সচল যন্ত্রের কারখানা।
কাকডাকা ভোরে শুরু হয় নগর পরিষ্কার
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে দেশীয় মদের বোতলে চুমুক
না হয় নারী শরীরের মাঝে খুঁজে পাওয়া সুখ
ক্লেদাক্ত জীবন পায়না খুঁজে নদীর উৎস মূখ
হৃদপিন্ডের ক্রন্দন এভাবেই চাপা পড়ে যায়;
সকাল থেকে বিকাল, সন্ধ্যা থেকে ভোর
হরিজন পল্লীর জীবন বদলায় না;
মানবিকতার আকাশ এভাবেই লুটপাট হয়।